ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রায় ৩ লাখ টাকার কালভার্ট ১৩ মাসেই নষ্ট

  শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২০, ১১:২৬

প্রায় ৩ লাখ টাকার কালভার্ট ১৩ মাসেই নষ্ট
২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত বক্স কালভার্টটি বছর না যেতেই নষ্ট

‘আসলে এ কাজগুলো আমরা চেয়ারম্যান-মেম্বারদের সঙ্গে মিউচ্যুয়াল করেই করে থাকি। তবে ভাইজান আমি একটু দলিলের কাজে ব্যস্ত আছি। এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে পরে কথা বলবো’।

বাংলাদেশ জার্নালের প্রতিনিধির মুঠোফোনে এ কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতীর শাহজাহান কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী শাহজাহান সরকার।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মাঝাপাড়া এলাকার খালের ওপর ২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত বক্স কালভার্টটি ১৩ মাস পরেই ভেঙে পড়ে। নির্মাণ কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের কারণেই বক্স কালভার্টটি ভেঙে গেছে। অনিয়মের তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেরও দাবি জানিয়েছেন তারা। একইসঙ্গে অবিলম্বে পুনরায় বক্স কালভার্টটি নির্মাণ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণও করেছেন ভুক্তভোগীরা।

অন্যদিকে এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল মাহমুদ।

ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদ ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে লোকাল গর্ভন্যান্স সাপোর্ট প্রজেক্ট-৩ (এলজিএসপি’র) আওতায় ধানশাইল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে মাঝাপাড়া এলাকার আব্দুল হামিদের বাড়ির সামনের খালের ওপর ২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি বক্স কালভার্ট নির্মাণ করা হয়। কাজটি করে স্থানীয় শাহজাহান কনস্ট্রাকশন নামের প্রতিষ্ঠান। কাজ শেষে ২০১৯ সালের ৩০ মে ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিলের টাকা তুলে নেন। বক্স কালভার্টটি নির্মাণ শেষে এর ওপর দিয়ে জনসাধারণ চলাচল শুরু করার ১৩ মাস পরে চলতি বছরের জুন মাসের বন্যায় ভেঙ্গে যায়।

স্থানীয় মোশারফ ও আজিলা বেগমসহ আরো অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, বক্স কালভার্টটি নির্মাণে পরিমাণের চেয়ে কম রড ও সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া কালভার্টের অন্যান্য কাজেও নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। যে কারণে বছর না যেতেই এটি ভেঙে পড়ে। এখন যাতায়াতে তাদের মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।

বক্স কালভার্টটি নির্মাণে এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী মিন্টু মিয়া (বর্তমানে টাঙ্গাইলে কর্মরত) বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘এলজিএসপি’র কাজে আমাদের দেখভালের দায়িত্ব থাকে না। আমরা শুধু প্রাক্কলন তৈরি করে দেই। আমি যে প্রাক্কলন তৈরি করে দিয়েছিলাম, ওইভাবে নির্মাণ করা হলে এতো দ্রুত সময়ে বক্স কালভার্টটি ভেঙে যাওয়ার কথা না। আমার মনে হয় প্রাক্কলন অনুযায়ী চেয়ারম্যান-মেম্বার কাজ করেনি।’

স্থানীয় ইউপি সদস্য মধু মিয়া বলেন, ‘বক্স কালভার্টটি অনেক আগে নির্মাণ করা হয়েছে। বন্যার পানির চাপে তা ভেঙে গেছে।’

ধানশাইল ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বক্স কালভার্টটি ভেঙে গেছে, এটি জানতাম না। আপনার মাধ্যমেই জানলাম।’

নিম্নমানের কাজ করা হয়নি দাবি করে চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘প্রাক্কলন অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে। এটি বন্যা কবলিত এলাকা হওয়ায় পানির চাপে তা ভেঙে গেছে হয়তো।’

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত