ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

হঠাৎ বেড়েছে পানি, তিস্তা পাড়ে আতঙ্ক

  লালমনিরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:২২  
আপডেট :
 ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০২:৫০

হঠাৎ বেড়েছে পানি, তিস্তা পাড়ে আতঙ্ক

কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি হঠাৎ করে আবারো বেড়েছে। শুকিয়ে যাওয়া তিস্তা নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। মঙ্গলবার বিকেলে দোয়ানী-ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো।

কয়েক সপ্তাহজুড়ে তিস্তার পানি বিপদসীমার ৪০/৫০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও সোমবার রাত থেকে হঠাৎ বাড়তে থাকে পানি প্রবাহ। যা ক্রমেই বেড়ে মঙ্গলবার বিকেলে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢল ও কয়েকদিনের বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়েছে। এতে শুকিয়ে যাওয়া মৃতপ্রায় তিস্তা আবারো ফুলে-ফেঁপে উঠে ফিরে পেয়েছে চিরচেনা রূপ। হেঁটে পাড়ি দেয়া তিস্তায় চলতে শুরু করেছে নৌকা। হাঁকডাক বেড়েছে মাঝি মাল্লাদের। কর্মব্যস্ততা দেখা দিয়েছে তিস্তাপাড়ের জেলে পরিবারে।

এদিকে হঠাৎ তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি দেখে লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের মানুষ বন্যার আশঙ্কা করলেও বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি, তিস্তায় নতুন করে বন্যার আশঙ্কা নেই। বৃষ্টির কারণে উজানের ঢেউ ও এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের ফলে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেলেও বন্যার আশঙ্কা নেই। বৃষ্টি কমে গেলেই তিস্তার পানি প্রবাহ কমতে শুরু করবে।

তবে হঠাৎ তিস্তায় পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় চরাঞ্চলের সবজি চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করা কৃষকরা ক্ষতি মুখে পড়েছেন। তাদের পুনরায় জমি কর্ষণ দিয়ে ফসল বুনতে হবে। আগাম সবজি চাষ করা কৃষকরা সব থেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন। তাদের সবজি ক্ষেত ডুবে গিয়ে ক্ষতি হয়েছে বলেও দাবি করেন কৃষকরা।

হাতীবান্ধা উপজেলার চর গড্ডিমারী তিস্তা চরাঞ্চলের কৃষক হাফিজুল ইসলাম জানান, তিস্তার পাশে ৩ দোন (২৭ শতাংশে দোন) জমিতে আগাম জাতের আমন ধান রোপণ করেন তিনি। সেই আমন ক্ষেতে কিছু অংশ নদী ভাঙনে বিলীন হলেও বাকি অংশ পানিতে ডুবে আছে। দ্রুত পানি নেমে গেলে ধান ক্ষেতের উপকার হবে। কিন্তু বেশি সময় ডুবে থাকলে ধানক্ষেত পচে নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণেই তিস্তাপাড়ের কৃষকরা আতঙ্কিত বলেও দাবি করেন তিনি।

হাতীবান্ধা উপজেলার ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের চর ডাউয়াবাড়ি গ্রামের আব্দুর রহিম জানান, তিস্তা শুকিয়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলের জমিতে তামাকসহ বিভিন্ন সবজি চাষের জন্য জমি তৈরি করে রেখেছেন তারা। কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে তারা সবজি বীজ বপন করেননি। এরই মধ্যে পানি বৃদ্ধি পেয়ে জমি ডুবে গেছে। তাই তাদের ব্যস্ততাও কমে গেছে। পানি নেমে গেলে আবারও জমি কর্ষণ দিয়ে সবজি বীজ বপন করা হবে বলেও জানান তারা।

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তার পানি প্রবাহ সোমবার রাত থেকে বাড়তে থাকে। মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আপাতত সবগুলো জলকপাট খুলে দেয়া হয়েছে। তবে রাতে পানি প্রবাহ কমে যেতে পারে বলে জানান তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত