ঢাকা, রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

আল্লামা শফীর উত্তরসূরি নির্ধারণে হেফাজত

  চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৫ নভেম্বর ২০২০, ১৩:৩৫  
আপডেট :
 ১৫ নভেম্বর ২০২০, ১৫:০৮

আল্লামা শফীর উত্তরসূরি নির্ধারণে হেফাজত

আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যুতে শূন্য হওয়া পদ পূরণে প্রতিনিধি সম্মেলন করছে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক আলোচিত সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। রোববার সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় এই সম্মেলন শুরু হয়েছে। সম্মেলনে সারাদেশ থেকে আলেমদের পাঁচ শতাধিক প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন।

প্রতিনিধি সম্মেলনে সভাপতিত্ব করছেন সংগঠনটির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা মুহিববুল্লাহ বাবুনগরী। মহাসচিব জুনাইদ বাবুনগরীসহ শীর্ষ আলেমরা সম্মেলনে উপস্থিত আছেন।

সম্মেলন ঘিরে হেফাজতে ইসলামে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। ৫০০ প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানী এবং কমিটির নায়েবে আমিরসহ বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের অনুসারীদের সম্মেলনে ডাকা হয়নি। আল্লামা শফীপন্থীরা এই সম্মেলনকে অবৈধ বলে দাবি করেছেন।

আহমদ শফীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত হেফাজত নেতা মাঈনউদ্দিন রুহী দাবি করেছেন, মুহিববুল্লাহ বাবুনগরী হেফাজতে ইসলাম থেকে অনেক আগে পদত্যাগ করেছেন এবং তিনি কোনো সম্মেলন আহ্বান করতে পারেন না।

তবে বাবুনগরী বলয়ের নেতা হিসেবে পরিচিত হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেছেন, তারা বৈধভাবেই সম্মেলন ডেকে নেতৃত্ব নির্বাচন করতে যাচ্ছেন। এখানে কিছু লোকের বিরোধিতার কারণে তাদের সংগঠনে ভাঙনের কোনো বিষয় নেই বলে দাবি তার।

হেফাজতের নতুন আমির পদে আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরীর নাম জোরেশোরে প্রচারিত হচ্ছে। আর মহাসচিব পদে আলোচিত হচ্ছে বর্তমান নায়েবে আমির এবং ২০ দলীয় জোটভুক্ত জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমীর নাম। এছাড়াও আমির পদে মাওলানা মুহিববুল্লাহ বাবুনগরী এবং মহাসচিব পদে মাওলানা মামুনুল হকের নামও আলোচিত হচ্ছে।

হেফাজতে ইসলাম ২০১০ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করলেও ব্যাপক আলোচনায় আসে ২০১৩ সালে। কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগে গড়ে ওঠা গণজাগরণ মঞ্চ থেকে মহানবী ও ইসলামের বিভিন্ন অবমাননার অভিযোগ তুলে ওই বছরের ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করে হেফাজতে ইসলাম। তবে এর এক মাস পর ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে শাপলা চত্বরে বিপর্যয়ের পর হেফাজতে ইসলাম অনেকটা কোণঠাসা হয়ে যায়। যদিও পরবর্তী সময়ে সরকারের সঙ্গে তাদের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তী সময়ে বড় কোনো কর্মসূচি নিয়ে হেফাজতকে মাঠে নামতে দেখা যায়নি।

আল্লামা শফী যতদিন জীবিত ছিলেন সরকারের সঙ্গে তার ও হেফাজতে ইসলামের সুসম্পর্ক ছিল। অভিযোগ রয়েছে, আল্লামা শফীর নাম ব্যবহার করে তার ছেলে আনাস মাদানীসহ একটি চক্র সরকারের কাছ থেকে ব্যাপক সুবিধা গ্রহণ করেছে। এজন্য ক্ষুব্ধ অংশটি হাটহাজারী মাদ্রাসায় ব্যাপক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আল্লামা শফীকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করে। স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয় আনাস মাদানীকে।

এরপর থেকে হাটহাজারী নিয়ন্ত্রণে রয়েছে আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলয়ের। এবার তারা হেফাজতে ইসলামেও নিজেদের একচ্ছত্র প্রভাব প্রতিষ্ঠা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিরোধী পক্ষের অভিযোগ, বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে এই বলয়ের সম্পর্ক রয়েছে। যদিও তাদের দাবি, হেফাজতে ইসলাম কারও বলয়ের নয়, ইসলামবিরোধী যেকোনো কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত