ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাথরুমের ভেতর শিক্ষকের গলাকাটা লাশ

  নরসিংদী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০১৯, ১৬:২৯

বাথরুমের ভেতর শিক্ষকের গলাকাটা লাশ

নরসিংদীর মনোহরদীতে তোফাজ্জল হোসেন (৩০) নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার সকালে মনোহরদী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন কুলি মিয়ার বাসা থেকে এই লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহত তোফাজ্জল হোসেন নত্রেকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার পূবাইল গ্রামের মমতাজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি একদুয়ারিয়া ইউনিয়নের দরবেশেরকান্দা হাফিজিয়া মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন। ছয় মাস ধরে মনোহরদী বাসস্ট্যান্ডের পূর্বপাশে কুলি মিয়ার বাড়িতে তোফাজ্জল এবং তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার ভাড়া থাকেন।

আয়েশা আক্তার পার্শ্ববর্তী কাপাসিয়া উপজেলার খিরাটি গ্রামের সিরাজুজ্জামানের মেয়ে। এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তোফাজ্জলের স্ত্রী আয়েশা আক্তার হ্যাপীকে (৩৫) আটক করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, প্রায় ১৫ বছর আগে চালাকচর গ্রামের কাজিম উদ্দিনের সাথে আয়েশা আক্তারের বিয়ে হয়। ওই সংসারে সামি (১৩) নামে তার এক ছেলে রয়েছে। ১০ বছর আগে তার স্বামী মারা গেলে তিনি বাবার বাড়ি চলে আসেন। পরে মনোহরদীর একদুয়ারিয়া দরবেশেরকান্দা হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ছেলেকে ভর্তি করান। এই মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন তোফাজ্জল হোসেন। সেই সুবাদে তোফাজ্জলের সাথে আয়েশা আক্তারের পরিচয় হয়।

পরবর্তীতে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত রমজান মাসে তারা নিজেদের সিদ্ধান্তে বিয়ে করেন এবং মনোহরদী ভাড়া বাসায় বসবাস করতে থাকেন। বিয়ের পর কিছুদিন দুজনের মাঝে সম্পর্ক মধুর থাকলেও তিন মাস ধরে দেখা দেয় তিক্ততা। প্রায় প্রতিদিনই তাদের মাঝে ঝগড়া এবং মারামারি হতো।

রোববার ভোর রাতে তোফাজ্জল বাথরুমে যান। দীর্ঘক্ষণেও বাথরুম থেকে বের না হওয়ায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়। পরে দরজা ভেঙে দেখা যায় বটি দিয়ে তিনি নিজের গলা কেটে ফেলেছেন। প্রচুর রক্তক্ষরণে বাথরুমেই মারা যান তিনি।

নিহতের স্ত্রী আয়েশা আক্তার বলেন, দুই মাস আগে তোফাজ্জল মাদরাসার শিক্ষকতা ছেড়ে দেন। সারাদিন বাসায় শুয়ে বসে সময় কাটাতেন। কোনো কাজকর্ম না করায় সংসারে আর্থিক অনটন দেখা দিলে আমরা ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়ি। এসব নিয়ে তার সাথে প্রায়ই ঝগড়া হতো। ঋণ পরিশোধ, সংসার ও ছেলের পড়ালেখার খরচের জন্য সম্প্রতি তার কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করি। এ নিয়ে আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষে একসাথে শুয়ে পড়ি। রাতে তোফাজ্জল বাথরুমে ঢোকেন। দীর্ঘক্ষণ পরও বের না হওয়ায় আমি বাথরুমের দরজা ভেঙে দেখি সে বটি দিয়ে নিজের গলা কেটে ছটফট করছে। এ সময় প্রচুর রক্তক্ষরণে সে বাথরুমেই মারা যায়।

মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল শেষে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত