ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

ঘরে দুই স্ত্রী রেখে পরকীয়া, কারাগারে পুলিশ কর্মকর্তা

  ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:৫৩

ঘরে দুই স্ত্রী রেখে পরকীয়া, কারাগারে পুলিশ কর্মকর্তা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দ্বিতীয় স্ত্রীর মামলায় মো. সালাউদ্দিন নামে পুলিশের এক পরিদর্শককে (ইন্সপেক্টর) কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি আদালত কারাগারে পাঠিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তাকে। অভিযুক্ত সালাউদ্দিন কুমিল্লা কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ছিলেন বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, মামলার বাদী ওই পুলিশ কর্মকর্তার দ্বিতীয় স্ত্রী তাহমিনা আক্তার পান্না। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি। সালাউদ্দিনের প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহার সুইটি।

তাহমিনা আক্তার পান্না ১ ডিসেম্বর বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের পশ্চিম মেড্ডা এলাকার মৃত.শরাফ উদ্দিনের মেয়ে তাহমিনা আক্তার পান্নার সঙ্গে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর সামসুল আলমের ছেলে সালাউদ্দিনের দ্বিতীয় বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ১৫ লাখ টাকা দেনমোহর নির্ধারণ করা হয়। তাদের ঘরে তিন বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

গত ১৫ নভেম্বর সালাউদ্দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এসে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সামনে পুলিশের চাকরিতে পদোন্নতির কথা বলে ২০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। কিন্তু টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে স্ত্রী পান্নাকে চড়-থাপ্পড়, কিল, ঘুষিসহ এলোপাতাড়ি মারধর করেন সালাউদ্দিন। পরে স্ত্রী ও সন্তানকে ফেলে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।

এ অবস্থায় আদালতের দ্বারস্থ হন স্ত্রী। তাহমিনা আক্তার পান্নার আইনজীবী তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত বলেন, বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে আসামি সালাউদ্দিনকে আজকে (১৫ ডিসেম্বর) আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারি করেন। আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।

এ ছাড়াও সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে কুমিল্লায় আরো দুটি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। তার প্রথম স্ত্রীও মামলা করেছেন তার বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, সালাউদ্দিনের প্রথম স্ত্রী শামসুন্নাহার সুইটির ঘরে ৯ বছরের একটি ছেলে ও ৫ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। সুইটির সঙ্গে সালাউদ্দিনের বিয়ে হয় ২০০৬ সালে।

এদিকে সালাউদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী পান্না বলেন, আজমীরি নামে এক নারীর সঙ্গে ৩ বছর ধরে পরকীয়ায় লিপ্ত সালাউদ্দিন। পরকীয়া শুরুর পর থেকে তার প্রতি আগ্রহ কমে যায় সালাউদ্দিনের। ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসা বা তার সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন ওই সময় থেকে। কিন্তু সেটি তিনি বুঝতে পারেন প্রথম স্ত্রী ডিআইজি’র কাছে অভিযোগ দেয়ার পর। তাতে সালাউদ্দিনের পরকীয়া প্রেমিকা আজমীরির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা ছাড়াও সালাউদ্দিন আমাকে বিয়ে করেছে সেটিও উল্লেখ করা হয়। ডিআইজি স্যার কুমিল্লার পুলিশ সুপারকে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিলে সেখান থেকে আমাকে নোটিশ পাঠানো হয়। নভেম্বরের ১১ তারিখ কুমিল্লায় গিয়ে আমি প্রথম শুনতে পারি সালাউদ্দিন আজমীরি নামে এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া করছে। যার স্বামীর নাম আফজল। আজমীরির বাড়ি খুলনা হলেও সে কুমিল্লায় নানার বাড়ি থাকে। এটি শোনার পর আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে।

তিনি বলেন, এই আজমীরি সালাউদ্দিনের প্রথম স্ত্রীকে নিয়মিত থ্রেট দিতো। বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্যে চাপ দিতো। বলতো সেই সালাউদ্দিনের স্ত্রী। নানাভাবে টর্চার করতো প্রথম স্ত্রীকে। সালাউদ্দিনও ঘর ত্যাগী হন। ৫ মাস বড় স্ত্রীকে ছেড়ে বাসার বাইরে ছিলেন। এরপর তিনি বাধ্য হন ডিআইজি’র কাছে অভিযোগ দিতে।

পান্না জানান, প্রথম স্ত্রী এবং সে ছাড়াও পুলিশের নোটিশ পেয়ে ওইদিন আজমীরিও হাজির হয়েছিলো কুমিল্লার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে। সালাউদ্দিনও ছিলেন সেখানে। পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের অভিযোগ শুনেন। এরপর আরো কয়েক দফা এনিয়ে কুমিল্লার পুলিশ সুপার কার্যালয়ে বসেন তারা।

পরবর্তীতে দুই স্ত্রীই সালাউদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করেন।

গত ৩০ নভেম্বর তার প্রথম স্ত্রী শামসুন নাহার সুইটি কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে যৌতুক ও নির্যাতনের আরেকটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি আদালত তদন্তের নির্দেশ দেয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত