ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৩ হাজার পরিবার পানিবন্দী

  চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০১৯, ২১:০৫

চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৩ হাজার পরিবার পানিবন্দী

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় সাড়ে ৫ হাজার এবং শিবগঞ্জ উপজেলার ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দী।আর ওই অঞ্চলের নদী তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৯ হাজার হেক্টর ফসলি জমি নষ্ট হয়ে গেছে।

সদর উপজেলার আলাতুলি, নারায়ণপুর, চর-অনুপনগর, শাহজাহানপুর, চরবাগডাঙ্গা ও দেবিনগর এবং শিবগঞ্জ উপজলার পাঁকা, দূর্লভপুর, মনাকষা, উজিরপুর, ধাইনগর ও ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

চরবাগডাঙ্গা ইউপি’র ৯ নাম্বার ওয়ার্ড সদস্য কামরুজ্জামান টুটুল জানান, গোঠাপাড়া, বাগানপাড়া, চাকপাড়া, গিধনিপাড়া, মালবাগডাঙ্গা গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে কয়েক’শ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। চরবাগডাঙ্গা বিওপি এলাকার গিধনিপাড়ায় নদীভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। নষ্ট হয়েছে মাসকলাইসহ বিভিন্ন ফসলি জমি।

চর অনুপনগর ইউপি চেয়ারম্যান সাদেকুল ইসলাম জানান, নতুনপাড়া, বিশ্বাসপাড়া, লম্বাপাড়া, মোন্নাপাড়া, চর অনুপনগর বাগানপাড়া, কলাবাগান ও চরকাশেমপুর ক্যানেল পাড়ার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫’শ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বন্যার কারণে ওই এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আতিকুর রহমান জানিয়েছে, পদ্ম নদীতে গত ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ১১ সেমি। যা বিপদ সীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মহানন্দায় গত ২৪ ঘণ্টা পানি বৃদ্দি পায় ১১ সেন্টিমিটার। যা বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, গত ৪৮ ঘণ্টায় যে পরিমাণ পানি বাড়ছিলো আজ তা কিছুটা কমেছে। আগামীকাল থেকে ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার করে পানি কমবে বলে ধারণা করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। আর গোমস্তাপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউয়িনের মহানন্দা তীরবর্তী এলাকার কাসিয়াবাড়ি, বাবুপুর ও চৌডালায় নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল হুদা জানান, জেলার পদ্মা ও মহানন্দা নদীর অববাহিকায় থাকা নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হওয়ায় ওই অঞ্চলের প্রায় ৯ হাজার হেক্টর মাসকলাইসহ বিভিন্ন ধরনের ফসলি নষ্ট হয়েছে। পানি বাড়তে থাকলে আরো ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, ৬টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের মানুষের মাঝে ২৯ মেট্রিকটন চাল বিতরণ করা হয়েছে এবং সাথে শুকনো খাবারও দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো জানান, এখন পর্যন্ত প্লাবিত এলাকার মানুষজন নিরাপদেই রয়েছে। কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মৌদুদ আলম জানান, বন্যার পানি ও গত কয়েকদিনের ভারি বর্ষণে এখন পর্যন্ত সদর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের প্রায় ৭ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার চৌধুরী রওশন ইসলাম জানান, বন্যা কবলিত এলাকাগুলো প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিদর্শন এবং গত কয়েকদিন ধরে প্রায় ২৬ মেট্রিকটন ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। আর পানিবন্দী পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার প্রথমিকভাবে বিতরণ করা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের যা যা করণীয় আমরা তা করছি।

শিবগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম জানান, নিম্নাঞ্চলগুলোতে প্রায় ৮ হাজার মানুষ ও প্রায় ৫০ হাজার গরু বিভিন্ন জায়গা পানিবন্দী রয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এ কে এম তাজকির-উজ-জামান জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার পানিবন্দী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য চাল, ডাল চিড়া, মুড়িসহ বিভিন্ন ধরনের শুকনো খাবার দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বন্যা মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে জেলা প্রশাসনের।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত