ঢাকা, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

অসময়ে কুমিল্লায় তরমুজ

  কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২১:১৩

অসময়ে কুমিল্লায় তরমুজ
অসময়ে কুমিল্লায় তরমুজ

অসময়ে তরমুজের স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে কুমিল্লায়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক লাগোয়া দেশের সবচেয়ে বড় সবজি বাজার বুড়িচং উপজেলার নিমসারে প্রথমে এই তরমুজের দেখা মেলে। দাম কম হওয়ায় বিক্রিও বেশি বলে জানান স্থানীয় ব্যাবসায়ীরা। এই তরমুজ সুস্বাদু ও মিষ্টি, তেমন বড় না হলেও মাঝারি আকারের।

বর্তমান ডিজিটাল প্রযুক্তির আবিস্কারে দেশে সবকিছুর বদলের সাথে তরমুজ চাষের পদ্ধতি বদলেছে। এখন দেশের তরমুজ চাষিরা এই লাভজনক ফল চাষ আগাম শুরু করেছে। ফলে শীতকাল শেষ না হতেই অসময়ে বাজারে উঠতে শুরু করেছে প্রিয় ফল তরমুজ। বর্তমানে এর দাম কম হওয়ায় বিক্রি হচ্ছে বেশী।

সরেজমিন নিমসার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের একটি আড়তে তরমুজ বিক্রি হচ্ছে। আড়তের সামনে আছে একটি ট্রাক। ওই ট্রাকেই আশ্বিনে এসেছে গ্রীষ্মের এই ফলটি।

আড়ত মালিক পাভেলের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রথমে তার আড়তে বাগেরহাট জেলা থেকে তরমুজ এনেছেন এক ব্যক্তি। গত কয়েকদিন ধরেই কুমিল্লায় তরমুজ আসছে। তবে সাধারণ ক্রেতা পর্যায়ে যেতে যেতে তা চাহিদার জোগান দিতে পারছে না। তরমুজের উৎপাদন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি পাশে বসা ওই ব্যক্তিকে দেখিয়ে দেন।

পাশেই বসে আছেন বাগেরহাট থেকে তরমুজ নিয়ে আসা সজিব। ওই জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে তিনি ৯৪ মণ তরমুজ এনেছেন।

তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি মণ তরমুজ এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা দরে কিনেছেন। যার প্রতি কেজি হিসেবে ৫০ টাকা হয়। কুমিল্লায় খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন দুই হাজার ৮০০ টাকা দরে।

তিনি বলেন, এগুলোকে স্থানীয়রা বাঙ্গালিন ও কালো তরমুজ হিসেবেই চেনেন। খুলনা ও বাগেরহাট জেলার কৃষকরা শ্রাবণ-ভাদ্র মাসে এই তরমুজ চাষ করেন। দেড় মাস পরে অর্থাৎ আশ্বিন -কার্তিক মাসে ফলন আসে। অসময়ের ফল বলে এর দামেও ফারাক আছে। এখন দাম কিছুটা বেশি। স্বাদ ভালো। ওই সব জেলায় ভালো দাম না পাওয়াতে এগুলো কুমিল্লা বা ঢাকার বিভিন্ন সবজি বাজারে আনা হয়। যদি এই চালান ভালো দামে বিক্রি করে যেতে পারি তাহলে আরও আনবো।

কুমিল্লা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, কুমিল্লায়ও এবার তিন হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। প্রায় তিন সপ্তাহ আগেই ফসল উত্তোলন করা হয়েছে। এখনও কয়েকটা জমিতে কিছু আছে। যেগুলো নিমসারে এসেছে সেগুলো ব্ল্যাক বেরি জাতের হতে পারে। এ ছাড়াও কয়েকটি জাত এই সময়ে চাষ হয়। দেখা ছাড়া বলতে পারছি না। তবে এই সময়ে কয়েকটি জেলায় তরমুজ উৎপাদন হয়।

কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর কুমিল্লায়ও বারোমাসি তরমুজ উৎপাদন হয়েছে। তবে এর পরিমাণ খুবই কম। জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার কৃষক রবিউল হোসেন এ তরমুজ চাষ করেছেন।

কৃষক রবিউল হোসেনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই ধরনের তরমুজ খুলনা, বাগেরহাটসহ কিছু জেলায় ব্যাপক হারে উৎপাদন হয়। এই তরমুজের নাম ব্লাক বেরি, ব্লাক প্রিন্স, সুইট মেলন, ব্ল্যাক সুইট-২, গোল্ডেন ক্রাউন ইত্যাদি।

কৃষক রবিউল হোসেন আরও বলেন, সাধারণত এই মৌসুমে কৃষকেরা আগে শসা বা বাঙ্গি চাষ করতেন। কিন্তু বর্তমান বাজারে শসা ও বাঙ্গির চেয়ে তরমুজের বাজার দাম ভালো না- যে কারণে কৃষকরা তরমুজ চাষে ঝুঁকছেন। এই সময়টায় বৃষ্টি হয়ে থাকে তাই তরমুজের জমিতে বাঁশের মাচা দিয়ে বৃষ্টি ও কাদা থেকে রক্ষা করা হয়। এতে ফলনও ভালো হয়। সারা দেশে যদি অসময়ের এই তরমুজের উৎপাদন বাড়ানো যায় তবে তা রফতানিও করা সম্ভব। এতে বৈদেশিক মুদ্রাও পাবে দেশ।

বাংলাদেশ জার্নাল/সামি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত