ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ ঘন্টা আগে
শিরোনাম

কিশোর চালক, শিশু সহকারী

  হৃদয় আলম

প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ১৮:৩৭  
আপডেট :
 ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ১৯:৩৮

কিশোর চালক, শিশু সহকারী

আলমের বয়স সবে পনেরো বছর। সে পেশাদার লেগুনা (হিউম্যান হলার) চালক। তবে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। আলম লেগুনা চালায় ৬০ ফিট টু ফার্মগেট রোডে। তার মতো শতাধিক কিশোর রাজধানীর বিভিন্ন রুটে নিয়মিত লেগুনা চালাচ্ছে।

এ লেগুনায় সহকারী হিসেবে রয়েছে শিশু অনিক। তার বয়স আট। এ বয়সে অন্য পাঁচজন শিশুর মতো স্কুলে যাওয়ার কথা ছিলো অনিকের। বাবা-মায়ের আদরে বেড়ে ওঠার কথা ছিলো। কিন্তু জীবিকার তাগিদে তা আর হলো কই!

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যান মতে, রাজধানীর ১৫টি রুটের লেগুনাচালকের ৩৫ শতাংশই শিশু। যাদের বয়স ১৩ থেকে ১৮ –এর মধ্যে। যাত্রাবাড়ী থেকে ডেমরা, পোস্তগোলা, জুরাইন, গুলিস্তান, মাতুয়াইল রোডে নিয়মিত লেগুনা চালাচ্ছে এসব শিশু।

এ ছাড়া গুলিস্তান থেকে কেরানীগঞ্জ, আজিমপুর, খিলগাঁও রোডেও নিয়মিত লেগুনা চালাচ্ছে তারা।

ঢাকা জেলা লেগুনা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, যাত্রাবাড়ী থেকে ডেমরা রুটে ২২০টি লেগুনা চলে। যাত্রাবাড়ী থেকে পোস্তগোলা রুটে চলে ১১৫টি। জুরাইন থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত চলে ১০৭টি লেগুনা এবং যাত্রাবাড়ী থেকে চিটাগাং রোড পর্যন্ত চলে আরও ২০টি। এসবের অধিকাংশের চালকই শিশু।

ট্রাফিক আইন অনুযায়ী, ২০ বছরের নিচে কোনো ব্যক্তি পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন না। আঠারো বছরের কম বয়সী কেউ কন্ডাক্টরের কাজও করতে পারবে না। অথচ আঠারো বছরের কম বয়সী এসব শিশু বছরের পর বছর খোদ রাজধানীতে লেগুনা চালাচ্ছে। শিশু আইন অনুযায়ী, আঠারো বছরের কম বয়সী সবাই শিশু হিসেবে বিবেচিত।

পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. মো. শামসুল হক বলেন, অদক্ষ, অবৈধ চালক দিয়ে যখন চালানো হয় তখন স্বাভাবিকভাবেই এরা যানজটের দিকে কেউ লক্ষ্য করবে না, নিরাপত্তার ইস্যুটাও লক্ষ করবে না। তাদের চোখ কিন্তু রাস্তার দিকে থাকবে না, চোখ থাকবে যাত্রীর দিকে।

বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) পরিচালক (প্রশাসন) মো. ইউছুব আলী মোল্লা বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এ বিষয়টি আমরা অবগত রয়েছি। কাউকে আমরা ১৮ বছরের আগে লাইসেন্স দেওয়া হয় না। কিন্তু কেউ যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া আগে লেগুনা চালাতে আসে আর দাবি করে যে সে লাইসেন্স পেয়েছে তাহলে তা আগে যাচাই-বাছাই করে দেখতে হবে। তারপর ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় নিরাপদ সড়ক চাই–এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এ বিষয়ে আইন হয়ে গেছে। এখন বিষয়টা পুলিশ দেখবে। আমার এ বিষয়ে কিছু বলার নেই।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত