ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২০ মিনিট আগে
শিরোনাম

হাসপাতালে ঠাঁই না পেয়ে জনসম্মুখে সন্তান প্রসব

  সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৭:৪৯

হাসপাতালে ঠাঁই না পেয়ে জনসম্মুখে সন্তান প্রসব

প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শস্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে উপস্থিত হয়েছিলেন সন্তান সম্ভবা এক নারী। কিন্তু হাসপাতালে উপস্থিত চিকিৎসক ও নার্স সবাই মুখ ফিরিয়ে নেন তার থেকে। মুখের ওপর বলে দেন এ হাসপাতালে আপনার চিকিৎসা নেই। পরে সেবা না পেয়ে জনসম্মুখে সন্তান প্রসব করেছেন ওই প্রসূতি।

রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শস্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটে।

প্রসূতির পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার রুপসাচর এলাকার মো. আব্দুর রহিমের স্ত্রী রহিমা খাতুন (২২) গর্ভকালীন সমস্যা নিয়ে রোববার রাত ১০টার দিকে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তি হওয়ার পর প্রসবের কোনো ব্যথা অনুভব না হওয়া ও রক্ত স্বল্পতায় ভুগছে এই মর্মে রহিমা খাতুনকে ১০ টা ২০ মিনিটের দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক বনশ্রী সাহা ছাড়পত্র দিয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে যেতে বলেন।

ওই সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক বনশ্রী সাহা প্রসব বেদনায় ছটফট করতে থাকা প্রসূতি রহিমার চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে ফোনে কথা বলতে থাকেন। এ পর্যায়ে রোগীর বেদনা আরও তীব্র হলে প্রসূতির স্বামী মো. আব্দুর রহিম গাইনি ও প্রসূতি ওয়ার্ডের ২য় তলা থেকে চিকিৎসা না পেয়ে নিচে নামিয়ে হাসপাতালের প্রধান ফটক ইমার্জেন্সি রুমের বাইরে সিএনজিতে ওঠানোর সময় জনসম্মুখেই সন্তানের জন্ম দেন রহিমা খাতুন।

এদিকে খোলা পাকা জায়গায় সন্তান প্রসব হওয়ায় নবজাতক গুরুতর আহত হয়। পরে রোগীর স্বজন ও স্থানীয়দের তোপের মুখে নবজাতককে শিশু ওয়ার্ড ও রহিমাকে গাইনি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে গাইনি ও প্রসূতি ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স ফাহমিদা খাতুন ও শিল্পী খাতুন বলেন, প্রসূতি রহিমাকে ডাক্তার বনশ্রী সাহা ছাড়পত্র দিয়েছিলো, তাই তাকে চলে যেতে বলেছিলাম।

প্রসূতির স্বামী আব্দুর রহিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তার স্ত্রী যখন প্রসব বেদনায় ছটফট করছিলো তখন তিনি বারবার দায়িত্বরত ডাক্তারকে অনুরোধ করেও সেবা পাননি। অবশেষে খোলা আকাশের নিচেই তার স্ত্রীকে সন্তান প্রসব করতে হয়েছে। তিনি এ ঘটনার বিচার চান।

প্রসূতি রহিমা খাতুন বলেন, তিনি যখন প্রসব ব্যথায় কাতর তখন হাসপাতালের সেবিকারাও তাকে সাহায্য করতে আসেনি।

এ বিষয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক বনশ্রী সাহার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না পেরে লাইন কেটে দেন।

এ প্রসঙ্গে বঙ্গমাতা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রমেশ চন্দ্র সাহা বলেন, বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। তবে চিকিৎসক প্রসূতির অবস্থা একটু জটিল হওয়ায় ছাড়পত্র প্রদান করেছিলেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/আরকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত