ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রতারণা করতে গিয়ে আনসার সদস্য ধরা

  যশোর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০১৯, ২১:০৬

প্রতারণা করতে গিয়ে আনসার সদস্য ধরা

বিচারপতি এনায়েতুর রহিমের ভাই ও আইনমন্ত্রীর পিএস পরিচয়ে প্রতারণার অভিযোগে মাহমুদ হাসান লিটন (২৬) নামে এক আনসার সদস্যকে আটক করেছে যশোর সদর ফাঁড়ির পুলিশ। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মোহনপুর গ্রামের মহাসিন আলীর ছেলে। বর্তমানে ঢাকার ডেমরা এলাকায় কর্মরত।

সদর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, আনসার সদস্য লিটন স্ত্রী-মেয়ে নিয়ে ঢাকার ডেমরায় থাকেন। সেখানে থাকা অবস্থায় পরিচয় হয় যশোরের উপশহর এলাকার স্বামী পরিত্যক্তা এক নারীর সাথে। তাকে বিয়ে করেন মাস ছয়েক আগে। ওই নারী এক প্রকার বাধ্য হয়ে লিটনকে বিয়ে করেন। লিটন যখনই যশোরে আসেন তখনই বিভিন্ন হোটেলে থাকার সুযোগ নেয়ার জন্য মোবাইল ফোনে উর্ধতন সরকারি কর্মকর্তা বা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ঘনিষ্ট হিসাবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। পুলিশও তার কথায় বিশ্বাস করে সুযোগ সুবিধা দিয়েছে এর আগেও।

এসআই শরিফুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার সকালে লিটন ঢাকা থেকে যশোরে আসেন এবং হোটেল মণিহারের ২০৬ নম্বর কক্ষে ওঠেন। সেখানে উঠে কোতোয়ালি থানার ওসি মনিরুজ্জামানের মোবাইল কল দিয়ে বলেন, তিনি স্বনামধন্য বিচারপতি এনায়েতুর রহিমের ভাই এবং আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের ব্যক্তিগত সহকারী। তার স্ত্রীর সাবেক স্বামী দ্বারা তিনি আক্রান্ত হতে পারেন। সে কারণে পুলিশি নিরাপত্তা জরুরি। ফোন পেয়ে ওসি মনিরুজ্জামান সদর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ও এসআই শরিফুল ইসলামকে সেখানে পাঠান।

মণিহার হেটেলের ওই রুমে গিয়ে দেখেন তিনি (লিটন) এক ব্যক্তির সাথে উচ্চস্বরে কথা বলছেন, তার স্ত্রী পাশে বসে আছেন। তালাক সংক্রান্ত বিষয়ে কথা হচ্ছিল। কিছু সময় পরে ওই ব্যক্তি চলে যান। পরে লিটনকে থানায় নিয়ে আসা হয়। থানায় নিয়ে জানতে পারেন তার স্ত্রীর সাবেক স্বামীর বাড়ি যশোর সদরের সুজলপুর গ্রামে। স্ত্রীর সাথে যখন বিয়ে হয় সে সময় তার গর্ভে একটি সন্তান ছিল। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শিশুটিকে সাবেক স্বামীর কাছে লিটন জোর করে পাঠিয়ে দেন। সেই থেকে একটি পুত্র সন্তান মানুষ করছেন সাবেক স্বামী।

বৃহস্পতিবার সকালে তার স্ত্রীর সাবেক স্বামী কোতোয়ালি থানায় ৬ মাসের ওই সন্তানকে নিয়ে এসে পুলিশে কাছে দিয়ে বলেন এতটুকু বাচ্চা রাখা যাচ্ছে না। তাকে তার মায়ের কাছে দেয়া হোক। তার কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে লিটন আসলে কোনো মন্ত্রীর পিএস বা কোনো বিচারপতির ভাই না। সে একজন সাধারণ আনসার সদস্য। পরে পুলিশ তাকে আটক করে। আটকের সংবাদ শুনে তার প্রথম স্ত্রী আয়েশা সাতক্ষীরা থেকে যশোর কোতোয়ালি থানায় আসেন।

আয়েশা জানিয়েছেন, ২০/২১ দিন হলো তিনি ঢাকা থেকে সাতক্ষীরায় এসেছেন। এসে শুনতে পান তার স্বামী দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে ঝামেলা হয়েছে। লিটন একজন আনসার সদস্য। প্রত্যেকদিন তিনি সকালে অফিসে যান বলে আমাকে জানান। এর বেশি কিছু জানি না।

এসআই শরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, দ্বিতীয় স্ত্রী লিটনের কাছ থেকে তালাক চান। লিটন তালাক দেবেন না এ নিয়ে সমস্যা। এই কারণে লিটন পুলিশকে মিথ্যা পরিচয়ে সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন। তার বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা হবে।

মাহমুদ হাসান লিটন নিজেকের আনসার সদস্য পরিচয় দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি কোনো মন্ত্রীর পিএস বলে পরিচয় দেননি। তার এক আনসার সদস্য বন্ধুর কি রকম আত্মীয় হন আইনমন্ত্রী। তিনি ফোন দিয়েছিলেন ওসির কাছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত