ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

স্কুলের ল্যাপটপ-প্রজেক্টর সভাপতি-শিক্ষকের বাড়িতে

  শেরপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০১৯, ১১:০৬

স্কুলের ল্যাপটপ-প্রজেক্টর সভাপতি-শিক্ষকের বাড়িতে
ফাইল ফটো

শেরপুরের শ্রীবরদীতে কাজে আসছে না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ। বেশির ভাগ ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর সভাপতি ও শিক্ষকরা বাড়িতে নিয়ে রেখেছেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসের তদারকির অভাবে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে শিক্ষা লাভ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা।

সম্প্রতি কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন করে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সঙ্গে কথা বলে উঠে এসেছে এমন তথ্য।

উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৬টি। এর মধ্যে পিইডি-৩ ও ৪ প্রকল্পের ১৪৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেওয়া হয়েছে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর, মডেম-সিমসহ নানা সরঞ্জাম। এসব শিক্ষাসামগ্রী অনেক শিক্ষক রেখেছেন নিজের বাড়িতে। কেউ রেখেছেন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির বাড়িতে।

সম্প্রতি শালমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শংকরঘোষ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছনকান্দা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পূর্ব জলংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কোনোটিতে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর নেই।

শালমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, তিনি যোগদান করে ল্যাপটপ বা প্রজেক্টর পাননি। যোগদানের আগে সহকারী শিক্ষক ইয়াকুব আলী প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। তার কাছেই আছে। প্রজেক্টর রেখেছেন সভাপতি আব্দুল জুব্বারের বাড়িতে। তিনি বলেন, ‘এখানে প্রজেক্টরের মাধ্যমে কোনো ক্লাস নেওয়া হয়নি।’

এ সময় সভাপতি আব্দুল জুব্বারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রজেক্টর তার ঘরের আড়ার ওপর। অন্য সামগ্রী বাক্সবন্দি।

ছনকান্দা পশ্চিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও একই অবস্থা। ল্যাপটপ বন্ধ। প্রজেক্টর খোলা হয়নি। এখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষ, বিদ্যুৎসহ রয়েছে সব সুবিধা। এর পরও হচ্ছে না মাল্টিমিডিয়া পাঠদান।

এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক রুবিনা পন্নি বলেন, ‘আমাদের গাফিলতিতে পাঠদান হচ্ছে না। এখন থেকে মাল্টিমিডিয়ায় পাঠদানের চেষ্টা করব।’

পোড়াগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোকনআরা বেগম রাব্বী বলেন, ‘২০১৬ সালের ৭ নভেম্বর প্রজেক্টর এবং ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর ল্যাপটপ পেয়েছি। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক না থাকায় মাল্টিমিডিয়ায় পাঠদান করা সম্ভব হয়নি। এমন চিত্র প্রায় সব বিদ্যালয়েরই।’

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমুশ শিহার জানান, সব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক হয়েছে। বর্তমানে ল্যাপটপের মাধ্যমে প্রজেক্টর দিয়ে পাঠদান হচ্ছে কি না পরিদর্শন করা হচ্ছে। যদি কোনো বিদ্যালয়ে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস না নেওয়া হয় তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত ২২ সেপ্টেম্বর আইসিটি উন্নয়নের লক্ষ্যে ল্যাপটপসহ মাল্টিমিডিয়াপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ আইসিটি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নিয়ে উদ্বুদ্ধকরণ সভা হয়। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে আয়শা আইন উদ্দিন মহিলা কলেজের মাল্টিমিডিয়া কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরদৌসী বেগম।

তিনি ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর বাক্সবন্দির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এখন থেকে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টরের মাধ্যমে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস পরিচালনা করতে হবে। যদি কেউ মাল্টিমিডিয়ার ক্লাস নিতে গাফিলতি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত