ঠিকাদারকে ঘুষ না দেওয়ায় চাকরি হারালো ৭ প্রহরী
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৯:০১
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ধানহাড়িয়া গ্রামের লিপু লস্কর। বয়স ৩০ বছর। অল্পশিক্ষিত যুবক আগে অন্যের জমি বর্গা ও লিজ নিয়ে চাষাবাদ করে চালাতেন সংসার। স্ত্রী, সন্তান ও মাকে নিয়ে ভালোই চলছিল তার সংসার।
২০১৭ সালে ঝিনাইদহ মুক ও বধির আবাসিক স্কুলের নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগের জন্য আবেদন করেন। চুক্তিভিত্তিক চাকুরিও হয়ে যায়। চাকুরিতে যোগদানের পর ঠিকাদার গাফফারকে দিতে হয়েছিল ৩ লাখ টাকা ঘুষ। ভেবেছিলেন কষ্টের দিন বোধহয় কেটে গেছে। প্রতিমাসে যা বেতন পাচ্ছিলেন তাকে সংসার ভালোই চলছিল। কিন্তু একবছর যেতেই শুরু হলো মানবেতর জীবন যাপন। ঠিকাদার গাফফার পরবর্তী বছরে আবারো ২ লাখ টাকা ঘুষ দারি করেন। টাকা না দিলে দেওয়া হয় চাকুরি থেকে বাদ দেওয়ার হুমকি দেন।
বিনা বিতনে এক বছর চাকুরি করতে হয়েছে তার মত আরও ছয়জনকে। তারা হলেন-নিরাপত্তা কর্মী চুয়াডাঙ্গার মাহফুজুর রহমান, অফিস সহায়ক ফরিদপুরের মিন্টু মাতব্বর, মালি ঝিনাইদহের হাবিবুর রহমান, বাবুর্চি কালীগঞ্জের মনির হোসেন ও মমিনুর রহমান এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মী ঝিনাইদহ সদরের মহিষাকুন্ডু গ্রামের কুলছুম বেগম।
চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে এদের বাদ দিয়ে নতুন লোক নিয়োগ দিয়েছে সমাজসেবা অধিদপ্তর। এতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন ওই সাত কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। ভুক্তভোগী মাহফুজুর রহমান বলেন, আমাদের নিয়োগে কোন সময় বেঁধে দেওয়া ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করে কোনো নোটিশ ছাড়ায় আমাদের চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। এতে আমার পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে আছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের চাকুরি ফিরে পাওয়ার জন্য আদালতে মামলা করেছি। আরেক ভুক্তভোগী হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা আমাদের চাকুরি ফেরত চাই। নইলে আমাদের না খেয়ে মরতে হবে। এছাড়াও আমরা এক বছর কাজ করেছি। যার বেতন আজও পাইনি।
এ ব্যাপারে গাফফার সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল গাফফারের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
ঝিনাইদহ জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ শেখ বলেন, আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের চাকুরি ছিল এক বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ। অতিরিক্ত যে এক বছর কাজ করেছেন এটা ঠিকাদারের বিষয়।
এমএ/