ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

পেঁয়াজ খাওয়ায় শীর্ষে সিলেট, পিছিয়ে বরিশাল

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ২২:০০  
আপডেট :
 ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ২২:৪২

পেঁয়াজ খাওয়ায় শীর্ষে সিলেট, পিছিয়ে বরিশাল
ফাইল ছবি

পেঁয়াজের বাজার লাগামহীন। সরকারের নানা পদক্ষেপের পরেও কমছে না দাম। অবস্থা যখন এই। তখন গবেষণা বলছে সিলেট অঞ্চলের মানুষ বেশি পেঁয়াজ খায়। আর কম খায় বরিশাল অঞ্চলের লোক। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানকে (বিআইডিএস) দিয়ে এ গবেষণাটি করায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন।

গবেষণায় দেখা যায়, দেশে একেকটি পরিবারে প্রতি মাসে সর্বনিম্ন এক কেজি ৫৬ গ্রাম থেকে সর্বোচ্চ চার কেজি ৯১ গ্রাম পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশের পরিবারগুলো সেপ্টেম্বরে বেশি পেঁয়াজ ব্যবহার করে আর ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে পেঁয়াজ কম ব্যবহার হয়ে থাকে।

গবেষণা বলছে, সিলেটে শহর ও গ্রাম অঞ্চলে সমানভাবে বেশি পেঁয়াজ ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে সারাদেশের হিসাবে গ্রামের চেয়ে শহরের মানুষের পেঁয়াজ খাওয়ার প্রবণতা বেশি।

বিআইডিএসের জ্যেষ্ঠ গবেষণা ফেলো নাজনীন আহমেদের নেতৃত্বে ‘ওনিয়ন মার্কেট অব বাংলাদেশ: রোল অব ডিফরেন্ট প্লেয়ার্স অ্যান্ড অ্যাসেজিং কম্পিটিভন্স’ নামক মূল গবেষণাটি করা হয়। যা প্রকাশ হয় গত বছর ডিসেম্বরে।

গবেষণায় বলা হয়, পেঁয়াজ ৬০ শতাংশ দেশীয় উৎপাদন থেকে আসে, বাকি ৪০ শতাংশ আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশ ভারত থেকেই মূলত পেঁয়াজ আমদানি করে। বাংলাদেশে পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ভারতের বাজার সব সময় পর্যবেক্ষণ জরুরি। ভারতে বন্যার সময় থেকেই বাংলাদেশের আরও সতর্ক হয়ে বিকল্প বাজার খোঁজা জরুরি ছিলো বলে মনে করে বিআইডিএস।

গবেষণায় উঠে আসে, পেঁয়াজ আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে হবে। ধানের মতো পেঁয়াজের হাইব্রিড জাত উদ্ভাবন করতে হবে। এছাড়া যখন পেঁয়াজের দাম কম থাকে তখন সরকারের উচিত পেঁয়াজ কিনে মজুদ করা। যাতে আপদকালে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে কম দামে পেঁয়াজ বিক্রি করা যায়।

জানতে চাইলে প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, প্রতিবেদনটি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। তাছাড়া পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে মৌসুমে যখন পেঁয়াজের দাম কম থাকে তখন তা সংরক্ষণ করা উচিত। এজন্য কৃষকদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বাজারে কেউ একচেটিয়াভাবে দাম বাড়াচ্ছে কি না, যোগসাজশ করছে কিনা বা কর্তৃত্বের অপব্যবহার করছে কিনা- এসব বিষয় খেয়াল রাখা হচ্ছে। এর প্রমাণ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রতিবেদন বলা হয়েছে, বাংলাদেশে পেঁয়াজের দামের আর একটি কারণ হচ্ছে উৎসব। কোনো উৎসব হলেই দ্রুত দাম বেড়ে যায়। তাছাড়া বন্দরগুলোতে যখন কোনো জটিলতা সৃষ্টি হয়, তখন কয়েকদিন সেখানে আটকা থাকলে পেঁয়াজের ওজন কমে যায়। ফলে আমদানিকারকরা দাম বাড়িয়ে এই ক্ষতি পোষাতে চেষ্টা করেন।

বলা হয়েছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্নস্থানে সরবরাহ চেইন সংকুচিত হচ্ছে। অর্থাৎ অপেক্ষাকৃত কম হাত ঘুরে পেঁয়াজ ভোক্তার কাছে পৌঁছাচ্ছে। ফরিদপুরের পেঁয়াজ ভোক্তা পর্যায়ে আসতে হাতবদলের একটি চিত্র দেখানো হয়েছে গবেষণায়। এতে বলা হয়েছে, উৎপাদক থেকে পেঁয়াজ চলে যায় ফড়িয়াদের হাতে। সেখান থেকে যায় বেপারিদের কাছে। বেপারিরা একই জেলায় বা অন্য জেলার বেপারি বা কমিশন এজেন্টদের কাছে পাঠিয়ে দেন পণ্যটি।

আমদানিকারকদের পেঁয়াজও চলে যায় কমিশন এজেন্টের হাতে। কমিশন এজেন্টের পেঁয়াজ পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের হাত ঘুরে যায় ভোক্তাদের কাছে। ঢাকার শ্যামবাজার, কারওয়ান বাজার ও মৌলভীবাজারে বেপারি ও কমিশন এজেন্টদের মধ্যে পেঁয়াজ হাতবদল হয় কয়েক দফায়।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত