ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

আবরার হত্যা: কান্নাজড়িত কণ্ঠে যা বললেন আসামি আকাশের মা

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১২ অক্টোবর ২০১৯, ১০:০৮  
আপডেট :
 ১২ অক্টোবর ২০১৯, ১০:২৬

আবরার হত্যা: কান্নাজড়িত কণ্ঠে যা বললেন আসামি আকাশের মা

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে জয়পুরহাটের দোগাছী গ্রামের আতিকুল ইসলামের ছেলে আকাশ হোসেনও রয়েছেন।

জানা গেছে, দরিদ্র ভ্যানচালক আতিকুল ইসলামের ৩ সন্তানের মধ্যে আকাশ সবার বড়। দোগাছী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে গোল্ডেন প্লাসে পাস করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। জয়পুরহাট সরকারি কলেজ থেকে ২০১৬ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এ প্লাস পেয়ে পাস করার পরই আকাশের উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন নিয়ে দেখা দেয় সংশয়।

ভ্যানচালক বাবা পরিবারের সদস্যদের জন্য দুবেলা দুমুঠো ভাত জোগাড়েই যেখানে হিমশিম খাচ্ছিলেন, সেখানে মেধাবী এই ছেলেকে ঢাকায় পাঠিয়ে পড়ালেখা করানো একেবারেই অসম্ভব ছিল।

শত বাধা উপেক্ষা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ও বুয়েটে পড়ার সুযোগ পান আকাশ। শেষে বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তি হন। বিশ্ববিদ্যালয়ের দাতব্য সংগঠন ‘মানুষ মানুষের জন্য’ থেকে সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে ও টিউশনি করে লেখাপড়া করে আসছিলেন তিনি।

আকাশের মেঘ ঠেলে পরিবারকে স্বপ্ন দেখান-একদিন ভালো ইঞ্জিনিয়ার হয়ে ছোট ভাই-বোন ও মা-বাবার দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেবেন। কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাস, তৃতীয় বর্ষ না পেরোতেই আকাশ আজ তারই সহপাঠী আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

এ বিষয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে আকাশের মা নাজমা বেগম বলেন, আমার সন্তান যদি সত্যিই এ হত্যাকাণ্ডে সঙ্গে জড়িত থাকে, তা হলে তার বিচার হোক। আর যদি না থাকে, তা হলে তদন্তসাপেক্ষে খুব দ্রুত আমার কলিজার টুকরাকে আমার বুকে যেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

বাবা আতিকুল দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলেন, ছেলেকে বুয়েটে পাটায়ছিলাম ইঞ্জিনিয়ার বানাতে। নিজে না খায়েও তার জন্য পত্যেক মাসে ট্যাকা পাঠায়চি। হামাক (আমার) ছেলে যে আরেকজন ছেলেক মারবে, তা ভাববার পাচ্চি না। ওক (আকাশ) বারবার কছি (বলছি)-বাবারে তুই রাজনীতি করিস না, মারামারি করিস না। হামাকোরে কষ্টের সংসার, পড়াশুনা শ্যাষ করে ভালো চাকরি করা লাগবি। এখন স্বপ্নপূরণ তো দূরের কথা, জীবনটাই বাঁচানো দায় হয়া পড়ছে।

উল্লেখ্য, ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেওয়ার জের ধরে আবরার ফাহাদকে ৬ অক্টোবর রাতে ডেকে নিয়ে যায় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী। এরপর রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দুইতলার সিঁড়ির করিডোর থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পরদিন সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে আবরারের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ লাশের ময়নাতদন্ত করেন। তিনি বলেন, ছেলেটিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

এই ঘটনায় আবরারের বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে ১৯ জনকে আসামি করে রাজধানীর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ পর্যন্ত ১৬ জন ছাত্রলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

আরএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত