ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

রাজবাড়ী বিআরটিএ’তে বাড়তি চাপ

  রাজবাড়ী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০১৯, ১৮:১১

রাজবাড়ী বিআরটিএ’তে বাড়তি চাপ
ফাইল ছবি

নতুন সড়ক পরিবহন আইন চালুর সাথে সাথে রাজবাড়ী বিআরটিএ অফিসে বেড়েছে লাইসেন্সধারীদের ভিড়। বর্তমানে অন্য সময়ের তুলনায় এখন প্রায় তিনগুন আবেদন জমা পড়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজবাড়ী বিআরটিএ অফিসের সামনে বহু লাইসেন্সধারীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদিসহ ঘুরতে দেখা যায়।

এদিকে বিআরটিএ অফিসে লাইসেন্সধারীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। টাকা না দিলে নানা অজুহাতে হয়রানি হচ্ছে ভুক্তভোগীরা। বিআরটিএ অফিস সূত্রে জানা গেছে, মোটরসাইকেলের লার্নারের জন্য ৩৪৫ টাকা ও মূল ফি ২৫৪২ টাকা জমা দিতে হয়। অথচ কোনো কোনো লাইসেন্সধারীর কাছ থেকে ৭ হাজার টাকা থেকে ৮ হাজার টাকা নেওয়া হয়। প্রতিদিন লাইসেন্সের জন্য ৬ শ থেকে ৭ শ আবেদন জমা পড়ছে। এতে ভোগন্তিতে পরছেন লাইসেন্স গ্রাহকরা। একদিকে ভোগান্তি অন্যদিকে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়ায় গ্রাহকরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।

লাইসেন্সধারীরা ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি ফি জমা দিয়ে সেই রশিদ ও লাইসেন্সের জন্য গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ভোটার আইডি কার্ড, ছবি বিআরটিএ অফিসে জমা দিয়ে লার্নার গ্রহণ করবেন। কিন্তু বিআরটিএ অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা লাইসন্সেধারীদের কাছ থেকে অফিস খরচের নামে বিভিন্ন অংকে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছেন। টাকা না দিলে নানা অজুহাতে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত। যে কারণে গ্রাহকরা অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে বাধ্য হচ্ছেন। এছাড়া অনেকে আবার বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে ৭ হাজার টাকা থেকে ৮ হাজার টাকায় চুক্তি করেন লাইসেন্স বানানোর জন্য। চুক্তি অনুযায়ী সব কাজ অফিসের মাধ্যমে হয়। টাকা দেওয়ার পর শুধু পরীক্ষার দিন হাজিরা দিতে হয় লাইসেন্সধারীকে। লাইসেন্স পেতে পরীক্ষায় কিছু না লিখলেও পাশ করানো হয় অতিরিক্ত টাকা দেওয়া ব্যক্তির লাইসেন্সের ক্ষেত্রে। এছাড়া অনেকে আবার বিভিন্ন শো-রুমের মাধ্যমেও চুক্তি করে লাইসেন্স করছেন।

লাইসেন্স করতে আসা আনোয়ার বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, লাইসেন্সের জন্য বিআরটিএ অফিসে এসেছেন কিন্তু অনেক ভিড়। টাকা ছাড়া কাজ হয় এখানে। হাজার হাজার টাকা চুক্তি করে বিআরটিএ অফিসের কর্মকর্তারা লাইসেন্স করে দিচ্ছেন। যারা চুক্তি করছেন না, তাদের নানা ভাবে হয়রানির স্বীকার হতে হচ্ছে।

আলিফ হোসেন হৃদয় জানান, তিনি হিরো মোটরস শো-রুমের মাধ্যমে ৮ হাজার টাকা চুক্তিতে লাইসেন্স করেছেন। শুধু তিনি না তার মতো অনেকে এভাবে লাইসেন্স করছেন। বৈধভাবে লাইসেন্স করতে হলে প্রথমে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদিসহ ব্যাংকে টাকা জমা দিতে হয়। তারপরও অফিস থেকে দেওয়া হয় লার্নার কার্ড। এরপর পরীক্ষা নেওয়া হয়। সকল ধরনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণের পর দেওয়া হয় লাইসেন্স। কিন্তু বিআরটিএ অফিসে যাওয়া ছাড়াই সবকিছু হয়ে গেছে তার। পরীক্ষায় ফেল করার পরও তিনি লাইসেন্সের কাগজ হাতে পেয়েছেন। আসলে এটা তো বৈধ পন্থা না। এতে সরকার তার রাজস্ব হারাচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, তিনি ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে রশিদ দিতে এসেছেন। রশিদ জমার পর অফিস খরচের জন্য তার কাছে ২০০ টাকা চাওয়া হয়েছে। একপর্যায় বাধ্য হয়ে তিনি ১০০ টাকা দিয়েছেন।

রাজবাড়ী বিআরটিএ অফিসের মোটর যান পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বেশি টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, বর্তমানে লাইসেন্সধারীদের অনেক চাপ রয়েছে। এ মাসের শুরু থেকে এ চাপ বেড়েছে। আগে যেখানে প্রতিদিন ২ থেকে আড়াই শ আবেদন জমা পড়তো এখন সেখানে ৬ থেকে ৭ শ আবেদন পড়েছে। অফিসের লোকবল কম থাকায় কাজে একটু সমস্যা হলেও তাদের সাধ্যমত সেবা দেবার চেষ্টা করছেন। লাইসেন্সধারীরা ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে রশিদ নিয়ে তাদের অফিসে জমা দিচ্ছেন। তখন তারা লার্নার দিয়ে দিচ্ছেন এবং আগামী তিন মাসের মধ্যে পরীক্ষা আবেদনকারীদের পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষায় উর্ত্তিণ হবার পর ফিঙ্গারসহ যাবতীয় কাজ শেষে লাইসেন্স দেওয়া হয়। তবে কোন ধরনের চুক্তি করা হয় না লাইসেন্সধারী বা অন্য কারো সাথে। তারা বৈধভাবেই লাইসেন্স করছেন বলে জানান।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত