ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১ মিনিট আগে
শিরোনাম

শিক্ষার্থীকে চোখ বেঁধে ভয়াবহ নিযার্তন

  ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০১৯, ২২:০১

শিক্ষার্থীকে চোখ বেঁধে ভয়াবহ নিযার্তন

ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানাধীন বারইহাটি পশ্চিম পাড়া হাফেজিয়া মাদ্রাসায় শাখাওয়াত হোসেন সা’দ (৮) নামে এক শিক্ষার্থীকে চোখ-মুখ বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।

মঙ্গলবার দুপুরে পরিবারের লোকজন শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন। এ ঘটনায় পাগলা থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার বারইহাটি গ্রাামের আসাদুজ্জামান তার শিশুপুত্র শাখাওয়াত হোসেন সা’দকে (৮) গত জুলাই মাসে হাফেজি পড়ানোর উদ্দেশ্যে একই গ্রামের পশ্চিম পাড়া হাফেজিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি করেন। কিন্তু ভর্তি হওয়ার পর থেকেই মাদরাসার সহপাঠি বড় শিক্ষার্থীরা শিশুটির পেছনে লাগে ও অকথ্য নির্যাতন চালায়। নির্যাতনের সময় যাতে কান্নাকাটি করতে না পারে সে জন্য শিশুটির চোখ-মুখ বেঁধে রাখা হতো। লাঠি-রড দিয়ে পেটানো ছাড়াও মাঝে মাঝে সৌর বিদ্যুতের দুই তার একত্রিত করে দুই হাতে বিদ্যুতের শক দেয়া হতো। নির্যাতনের কথা কাউকে জানালে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দিতো নির্যাতনকারীরা।

সোমবার বিকেল ৩টার দিকে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ রাকিবুল হাসান পাশের কক্ষে ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় মাদ্রাসার বড় শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর, মোস্তাকিন, ইমন, তুহিন, রিফাত, তানহাজ, মাসুম শিশুটিকে ‘নফল নামাজের কথা বলে’ মসজিদের ভেতর ধরে আনেন। পরে সবাই মিলে শিশুটির চোখ-মুখ বেঁধে লোহার রড দিয়ে বেদম পেটায় এবং এ কথা কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।

নির্যাতনকারীদের বয়স ১২-১৫ বছরের মধ্যে। এ অবস্থায় ভয়ে শিশুটি কাউকে কিছু জানায়নি। মঙ্গলবার সকালে আসাদুজ্জামান ছেলেকে দেখতে গিয়ে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে শিউরে উঠেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

এ ব্যাপারে আসাদুজ্জামান বলেন, আমার ফুটফুটে বাচ্চাটিকে হাফেজি পড়ানোর জন্য ওই মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ রাকিবুল হাসানের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার বাচ্চাটিকে অমানুষের মতো নির্যাতন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি আইনের আশ্রয় নেবো।

বারইহাটি পশ্চিম পাড়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ রাকিবুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাচ্চাটিকে মারধর করা হতো এটা আমি জানতাম না। পরে জেনেছি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন সাগর বলেন, খবর পেয়ে আমি বাচ্চাটিকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। কী জন্য মেরেছে জানি না। তবে নির্দয়ভাবে মেরেছে, দেখলে যে কারো চোখে পানি এসে যাবে।

এ ব্যাপারে পাগলা থানার ওসি শাহিনুজ্জামান খান বলেন, এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। তবে বিষয়টির খোঁজ নেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত