ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

সেতু ভাঙায় দুর্ভোগে ৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা

  কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ১৬:৩৮

সেতু ভাঙায় দুর্ভোগে ৭ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা

কলাপাড়ায় জয়বাংলা বাজার সংলগ্ন সেতুটি ভেঙে খালে পড়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছে সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা।

ঘূর্ণিঝড় বুলবুল তাণ্ড বের দুইদিন পর গত ১৩ নভেম্বর ভোরে সেতুটি হঠাৎ ভেঙে সাপুড়িয়া খালের মধ্যে পড়ে যায়। শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় লোকজন ডিঙি নৌকায় করে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে। এতে ঝুঁকি থাকায় অনেক শিশু শিক্ষার্থীকে অভিভাবকরা স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে।

এছাড়া সেতু ভেঙে পড়ায় জয়বাংলা বাজারের দেড় শতাধিক ব্যবসায়ী ও ছয়টি গ্রামের মানুষ পড়েছে চরম দুর্ভোগে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বালিয়াতলী ও মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের মাঝামাঝি সাপুড়িয়া খালের পাশে ২০১২ সালের দিকে জয়বাংলা বাজারটিতে স্থায়ী বসতি ও বেচাকেনা শুরু হয়। এ বাজারের পাশেই সাপুড়িয়া খালের উপর আয়রণ সেতুটি নির্মিত হয় ১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে।

ছয়টি গ্রামের প্রায় দশ সহস্রাধিক মানুষ এ সেতু দিয়ে কলাপাড়া

উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন বাজার ও স্কুৃল-কলেজে যাতায়ত করে।

এ সেতু দিয়ে প্রতিদিন মিঠাগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম মিঠাগঞ্জ আশ্রাফুল উলুম কেরাতুল কোরআন কওমী মাদ্রাসা, আলীগঞ্জ আরামগঞ্জ দারুল ইসলাম দাখিল মাদ্রাসা, আলীগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আরামগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আরামগঞ্জ মহিলা হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও আহম্মাদিয়া হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা যাতায়াত করে।

এছাড়া কলাপাড়া সদরে কলেজে আসতেও এই সেতু পার হতে হয় শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষার্থী রিমা, আনিসা ও রিমন জানায়, এই ভাঙ্গা সেতু দিয়ে স্কুল-মাদ্রাসায় আসা যাওয়া করতে গিয়ে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটতো। সেতু দিয়ে খালে পড়ে যেতো অনেক শিশু। আর এখন তো সেতুই খালে পড়ে গেছে। এখন খেয়ার করে পার হতে হয়। এখনতো আরো বেশি ভয় করে। যারা সাঁতার জানে না তারা এখন স্কুলেও আসে না।

মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা মো.মানসুর বিল্লাহ বলেন, সেতু ভেঙে পড়ায় সাতটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই সহস্রাধিক শিক্ষার্থী পড়েছে দুর্ভোগে। যোগাযোগ বন্ধ থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি কমে গেছে।

একাধিক অভিভাবক অভিযোগ করেন, বছর শেষ। আর কয়েকদিন পর স্কুল-মাদ্রাসাগুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু এখন সেতু ভেঙে পড়ায় প্রতিদিন শিশুদের খেয়া নৌকায় স্কুল মাদ্রাসায় নিয়ে যেতে হচ্ছে। অনেক অভিভাবক খেয়া পারের ভয়ে সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে সাহস পাচ্ছেন না।

জয়বাংলা বাজার সমিতির সভাপতি আঃ কাদের মৃধা বলেন, এ সেতুটি ভেঙে পড়ায় এখন বাজারের দেড় শতাধিক ব্যবসায়ী বিপাকে পড়েছে। মালামাল পরিবহন করতে না দেখা দিয়েছে পণ্য সংকট। স্থানীয় উদ্যোগে ভেঙে পড়া সেতুর পাশে বাজারে গ্রামগুলোতে যোগাযোগ সচল রাখার জন্য একটি ডিঙি নৌকার খেয়া দেয়া হলেও তাতে জনপ্রতি নেয়া হচ্ছে দশ টাকা করে।

কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. আব্দুল মান্নান সাংবাদিকদের জানান, জয়বাংলা সেতুটি ভেঙে একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণের প্রস্তাবনা মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। ৪১ মিটার দীর্ঘ এ সেতুটি নির্মানে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। জাইকা এ সেতু নির্মাণে অর্থায়ণ করবে। এ প্রস্তাবনাটি অনুমোদন হলে সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হবে। তবে এখন মানুষের চলাচলের জন্য ভেঙে পড়া সেতুর জায়গায় একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল করা হবে।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত