ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

ধামরাইয়ের পোল্ট্রি ফার্মে লাগেনি আধুনিকতার ছোঁয়া

  ধামরাই প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:২৭

ধামরাইয়ের পোল্ট্রি ফার্মে লাগেনি আধুনিকতার ছোঁয়া

ঢাকা জেলার অন্যতম পোল্ট্রি শিল্প এলাকা হিসেবে পরিচিত ধামরাই উপজেলা। তবে, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখা এই পোল্ট্রি শিল্পে বর্জ্য ব্যবস্থা থেকে শুরু করে কোনো কিছুতেই লাগেনি আধুনিকায়নের ছোঁয়া। আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠা পোল্ট্রি খামারের বর্জ্য ফেলায় দেখা দিয়েছে মাত্রারিক্ত পরিবেশ দূষণ।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়- উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বেশ কয়েকটি পোল্ট্রি ফার্মের বর্জ্য খোলা জায়গায় ফেলায় বিপাকে পড়েছেন এলাকার কৃষক ও সাধারণ মানুষ। এসব ফার্মের বর্জ্য সরকারি খাল ও উন্মুক্ত স্থানে ফেলায় এলাকার পানি, বাতাস দূষিত হয়ে পড়ছে। এছাড়া খালের নালা দিয়ে বর্জ্য কৃষি জমিতে গিয়ে পড়ায় চাষাবাদে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। শিক্ষার্থীরা রাস্তা দিয়ে চলাচলের সময়ে নাকে কাপড় দিয়ে চলাচল করে।

জানা যায়, এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য এলাকাবাসীর পক্ষে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন হাবিবুর রহমান। আর এরপর এক পোল্ট্রি ফার্মের মালিক মোহাম্মদ আলী হাবিবুর রহমানকে হুমকি দেয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, উপজেলার সূতিপাড়া ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের কয়েকটি পোল্ট্রি ফার্মের বর্জ্য অবাধে ফেলা হচ্ছে পাশের সরকারি খালে। স্থানীয় খালে জমেছে বর্জ্যের স্তুপ। ফার্ম থেকে বড় পাইপ দিয়ে খালে এসে পড়ছে বর্জ্য, মরা মুরগী, পচা ডিম। এগুলো পচে এলাকায় দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে, নষ্ট করছে পরিবেশ। বর্জ্যের দূষিত পানির কারণে কৃষক তার খেতে কাজ করতে পারছেন না। দূষিত এ পানি হাতে পায়ে লেগে ঘাসহ বিভিন্ন চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছেন কৃষকরা। কৃষি জমিতে ফসল বুনলে তা পচে নষ্ট হয়ে যায়। এই ভয়ে কৃষিজমিতে ফসল আবাদ বন্ধ করে দিয়েছেন ওই এলাকার অনেক কৃষকরা।

এলাকার মানুষ জানান, খালে একসময় অনেক দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। বর্তমানে পোল্ট্রি ফার্মের বর্জ্যের কারণে খালে বেশি মাছ পাওয়া যায় না। কেউ খালের পানিতে নামতেও চান না কারণ সেই পানি শরীরে লাগলে ঘাসহ বিভিন্ন চর্মরোগ হয়।

এ ব্যাপারে কথা বলতে গেলে পোল্ট্রি ফার্মের মালিক মোহাম্মদ আলী জানান, আমি ইউনিয়ন পরিষদের ট্রেড লাইসেন্স নিয়েই পোল্ট্রি ফার্ম গড়ে তুলেছি। তবে একটু ভিন্ন চিত্র দেখা যায়, মোহাম্মদ আলী আবাসিক বিদ্যুৎ দিয়ে প্রায় ৫ বছর ধরে এলাকার মানুষের কথার তোয়াক্কা না করে পোল্ট্রি ফার্মের ব্যবসা করে আসেছ। এতে সরকার বিদ্যুৎ খাত থেকে ক্ষতির হিসেব গুনতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে কালামপুর ব্রান্চের ডিজি এম. খায়রুল বাকি বলেন, যদি আবাসিক লাইন থেকে বিদ্যুৎ নিয়ে পোল্ট্রি ফার্ম চালানো হয় তা সম্পূর্ণ বেআইনি। আমরা বিষয়টি আগে জানতাম না। আমরা ফার্মের মালিক মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নিব।

উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাইদুর রহমান বলেন, খোলা জায়গায় বা খালে, বিলে পোল্ট্রি বর্জ্য ফেলা মোটেই উচিত নয়। যারা এভাবে পরিবেশ নষ্ট করছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও পোল্ট্রি ফার্মের দুর্গন্ধে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত