ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

চাকরির লোভ দেখিয়ে কোটি টাকার প্রতারণা!

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২১ জানুয়ারি ২০২১, ১৭:৫০

চাকরির লোভ দেখিয়ে কোটি টাকার প্রতারণা!
সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার প্রতারকরা। ছবি প্রতিনিধি

শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মাণাধীন টার্মিনাল-৩ এ চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দেখিয়ে ১৫০ জনের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে দর্পণ গ্রুপ নামের একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে চক্রের মূলহোতাসহ ওই প্রতিষ্ঠানের তিন প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- দর্পণ গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম সোহাগ (৫২), ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেনা জহির (৫০) ও ম্যানেজার মিন্টল রায় ওরফে অপূর্ব (২৮)।

শেখ ওমর ফারুক বলেন, ভুয়া এই প্রতিষ্ঠানটি স্যামসাং গ্রুপের নামে একটি ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার প্রস্তুত করে। পরে তাদের অফিসের সামনে ডিজিটাল ব্যানারে ‘হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ এ দক্ষ ও অদক্ষ লেবার ও সুপারভাইজার নিয়োগ দেয়া হবে’ এমন বিজ্ঞাপন ঝুলিয়ে রাখে। চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেখে চাকরিপ্রত্যাশী অনেকেই তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে।

ভুক্তভোগী চাঁদপুরের বাসিন্দা সুজন বলেন, যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে সরকার মার্কেটের তিন তলায় ডিজিটাল ব্যানার লাগানো শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া ছিল। আগ্রহী হয়ে কথা বলতে যান তিনি। দর্পণ নামে ওই অফিস থেকে জানানো হয়, সুপারভাইজার পদে এক লাখ, অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা দিলেই চাকরি হবে। আগ্রহ প্রকাশ করলে দুদিন পর ভাইবা নেয়, নভেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে তিন জনকে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে হাতে নিয়োগপত্র ধরিয়ে দিয়ে নেয়া হয় আড়াই লাখ টাকা। এরপর আর চাকরি হয় না। নভেম্বর মাস পেরিয়ে গেলেও সেই একই অবস্থা।

সিআইডির কর্মকর্তা শেখ ওমর ফারুক বলেন, লেবার হিসেবে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা এবং সুপারভাইজার পদে এক লাখ টাকা দিতে হবে এমন শর্ত জুড়ে দেয় প্রতারকরা। শ্রমিক ও সুপারভাইজার পদে চাকরি পাওয়ার জন্য ১০০ থেকে ১৫০ চাকরিপ্রত্যাশী দর্পণ গ্রুপ অফ কোম্পানির চেয়ারম্যান এবং এমডির কাছে টাকা দিলে তাদের ভুয়া নিয়োগপত্র দেয়া হয়। তবে নিয়োগপত্রে যোগদানের নির্দিষ্ট তারিখে কোনও শ্রমিক ও সুপারভাইজারকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নির্মাণাধীন টার্মিনাল-৩ এ যোগদান করায়নি প্রতারকরা।

সিআইডির এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ভুক্তভোগীরা দর্পণ গ্রুপ কোম্পানির অফিসে গিয়ে চাকরি যোগদানের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা অপেক্ষা করার কথা বলে। পরে খোঁজ নিয়ে ভুক্তভোগীরা জানতে পারেন, শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ এ চাকরি দেয়ার জন্য আসামিদের কোম্পানি অথবা অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানকে স্যামসাং কোম্পানি কোনও ওয়ার্ক অর্ডার দেয়নি।

প্রতারকরা করোনা টেস্টের কথা বলে আরো পাঁচ হাজার করে টাকা নেয়। আবারো জয়েন ডেট দিয়ে সময় নেয়। তাদের সন্দেহ হলে সবাই বিমানবন্দরে যান। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এ ধরনের কোনো প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ক পারমিট পায়নি। পুরোটাই প্রতারণা।

এ চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান সিআইডির কর্মকর্তারা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এফজেড/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত