ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩২ মিনিট আগে
শিরোনাম

সাব-রেজিস্ট্রারকে ম্যানেজ করে জমি দখল

  ভালুকা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:৫০  
আপডেট :
 ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৫:৫৬

সাব-রেজিস্ট্রারকে ম্যানেজ করে জমি দখল
ফাইল ছবি

ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক আবু বক্কর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক মৃত আমজাদ আলী মন্ডলের পুত্র মো. শফিকুল ইসলামের জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর জেলা রেজিস্ট্রার বরাবর ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে প্রভাবশালী দলিল লেখক আবু বকর সিদ্দিক সংঘবদ্ধ বাহিনীর মদদে উপজেলার উজান চরনওপাড়া গ্রামের মৃত আমজাত আলী মন্ডলের ছেলে মো. শফিকুল ইসলামকে মারধর করে গুরুতর আহত করে খুনের হুমকি দিয়ে নিজ নামিয় ক্রয় সূত্রে মালিকানাধীন ৩০ শতাংশ জমি জোরপূর্বক রেজিস্ট্রি করে নেয়। ভুক্তভোগী শফিকুল জানান, ভলিউম বিহীন ২০৫-নং খতিয়ানে বিআরএস রেকর্ড সৃজন করে আমাকে দলিল দাতা বানিয়ে রেজিস্ট্রি জবানবন্দিতে আমার অসমর্থন থাকা সত্ত্বেও সাব-রেজিস্টার বে-আইনিভাবে ৮২৫-নং দাগে গত ০৯/০৯/২০১৯-ইং তারিখে ৪০৩৪-নং দলিলে একখণ্ড সাব-কাবলা দলিল রেজিস্ট্রি করেন।

অভিযোগে আরো বলা হয়, শফিকুলের অপর ৩ ভাই অন্য দাগের ৫ শতাংশ ভূমি উজান চরনওপাড়া গ্রামের আব্দুল জব্বার সরকারের পুত্র কনস্টেবল নজরুল ইসলাম (বর্তমানে টাঙ্গাইল থানার কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত) এর সাথে দলিল সম্পাদন করা অবস্থায় দলিল লেখক আবু বক্কর সিদ্দিকসহ তার বাহিনীর আরো ২০/২৫জন জোরপূর্বক শফিকুলের সর্বসাকুল্য জমিটুকু রেজিস্ট্রি করে নেয়।

ভুক্তভোগী শফিকুল ইসলাম সিদ্দিক বাহিনীর মারধরে আহত হয়ে ভালুকা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চারদিন চিকিৎসা শেষে মো. শফিকুল ইসলাম নিজে বাদী হয়ে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঈশ্বরগঞ্জ অঞ্চল আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা নং- ৩৩৯/২০১৯, তারিখ ১৮/০৯/২০১৯-ইং।

সূত্র জানায়, রেজিস্ট্রিকৃত ভূমির ২০৫-নং খতিয়ানভুক্ত বিআরএস রেকর্ডীয় মালিক মাজেদা খাতুন গং নিকট হতে গত ২৬/০৭/২০০৭-ইং তারিখে ২৬৫৭ নং সাব-কাবলা দলিল মূলে বর্ণিত ৩০ শতাংশ ভূমি মো. শফিকুল ইসলাম খরিদ করিয়া নিঃকন্ঠভাবে সরে জমিনে চাষাবাদ করিয়া আসিতে থাকা অবস্থায় ২০১৬ (ওঢ-ও) ১৫-১৬-নং জমা খারিজ মোকদ্দমা মূলে ৩১০৫ খতিয়ানে উক্ত ৩০ শতাংশ ভূমি অদ্যাবধি পর্যন্ত ভোগ দখল করে আসছে। দলিল লেখক আলামিন সনদ নং-(৬৭৩১) বলেন, আমি ভেবেছিলাম টাকা নিয়ে চলে যাচ্ছে তাই শফিকুলকে কলারে ধরে নিয়ে এসেছি তাকে কোন প্রকার মারধোর করা হয়নি।

অভিযুক্ত আবুবক্কর সিদ্দিক ঘটনা জানাজানির পর থেকে গা ডাকা দিয়েছে এবং বিভিন্ন লোক মারফত আপোষ মিমাংসার জন্য উঠে পরে লেগেছেন বলে স্থানীয়রা জানান এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিদ্দিকের ০১৭১৩***৬০০ নাম্বারে বারবার ফোন করা হলেও ফোন রিসিব না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ সাবরেজিস্ট্রার হায়দার আলী জানান বিষয়টা আমি অবগত ছিলামনা। তবে ঘটনার সত্য হলে, এহেন ঘটনার জন্য দলিল লেখকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা রেজিস্ট্রার মো. লুৎফল কবীর। তিনি বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, অভিযোগ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও ময়মনসিংহ প্রেসক্লাব বরাবরে একটি অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছেন নিরিহ মো. শফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারবর্গ।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত