ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১২ মিনিট আগে
শিরোনাম

গোয়াল ঘরে ৫ মাস ধরে শেকলে বাঁধা বৃদ্ধ মা!

গোয়াল ঘরে ৫ মাস ধরে শেকলে বাঁধা বৃদ্ধ মা!

মানসিক রোগী আখ্যা দিয়ে কোমড়ে শিকল পরিয়ে বৃদ্ধ মাকে পাঁচ মাস ধরে গোয়াল ঘরে বেঁধে রেখেছে সন্তানেরা। সেখানেই দিনে একবার তাকে খাবার দেয়া হত। এমন অমানবিক ঘটনাটি ঘটে বরগুনা সদর উপজেলার গৌরিচন্না ইউনিয়নের চরধুপতি এলাকায়।

মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ওই বাড়িতে গিয়ে বৃদ্ধা খবিরুন্নেসাকে অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি গোয়াল ঘরের বিছানায় শিকলে বাঁধা অবস্থায় দেখা যায়। স্যাঁতস্যাঁতে ও নোংরা একটি বিছানায় বসে তিনি নাতি-নাতনিদের ডাকছিলেন। শিকলে বাঁধা থাকায় তিনি বিছানা ছেড়ে নামতেও পারছিলেন না। এমনকি মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে মশারীরও কোনো ব্যবস্থা নেই।

৭৫ বছর বয়সী বৃদ্ধা খবিরুন্নেসার স্বামী মারা গেছেন বছর দুই আগে। তার স্বামী মারা যাওয়ার পরেই জমিজমা ভাগ করে নেয় তার তিন মেয়ে ও দুই ছেলে। ছেলেমেয়ে প্রত্যেকেই বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতছেন কিন্তু কারও ঘরেই ঠাই হয়নি বৃদ্ধা খবিরুন্নেসার। এ ঘর ও ঘর করে শেষ পর্যন্ত তার ঠাই হয় গোয়াল ঘরে। এই খবর পেয়ে মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে বৃদ্ধাকে গোয়াল ঘর থেকে উদ্ধার করে এক মেয়ের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

গৌরিচন্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তানভীর হোসেন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বৃদ্ধা খবিরুন্নেসাকে যথাসাধ্য সহায়তা দেওয়া হবে। এছাড়াও তার ভরণ-পোষণ যাতে নিশ্চিত করা হয় সে ব্যাপারে ছেলেদের ডেকে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। এ সময় চেয়ারম্যান ওই বৃদ্ধাকে ২ হাজার টাকা নগদ অর্থ সহায়তা দেন।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি চরম অমানবিক। এটি সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ছাড়া কিছু না। আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে উদ্ধার করে মেয়ে তাসলিমার জিম্মায় দিয়ে ছেলেদের ভরণ-পোষণ নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছি। এর ব্যত্যয় ঘটলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে খবিরুন্নেসার দুই ছেলে ও তাদের পরিবার সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। ছোট ছেলে বাচ্চু দাবি করেন, তিনি মায়ের ঠিকমতোই ভরণ-পোষণ দিচ্ছেন। মায়ের মাথায় সমস্যা আছে বলে বেঁধে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত