যুদ্ধে নিহত ছেলেটির পরিবারের খোঁজ কেউ নেয় না

১৯৭১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ঢাকার দোহার উপজেলার রাইপাড়া ইউনিয়নের নাগেরকান্দা এলাকার বাঁশতলায় ট্যাংক-বিধ্বংসী মাইন বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয় হিম্মেজ খাঁন (১৩) নামের এক বালক। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দোহার উপজেলায় অনেকে মন্ত্রী.এম.পি হয়েছেন। কিন্তু হিম্মেজ খাঁনের পরিবারের খোঁজ খবর ও কেউ কোন দিন নেয় নি। দেশের জন্য প্রাণ হারানো এই বালকের কথা বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই জানে না।

স্থানীয়রা জানায়, অনেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ না নিয়েও বলে আমি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছি। নিজের নাম মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় তুলে। বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়ে হিম্মেজ জীবন উৎসর্গ করলেও স্বাধীনতার এত বছর পরেও তার ভাগ্যে জোটেনি কোন স্বীকৃতি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ৩০ বছর পর্যন্ত হিম্মেজের পিতা মাতা বেঁচে ছিলেন। পুত্র শোকে হতাশা ও দরিদ্র্যতার সাথে যুদ্ধ করে মৃত্যুবরণ করেন তারা।

দোহার উপজেলার বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা মো. সোরহাব উদ্দিন বলেন, ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে, রাইপাড়া ইউনিয়নের নাগেরকান্দা বাঁশতলা এলাকায় পাকবাহিনীকে আমরা ঘেরাও করি। কিন্তু আমারা যুদ্ধের কৌশলগত কারণে এবং হালকা অস্ত্র সাথে থাকায় যুদ্ধ এড়িয়ে যাই।

পরবর্তী সেপ্টেম্বর মাসের ১৩ তারিখে পাকবাহিনীকে পরাস্ত করার কৌশল হিসেবে বাঁশতলা এলাকায়

ট্যাংক-বিধ্বংসী মাইন বোমা(এম.এম-১৬) পুঁতে রাখি। কিন্তু দরিদ্র হিম্মেজ মাছ ধরার জন্য সেই স্থান দিয়ে যাচ্ছিলো। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ট্যাংক-বিধ্বংসী মাইন বোমার বিস্ফোরণে নিহত হয় হিম্মেজ। দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গকারী হিম্মেজ কোন সরকারি স্বীকৃতি আজও পায়নি। তার পিতামাতা চরম দারিদ্র্যতার সাথে যুদ্ধ করে মারা যায়।

হিম্মেজ খাঁনের বড় ভাই এর ছেলে টুটুল বলেন, আমার কাকা ট্যাংক-বিধ্বংসী মাইন বোমার বিস্ফোরণে নিহত হয়। আমার বাবার মুখে শুনেছি। তার একটি সরকারি স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিলো অনেক আগেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমাদের পরিবারের সকল সদস্যদের দাবি, দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গকারী হিম্মেজ কাকা যেন শহীদ হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি পায়।

দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা আক্তার রিবা বলেন, ট্যাংক-বিধ্বংসী মাইন বোমার বিস্ফোরণে হিম্মেজের মৃত্যুর বিষয়টি আমার জানা ছিলো না। তার পরিবারকে সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসবি