ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৭ মিনিট আগে
শিরোনাম

হঠাৎ গৃহকর্মীর বাড়িতে কেন মাশরাফি?

  শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০১৯, ০৯:৩১

হঠাৎ গৃহকর্মীর বাড়িতে কেন মাশরাফি?

গতকাল শুক্রবার হঠাৎ করে গৃহপরিচারিকা টুনির বাড়িতে হাজির হন বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী ও সন্তানরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর নালিতাবাড়ী উপজেলার যোগানিয়া ইউনিয়নের যোগানিয়া কাচারি মসজিদ সংলগ্ন টুনির বাবা আক্কাছ আলীর বাড়িতে বেড়াতে যান ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’।

এদিকে মাশরাফির আগমনে এলাকায় হুলস্থুল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিষয়টি প্রথমদিকে গোপন থাকলেও নিভৃত পল্লীতে দু’টি মাইক্রোবাসে ঢাকা থেকে মাশরাফির আসার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। ফলে লোকজনের ভিড় সামলাতে মাত্র আড়াই ঘণ্টা অবস্থানের পর শেরপুর ত্যাগ করতে হয় তাকে।

টুনির পরিবার জানিয়েছে, এবারের কোরবানির ঈদ মাশরাফির বাসায় কাটায় টুনি। ঈদের পরে সে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার ইছা পোষণ করে। সেই ইচ্ছা পূরণে কেবল টুনিকে পাঠানো নয়, নিজের গোটা পরিবারের লোকজন নিয়েই টুনিদের গ্রামের বাড়িতে হঠাৎ করেই চলে আসেন মাশরাফি।

জানা গেছে, রাজধানীর মিরপুর এলাকায় একটি হাউজিং অ্যাপার্টমেন্টে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে চাকরির সময় মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গে পরিচয় হয় আক্কাছ আলীর। ওই অ্যাপার্টমেন্টের একটি ফ্ল্যাটে থাকেন মাশরাফি ও তার পরিবার। ওই পরিচয় সূত্রে প্রায় ৮ বছর আগে হতদরিদ্র আক্কাছ আলীর মেয়ে টুনিকে তার বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজে দেন তিনি। বয়স আর শারীরিক অসুস্থতার কারণে আক্কাছ আলী সেখান থেকে বিদায় নিলেও মাশরাফির বাসাতেই রয়ে গেছেন টুনি। দীর্ঘ ৮ বছরে মাশরাফির স্ত্রী ও দুই সন্তানের সঙ্গে টুনির গড়ে উঠেছে নিবিড় সম্পর্ক। তারা এখন টুনিকে তাদেরই একজন মনে করেন।

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, মাশরাফির আগমনের বিষয়টি টুনির বাবা-মা জানলেও তারা কাউকেই কিছু জানাননি। কিন্তু যোগানিয়া কাচারি মসজিদ সংলগ্ন টুনিদের বাড়িতে পৌঁছানোর পর মাশরাফি ঘুরে-ফিরে চারপাশ এক পলক দেখে নাস্তা পর্ব শুরু করতেই এলাকায় বিষয়টি জানাজানি হয়। ফলে ভক্ত-সমর্থক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ মুহূর্তেই ওই বাড়িতে ভিড় করতে থাকে। তারা মাশরাফির সঙ্গে সেলফি তুলতে ও তার অটোগ্রাফ নিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

খবর পেয়ে মাশরাফিকে শুভেচ্ছা জানাতে সেখানে ছুটে যান নালিতাবাড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান মোকছেদুর রহমান লেবু। তিনি জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফির আচরণ ও ব্যবহারে মুগ্ধতা প্রকাশ করে বলেন, ‘ভাবা যায়-বাসার কাজের মেয়ে এবং সাবেক নিরাপত্তা কর্মীকে খুশি করতে, তাদের মুখে হাসি ফোঁটাতে তার মতো এমন একজন সেলিব্রেটি এমন অজপাড়াগাঁয়ে সস্ত্রীক এসেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাসার নিরাপত্তা কর্মীর কাজ থেকে টুনির বাবা আক্কাছ আলী বিদায় নিলেও তার পরিবারের প্রতি মাশরাফির রয়েছে দারুণ মমতা। তিনি আক্কাছ আলীকে চিকিৎসা সহায়তা দিয়েছেন, তাদের মাথা গোজার জন্য গ্রামের বাড়িতে একটি সেমিপাকা ঘর বানিয়ে দিয়েছেন। সর্বোপরি তিনি টুনির ভবিষ্যতের দায়িত্ব নিয়েছেন। এখানে না এলে বিষয়টি আমরা জানতেই পারতাম না। সত্যিই ‘ম্যাস দ্যা রিয়েল ক্যাপ্টেন, স্যালুট হিম।’

এদিকে, জনতার ভিড় এবং উৎকট গরমের কারণে দ্রুতই পরিবারের সবাইকে নিয়ে গাড়িতে উঠতে হয় মাশরাফিকে। ফলে আগমনের প্রায় আড়াই ঘণ্টার মাথায়ই বিদায় নেন ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’ খ্যাত মাশরাফি বিন মুর্তজা।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত