ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪২ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাউল গানের নামে অশ্লীলতা, ফাঁদে গ্রামবাসী

  রূপগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০১৯, ০৯:৪৮

বাউল গানের নামে অশ্লীলতা, ফাঁদে গ্রামবাসী

নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় চলছে মহিলা বাউল শিল্পী দিয়ে রমরমা ব্যবসা। এতে নিঃস্ব হচ্ছে গ্রামের সহজ সরল মানুষ। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ইদবারদী মাজার ও রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের পোনাবো এলাকার বিনাবো টেক আলীম উদ্দিন শার্হ মাজারে প্রতি বৃহস্পতিবার ও সোমবার রাতভর চলে মহিলা বাউল শিল্পী দিয়ে রমরমা ব্যবসা। বাউল গানের আয়োজন করে কিছু অসাধু লোক। এ বাউল গানের আসরে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধরাও অংশ নিচ্ছে। হাতিয়ে নিচ্ছে অসহায় গরীব জনগণের হাজার হাজার টাকা। ঐ টাকার অল্প কিছু পায় বাউল শিল্পীরা আর বাকী টাকা আত্মসাৎ করে অসাধু লোকেরা। এ গানের টাকা দিয়ে মাজারের কোনো উন্নয়ন না হলেও পকেট ভরছে অসাধু কিছু লোকের।

গোপন সূত্রে জানা যায়, আড়াইহাজার উপজেলার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ইদবারদী মাজারের খাদেম মানিক শাহ্ মহিলা বাউল শিল্পীদের দ্বারা প্রতি বৃহস্পতিবার রাতভর বাউল গানের আয়োজন করে। এছাড়াও মানিক শাহ্ সাথে যার সম্পর্ক ভালো সে এখানে গান গাইতে পারে। যার সাথে সম্পর্ক নেই সে এখানে গান গাইতে পারে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পোনাবো এলাকার বিনাবো টেক আলীম উদ্দিন শাহর মাজারে আসা এক বাউল শিল্পী বলেন, এখানে বাউল শিল্পী হিসেবে গান গায় ২০ থেকে ৩০ জন। যে সব বাউল শিল্পীরা গান গায় তারা আসলে প্রকৃত শিল্পী না। তাদের কাজ হলো গ্রামের সহজ সরল মানুষকে ফাঁদে ফেলানো। শুধু তাই নয় এখানে মাদক সেবী ও মাদক ব্যবসায়ীদের বেশ সমাগম লক্ষ করা যায়। একদিকে গানের আসর অন্যদিকে মাদকের আসর বসিয়ে পরিবশে অশান্ত করছে। বাউল গানের শিল্পীদের খুশি করতে অনেকে গোয়ালের গরু, স্ত্রীর গহনা বা নিজের শেষ সম্বল বিক্রি করে সর্বশান্ত হচ্ছে। যা ভাল চোখে দেখছেনা এলাকার সচেতন মহল।

ইদবারদী মাজারে আসা এক ব্যক্তি বলেন, আমরা মাজারে আসি, মাজারকে আমরা ভালোবাসি আর গানকেও ভালোবাসি, গান হলো আত্মার খোরাক। কিন্তু গান এখন আগের মতো নাই। আগে বিভিন্ন মেলায় যাত্রা গান হতো। সেখানে দেখতাম মেয়েরা নাচতো আর ছেলেরা টাকা দিতো। এখানে এসে দেখি যাত্রা গানের মতো বাউল গানেও মেয়েদের টাকা দিচ্ছে।

এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিভিন্ন গ্রামের গরীব দিনমুজুর যারা সারাদিন কাজ করে টাকা জমায় এ আশায় যে, কবে আসবে বৃহস্পতিবার ও সোমবার। আর সেই টাকা রাতভর দিয়ে আসে মহিলা বাউল শিল্পীদের।

ইদবারদী এলাকার এক বৃদ্ধ ব্যক্তি বলেন, আমরা আমাদের ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে দেশ গড়ার কাজে লাগাতে চাই কিন্তু এই গ্রামে প্রতি সপ্তাহে বাউল গানের আসর বসিয়ে আমাদের ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনার ক্ষতি করছে। রাতভর হৈচৈ আর চেচামেচিতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া করতে সমস্যা হচ্ছে।

এসব অভিযোগ শুনে আমাদের প্রতিবেদক বেশ কয়েক দিন ক্যামেরা নিয়ে ঐ মাজারগুলোর বাউল গানের দৃশ্য ধারণ করেন। ভিডিও এর মাঝে উঠে আসে কিভাবে মেয়েদের টাকা দিচ্ছে সাধারণ জনগণ।

অপরদিকে রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়নের পোনাবো এলাকার বিনাবো টেক আলীম উদ্দিন শাহ্ মাজারে একই অবস্থা বিরাজ করছে। এখানেও প্রতি সোমবার এ বাউল গানের আসর বসিয়ে সর্বশান্ত করা হচ্ছে এলাকাবাসীকে।

এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মমতাজ বেগম বলেন, আলীম উদ্দিন শাহ মাজারে বাউল গান হয় তা আমার জানা নাই। তবে এখানে বাউল গানের নামে অশ্লীল কোনো কিছু হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত