ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

পরীক্ষায় জালিয়াতি: সেই এমপিকে স্থায়ী বহিষ্কার

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০১৯, ১৪:৫৫

পরীক্ষায় জালিয়াতি: সেই এমপিকে স্থায়ী বহিষ্কার

পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে নরসিংদীর সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য তামান্না নুসরাত বুবলীকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।

রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলরুমে মিটিংয়ে বসেন ডিন, পরিচালনা পর্ষদের সদস্যসহ উচ্চ পদস্থরা। ছিলেন নরসিংদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষের প্রতিনিধি এবং পরীক্ষার হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরাও।

আলোচনা শেষে তামান্না নুসরাতকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানান বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এম এ মান্নান।

উপাচার্য বলেন, নুসরাতের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হয়েছে। আর কোনদিন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কোন কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন না বলেও জানান তিনি।

ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। তিন দিনের মধ্যে বলা হয়েছে রিপোর্ট দিতে। একটি শোকজ লেটারও পাঠানো হবে তামান্না নুসরাতকে।

এরআগে উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেট লাভের আশায় প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন বুবলী। নিজে পরীক্ষা না দিয়ে পরপর ৮টি পরীক্ষায় অংশ নেয় তার পক্ষে প্রক্সি পরীক্ষার্থীরা।

বিএ পরীক্ষার শেষ পরীক্ষায় দিতে গিয়ে হলে হাতেনাতে ধরা পড়েছে এক শিক্ষার্থী। তাই তাকে পরীক্ষা থেকে বহিষ্কার করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই সাথে জালিয়াতির বিষয়টি অনুসন্ধানে কলেজের পক্ষ থেকে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মহিলা এমপি ববুলীর এই দুর্নীতির খবর বেরিয়ে আসলে এলাকায় নিন্দা সমালোচনার ঝড় উঠে।

জানা যায়, নরসিংদী ও গাজীপুর আসনের সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি তামান্না নুসরাত বুবলী। তিনি নরসিংদী পৌরসভার প্রয়াত মেয়র ও সাবেক শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেনের স্ত্রী। তার দেবর কামরুজ্জামান কামরুল নরসিংদী পৌরসভার মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপর দেবর শামীম নেওয়াজ জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। পুরো পরিবারই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।

হলফ নামায় দেয়া তথ্য অনুযায়ী বুবলী এইচএসসি পাস। উচ্চ শিক্ষার সার্টিফিকেট লাভের আশায় তিনি বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি হন। এ পর্যন্ত চারটি সেমিস্টারের ১৩টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগ রয়েছে ১৩টি পরীক্ষার স্ব-শরীরে একটিতেও তিনি অংশ নেননি। তার পক্ষে একেক সময় একেক জন অংশ নিয়েছে।

আর এমপির প্রক্সি প্রার্থীকে সুবিধা দিতে পরীক্ষার কেন্দ্রসহ হল পাহাড়ায় থাকতেন এমপির ক্যাডার বাহিনী। তাই ভয়ে ছাত্র-শিক্ষক কেউই মুখ খুলতে পারতনা। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার পরীক্ষা দিতে এসে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন পরীক্ষা দিতে আসা পরীক্ষার্থী।

প্রক্সি পরীক্ষার্থী এশা নিজেকে তামান্না নুসরাত বুবলী হিসেবে দাবি করেন। তবে ছবি সংবলিত প্রবেশ পত্র দেখাতে পারেনি। এমপি তামান্নার পরীক্ষা কিভাবে দিচ্ছেন তা জানতে চাইলে তোর কোন সঠিক জবাব দিতে পারেননি প্রক্সি পরীক্ষার্থী এশা।

ভুয়া বা প্রক্সি পরীক্ষায় অংশ নেয়া একজন পরীক্ষার্থীকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার বিধান থাকলেও এর কিছুই করেননি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক। অনেকটা বীর দর্পেই হল থেকে বেরিয়ে যায় ওই পরীক্ষার্থী।

নরসিংদী সরকারী কলেজ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক/হল ইনচার্জ প্রফেসর শফিকুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার্থীর ছবি সংবলিত প্রবেশ পত্র ছিলোনা। প্রবেশ পত্র নাকি হারিয়ে গেছে। তবে থানার জিডি কপি নিয়ে পরীক্ষা হলে পরীক্ষায় অংশ নিতে আসছে। তাই আমরা চিনতে পারিনি। বিষয়টি জানার পর প্রক্সি পরীক্ষার্থী এশাকে আটক করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু দায়িত্বে ছিলো একজন পুলিশ সদস্য। তাই কথা বলার ফাঁকে সে দৌড়ে পালিয়ে যায়। তবে পরে অনেক পুলিশ সদস্যই কলেজে এসেছেন।

আরএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত