ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫ মিনিট আগে
শিরোনাম

ইউনিফর্ম তুলে ছাত্রীর স্পর্শকাতর জায়গায় শিক্ষকের বেত্রাঘাত

  রাঙামাটি প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০১৯, ১১:৫৫

ছাত্রীর স্পর্শকাতর জায়গায় শিক্ষকের বেত্রাঘাত

ক্লাসে পড়া না পারায় নিজ হাতে ছাত্রীর ইউনিফর্ম তুলে স্পর্শকাতর জায়গায় বেত্রাঘাত করেছেন এক শিক্ষক। পরে লজ্জায় অপমানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ওই ছাত্রী। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে রাঙামাটি মডেল কেজি স্কুল অ্যান্ড কলেজে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, গত মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) ক্লাসে পড়া দিতে ভুল করেছিল ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। সেদিন অনেকেই পড়া দিয়ে ব্যর্থ হয়েছিল। শিক্ষক আতাউর রহমান মোটা বেত এনে সবাইকে পিটিয়েছিলেন। ভুক্তভোগী মেয়েটির ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন আরও নির্দয়। আতাউর ওই ছাত্রীর ইউনিফর্ম নিজ হাতে তুলে স্পর্শকাতর জায়গায় বেত্রাঘাত করেছিলেন।

ছাত্রীরা জানায়, মাওলানা আতাউরের আচরণ আগে থেকেই ছিল অশালীন। প্রায়ই তিনি ওই ছাত্রীকে বলতেন ‘এমন জায়গায় মারবো কাউকে দেখাতে পারবি না।’

৩০ জুলাইয়ের ঘটনার পর লজ্জায় অপমানে বাসায় ফিরে মাকে ঘটনাটা জানিয়েছিল। মা গিয়ে স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক জিল্লুর রহমানকে ঘটনাটি জানান। কিন্তু ফল হয় উল্টো। সহকারী প্রধান শিক্ষক মেয়েটির ঘাড়েই দোষ চাপান। তার সঙ্গে যোগ দেন স্কুলের শিক্ষিকা ফারজিয়া বেগম ও স্কুলের আয়া। এ দুজন মা-মেয়ের সামনেই অশ্লীল সব কথাবার্তা বলতে লাগলেন। এ দৃশ্য সহ্য করতে পারেনি অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ওই ছাত্রী। রাগে-ক্ষোভে স্কুলের ছাদে গিয়ে সেখান থেকে লাফিয়ে পড়ে সে। এখন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে শয্যাসায়ী ছাত্রীটি।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) ইংরেজির শিক্ষক আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হলেও এখনো গ্রেপ্তার হননি তিনি।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর পরিবার জানাচ্ছে, মামলা নিতে পুলিশ শুরুতে গড়িমসি করেছিল। পরে ঢাকা থেকে কয়েকজন মানবাধিকার কর্মীর প্রচেষ্টায় পুলিশ মামলা নিলেও যৌন হয়রানির ঘটনা ধামাচাপা দিতে মামুলি ধারায় মামলাটি লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।

রাঙামাটি জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি মডেল কেজি স্কুল অ্যান্ড কলেজের কোনো নিবন্ধন নেই। এর ওপর আবার যুক্ত করা হয়েছে কলেজের নাম। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক মাওলানা এবিএম তোফায়েল উদ্দিন রাঙামাটি জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। তিনি জামায়াতের শ্রমিক সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি। ওই স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রায় সবাই জামায়াত-শিবির সংশ্লিষ্ট বলে জানা গেছে।

ছাত্রী হেনস্থার ঘটনাটিকে ধামাচাপা দিতে গতকাল সোমবার লোক ভাড়া করে এনে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করেন অভিযুক্ত শিক্ষক আতাউর রহমান। জানা গেছে, জামায়াতঘনিষ্ঠ মাদ্রাসা থেকে চাপ দিয়ে কিছু শিক্ষার্থীকেও ওই মানববন্ধনে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়েছে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত