ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

আজ আদমদীঘি হানাদার মুক্ত দিবস

  নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:০৩

আজ আদমদীঘি হানাদার মুক্ত দিবস

নওগাঁ জেলার পার্শ্ববর্তী ও বগুড়া জেলার শেষ সীমানা আদমদীঘি উপজেলা। আজ ১২ডিসেম্বর বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা হানাদার মুক্ত দিবস। মহান মুক্তিযুদ্ধে দীর্ঘ ৯মাস মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা আক্রমণে ক্ষত বিক্ষত পাক হানাদার বাহিনী পালিয়ে যাওয়ায় দেশ স্বাধীনের মাত্র ৪দিন আগে ১৯৭১ সালে এই দিনে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আদমদীঘিকে শত্রু মুক্ত করেন।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সূত্রে জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলা ছিল পাক হানাদারের শক্ত ঘাঁটি। পাক সেনা, মিলিশিয়া বাহিনী এবং এ দেশীয় দোসর রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মিলিত ভাবে মার্চ মাসের শুরু থেকেই গ্রাম থেকে গ্রামান্তর অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ নির্বিচার হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতেই কমান্ডার ফললুল হক, এল কে আবুল, মুনছুর রহমান, আজিজার রহমান, নান্টু, নজরুল ইসলাম, সেনা সদস্য আমজাদ হোসেন, আব্দুল হাকিমসহ অন্যান্যরা মুক্তি যোদ্ধাদের নিয়ে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তায় খন্ড খন্ড যুদ্ধ চালান। গেরিলা হামলায় পাক সেনা ও রাজাকারাও তটস্থ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে থানায় আক্রমণ করে বেশ কিছু সংখ্যক গোলা বারুদ আয়ত্ব করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা। পাক হানাদারের সাথে কুসুম্বী, রেল স্টেশনসহ কয়েকটি গুরুত্ব পূর্ণ স্থানে দফায় দফায় সম্মুখ যুদ্ধও বাঁধে। এতে বেশ কিছু সেনা নিহত হয়।

ঐতিহাসিক রক্তদহ বিল ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নিরাপদ স্থান। মুক্তিযোদ্ধারা গেরিলা আক্রমন শেষে ঐ বিল পেরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেত। মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমনে ক্ষিপ্ত হয়ে পাক বাহিনীরা খুঁজতে থাকে মুক্তিযোদ্ধাদের। এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল, আলতাফ হোসেন বিশ্রাম নেয়ার সময় ছোট আখিড়া গ্রামের নিকট জমির আইল থেকে জসিম উদ্দীন নামের এক দালাল খবর দিয়ে তাদের ধরিয়ে দেয় পাক হানাদারের হাতে। এদের উপর নির্মম ভাবে নির্যাতন করাকালে চাঁপাপুর এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল হক টুলু ও আব্দুল ছাত্তারকে ধরে নিয়ে আসা হয় থানায়। হানাদার বাহিনী এই চার বীর মুক্তিযোদ্ধাকে আটক করে চালায় প্রকাশ্যে নির্মন নির্যাতন। এর পর দেশ স্বাধীনের ৬ দিন পূর্বে আদমদীঘি মহাশ্বশ্মান ঘাটিতে দিনের বেলায় তাদের প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের চারিদিকের আক্রমনে ৫ডিসেম্বর ভোর হতে আদমদীঘি সদর থেকে পাক হানাদাররা রেল লাইনের পাশ দিয়ে হেঁটে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। অবশেষে কোন প্রকার সংঘাত ছাড়াই বিজয়ের পতাকা উড়িয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা আদমদীঘিকে হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন। এ উপজেলায় ২৩জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এ দিনটিকে ঘিরে বিভিন্ন রাজনৈতিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ক্লাব সংগঠনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসবি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত