ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রবীণদের জন্য পেনশন চালু করছে সরকার

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৭:৩৫

প্রবীণদের জন্য পেনশন চালু করছে সরকার

মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। তারই ধারাবহিকতায় প্রবীণদের জন্য পেনশন চালুর কথা ভাবছে সরকার। ৬০ বছর এবং এর বেশি বয়সী ব্যক্তিরা প্রবীণ হিসেবে স্বীকৃত হবেন।

জানা যায়, প্রবীণ কল্যাণ নামে একটি ফাউন্ডেশন গঠন করবে সরকার। এজন্য প্রবীণ কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইনের খসড়া করেছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়।

খসড়া আইন অনুযায়ী, ফাউন্ডেশন প্রবীণদের নিজ নিজ বাড়িতে রেখেই তাদের সেবা-যত্নের ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রবীণদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্য কর্মক্ষম প্রবীণদের উপযুক্ত কর্মে নিয়োগ এবং তাদের জন্য সম্ভাব্য কর্মসৃজন ও প্রশিক্ষণ প্রদান, প্রবীণদের জন্য ইউনিভার্সল সোশ্যাল পেনশন (ইউএসপি) চালুসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

এ বিষয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘প্রবীণ কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইনের খসড়া করেছি আমরা। খসড়াটি আমরা বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামতের জন্য পাঠিয়েছি। নানা প্রক্রিয়া শেষ করে এটি চূড়ান্ত করতে বছরখানেক তো লেগেই যাবে।’

তিনি আরো বলেন, সরকার প্রবীণ নাগরিকদের সমাজ ও সভ্যতার অভিভাবক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। প্রবীণদের মর্যাদাপূর্ণ, দারিদ্র্যমুক্ত, কর্মময়, সুস্বাস্থ্য ও নিরাপদ সামাজিক জীবন নিশ্চিতে ‘জাতীয় প্রবীণ নীতিমালা, ২০১৩’ করা হয়েছে। সরকার জাতিসংঘের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ এবং সিভিল ও রাজনৈতিক অধিকারের আন্তর্জাতিক সনদ যথাক্রমে ১৯৯৮ ও ২০০০ সালে অনুসমর্থন করেছে। তাই প্রবীণ নীতিমালা, আন্তর্জাতিক সনদ অনুসমর্থন বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন। তাই ‘প্রবীণ উন্নয়ন ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

ফাউন্ডেশনের কার্যাবলি সম্পর্কে খসড়ায় বলা হয়েছে, পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে ফাউন্ডেশন প্রবীণদের সরকার ঘোষিত সুবিধাদি নিশ্চিত করবে। কমিউনিটি অ্যাপ্রোচে প্রবীণদের নিজ নিজ বাড়িতে রেখেই তাদের সেবা-যত্ন করার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রয়োজনে দেশের প্রতিটি জেলায় এক বা একাধিক প্রবীণ নিবাস বা আবাসন নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ বা এ কর্মকাণ্ডে সহায়তা দেবে। প্রবীণদের রোগ প্রতিরোধ ও নিরাময়ের উদ্যোগ গ্রহণ এবং কম মূল্যে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করবে।

প্রবীণবান্ধব ব্যায়ামাগার, নার্সিং ও থেরাপি সেবাকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা এবং প্রবীণদের জীবনমান উন্নয়নে সহায়তা দেয়া। শিক্ষা পাঠ্যক্রমে সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পাঠ্যক্রম ও ব্যায়ামচর্চা প্রবর্তন। মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলোতে জেরিয়াট্রিক মেডিসিন (বার্ধক্যজনিত রোগ) বিভাগ, লংটার্ম কেয়ার, ইন্টিগ্রেটেড কেয়ার ও পেলিয়েটিভ কেয়ার ইউনিট খোলার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে ফাউন্ডেশন।

প্রবীণদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্য কর্মক্ষম প্রবীণদের উপযুক্ত কর্মে নিয়োগ এবং তাদের জন্য সম্ভাব্য কর্মসৃজন ও প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়োজিত করা; দুর্যোগের ঝুঁকিহ্রাস, সুরক্ষা ও পুনর্বাসনে প্রবীণদের সহায়তা দেবে ফাউন্ডেশন।

পর্যায়ক্রমে প্রবীণদের জন্য ইউনিভার্সল সোশ্যাল পেনশন (ইউএসপি) চালু করা। আবাসন বিষয়ে যথাসম্ভব প্রবীণ উপযোগী এবং ভৌত কাঠামো প্রবীণবান্ধব করার উদ্যোগ গ্রহণ। প্রবীণকল্যাণ তহবিল সৃজন, প্রবীণ বিষয়ক গবেষণা ও প্রচারণা পরিচালনা।

ফাউন্ডেশনের কাজের মধ্যে আরও রয়েছে- প্রবীণদের জন্য তথ্যভাণ্ডার সৃষ্টি, সংরক্ষণ ও ব্যবহার। প্রবীণদের জন্য দিবা-যত্নকেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনা করা। প্রবীণকল্যাণ সঞ্চয়পত্র প্রবর্তন করা। প্রবীণকল্যাণ নিশ্চিতে সরকার দ্রুত বা অন্য যেকোনো কার্যক্রম গ্রহণ। বেসরকারি সংস্থা বা সংগঠনকে প্রবীণকল্যাণ বিষয়ক কর্মসূচি গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা এবং প্রবীণকল্যাণে নিয়োজিত যেকোনো সংস্থা বা সংগঠনকে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা এবং পরামর্শ দেয়া।

এছাড়া প্রবীণদের জন্য সব পরিবহনে কম ভাড়ায় যাতায়াত বা চলাচল উপযোগী ব্যবস্থা নিশ্চিত করা; জাতিসংঘ ও এর অঙ্গ সংস্থার প্রবীণ অধিকার সুরক্ষা ও প্রবীণ উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি, রেজুলেশন, ঘোষণাপত্র ইত্যাদি জাতীয় পর্যায়ে বাস্তবায়ন, অগ্রগতি, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন এবং এ বিষয়ে সরকারের কাছে প্রয়োজনীয় সুপারিশ উপস্থাপন করবে ফাউন্ডেশন।

একই সঙ্গে প্রবীণদের আইনি সহায়তা দেয়া, প্রবীণদের চাহিদা অনুযায়ী তাদের কল্যাণে বিশেষ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ সেবক-সেবিকা গড়ে তোলা, প্রবীণদের জন্য আলাদা জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার ব্যবস্থা করা, প্রবীণ উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি বাস্তবায়নে যুগোপযোগী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কাজও ফাউন্ডেশন করবে।

ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয় রাজধানী ঢাকায় থাকবে এবং ফাউন্ডেশন প্রয়োজনবোধে দেশের যেকোনো স্থানে এর শাখা কার্যালয় স্থাপন করতে পারবে বলে খসড়া আইনে উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত