ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

ফাঁকিবাজ সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য দুঃসংবাদ

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৫:৪৪

ফাঁকিবাজ সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য দুঃসংবাদ

সরকারি অফিসের একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে ফাঁকিবাজি নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের সরকারি বিভিন্ন অফিসে কর্মচারিদের অনুপস্থিতি যেন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।

এমনকি সচিবালয়সহ বিভিন্ন জেলা-উপজেলার সরকারি অফিসেও কর্তব্যরতদের খুঁজে পাওয়া দায়। আবার একশ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারী দেরিতে অফিসে এলেও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ঊর্ধ্বতন কর্তাদের ‘ম্যানেজ’ করে অফিস শেষ হওয়ার আগে বাসায় চলে যান।

এতে সরকারি দপ্তরের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়ে। কর্মস্থলে অবস্থান না করা ও অফিস ফাঁকি দেওয়ার কারণে দূর-দূরান্ত থেকে কাজে আসা মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হয়।

এবার সেই সব ফাঁকিবাজ সরকারি কর্মচারীদের ‘আসি, যাই বেতন পাই’ কর্ম সংস্কৃতি বন্ধের উদ্দেশ্যে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকার। সরকারি কর্মচারী আইন, ২০১৮ এর আলোকে একটি নতুন বিধিমালা জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

প্রসাশন সূত্রে জানা গেছে, যদি সরকারি কর্মচারীরা নিজেদের কর্মস্থলে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত অথবা বিনা অনুমতিতে কর্মস্থল ত্যাগ কিংবা দেরিতে কর্মস্থলে উপস্থিত হয় তাহলে তাদের জন্য উপেক্ষা করছে বিরাট শাস্তি।

গত বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ফয়েজ আহম্মদ স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি আদেশে বলা হয়, এই বিধিমালা জারির পর এ সংক্রান্ত ১৯৮২ সালের এক্সিকিউটিভ ইনস্ট্রাকশন এবং ১৯৮৯ সালের এসআরও (নং-১৫৪) বিলুপ্তি হবে বলে গণ্য হবে। তবে কোনো কার্যক্রম অনিষ্পন্ন থাকলে তা এ ইনস্ট্রাকশন এবং এসআরও দিয়ে নিষ্পন্ন করা যাবে বলেও বিধিমালায় উল্লেখ রয়েছে।

বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে বলা হয়েছে, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া কোনো সরকারি কর্মচারী কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না। এ বিধান লঙ্ঘন করলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে যুক্তিসঙ্গত কারণ দর্শানোর সুযোগ দিয়ে অনুপস্থিত কর্মচারীর প্রতিদিনের অনুপস্থিতির জন্য একদিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কর্তন করতে পারবে।

বিনা অনুমতিতে অফিস ত্যাগের অভিযোগের বিষয়ে বলা হয়েছে, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো সরকারি কর্মচারী অফিস চলাকালীন অফিস ত্যাগ করতে পারবেন না।

এই বিধান লঙ্ঘন করলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দিয়ে এরূপ প্রতিক্ষেত্রের জন্য মুক্ত কর্মচারীর একদিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কর্তন করতে পারবে।

তবে শর্ত থাকে যে জরুরি প্রয়োজনে, কোনো সহকর্মীকে অবগত করে অফিস ত্যাগ করা যাবে। এবং এই বিধিমালার তফসিল অনুযায়ী সংরক্ষিত রেজিস্টারের এরূপ অবস্থানের কারণ সময় এতে উল্লেখ করতে হবে। বিলম্বে কর্মস্থলে উপস্থিতির বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী যুক্তিসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে উপস্থিত থাকতে পারবেন না।

এ বিধান লঙ্ঘন করলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে কারণ দর্শানোর যুক্তিসঙ্গত সুযোগ দিয়ে প্রতিদিনের বিলম্বে উপস্থিতির জন্য একদিনের সমপরিমাণ মূল বেতনের অর্থ কর্তন করতে পারবে।

আর অপরাধের পুনরাবৃত্তি দণ্ডে বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মচারী ৩০ দিনের মধ্যে একাধিকবার এসব অননুমোদিত কাজ করলে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর সর্বোচ্চ সাতদিনের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কর্তন করতে পারবে।

অপরাধ করলে দণ্ড পুনর্বিবেচনার বিষয়েও বলা হয়েছে। পুনর্বিবেচনার বিষয়ে বলা হয়েছে, এসব অপরাধের জন্য সরকারি কর্মচারীদের বেতন কর্তন করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্মচারী তিন কার্যদিবসের মধ্যে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে পারবেন।

পুনর্বিবেচনার আবেদন করা হলে আদেশ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে শুনানির জন্য যুক্তিসঙ্গত সময় দিয়ে হাতের সংশোধন বাতিল বা বহাল রাখতে পারবে।

পুনর্বিবেচনার আবেদনের ক্ষেত্রে শুনানির সংক্ষিপ্তসার, প্রাপ্ত তথ্য এবং সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করে রাখতে হবে। দণ্ডের অর্থ কর্তন সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের মাসিক বেতন থেকে কর্তন করে আদায় করতে হবে বলে বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত