বিপুল পাসপোর্টসহ সেই অমির ৯ সহযোগী গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২২ জুন ২০২১, ১৫:৪৯
বর্তমান সময়ের আলোচিত নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেপ্তার তুহিন সিদ্দিকী অমির ৯ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত দক্ষিণখানসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে অমির গাড়িচালকও আছেন।
গ্রেপ্তার নয়জন হলেন অমির গাড়িচালক মো. সালিউদ্দিন, অমির অন্যতম সহযোগী জসিম উদ্দিন, মো. মুসা, রাকিবুল ইসলাম রানা, গোলাপ হোসেন বুলবুল, জাকির হোসেন, মো. নাজমুল, মো. আলম ও শাহজাহান সরকার।
অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে ৩৯৫টি পাসপোর্ট, অমির চারটি বিলাসবহুল গাড়ি, ২২টি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক, সম্পত্তির দলিল, ক্রেডিট কার্ড, বিপুল অলিখিত স্ট্যাম্প, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, ভিসা কার্ড, পেনড্রাইভ ও মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য দেন সংস্থার অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
অতিরিক ডিআইজি বলেন, ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমনিকাণ্ডে গ্রেপ্তার তুহিন সিদ্দিকী অমির বিরুদ্ধে রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় মামলা করেন এক ভুক্তভোগীর পরিবার। সেই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে সিআইডি জানতে পারে অমির নেতৃত্বে একটি বিশাল মাদকপাচার চক্র কাজ করছে। তাদের দলে ৫০ থেকে ৬০ এজেন্ট রয়েছে। যারা বিভিন্ন দেশে ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দিয়ে ফাঁদে ফেলে মানবপাচার করে আসছে। ভালো চাকরির প্রলোভনে অনেকে বিদেশে গেলেও চাকরি তো দূরের কথা, উল্টো নানাভাবে হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার হতো ভুক্তভোগীরা।
শেখ ওমর ফারুক বলেন, বিদেশে এই চক্রের হাতে নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়ে পাচার হওয়া শ্রমিকরা দেশে এসে তাদের টাকা ফেরত চাইতো। কিন্তু এখানেও তাদের নানা ধরনের হুমকি দেয়া হতো। ফলে তারা মামলা করতে ভয় পেতো। অনেক সময় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে গেলেও নেয়া হতো না। অমি গ্রেপ্তারের পর এক ভুক্তভোগী দক্ষিণখান থানায় মামলা করলে আমরা তাদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামি।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সঙ্গে অমির মানবপাচারের সম্পর্ক আছে উল্লেখ করে শেখ ওমর ফারুক বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে অমির গাড়িচালক এবং তার প্রতিষ্ঠানের ৫০ থেকে ৬০ জন এজেন্ট রয়েছেন। তারা সবাই এখন আত্মগোপনে আছেন।
গ্রেপ্তার অমির রিক্রুটিং লাইসেন্স যদি থেকে থাকে তাহলে মানুষ বিদেশে পাঠানোকে পাচার বলা হচ্ছে কেনো, এমন প্রশ্নের জবাবে সিআইডির এই অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, দেশের মানবপাচার আইনে বলা আছে যদি কেউ লোকজনকে ভালো চাকরি দেয়ার কথা বলে বিদেশে পাঠিয়ে নির্যাতন, বন্দিসহ প্রতিশ্রুতি না রাখে তাহলে আইনের চোখে এটিকে পাচার বলে। অনেকে চাকরি পায়নি। আটকে রাখা হয়েছে। এমন অভিযোগেই দক্ষিণখান থানায় মামলা হয়েছে। তবে এখনই বলা যাচ্ছে না কতজন পাচারের শিকার। আমরা তদন্ত করছি। আশা করছি আজকের এই ব্রিফ সংবাদ মাধ্যমে গেলে আরো অনেক ভুক্তভোগী আমাদের কাছে আসবে। খুব দ্রুতই আমরা এই চক্রের সবাইকে গ্রেপ্তার করতো পারবো।
বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ