ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

করোনা মোকাবিলায় গ্রাহকের পাশে ‘ইভ্যালি’

  হৃদয় আলম

প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২০, ১৮:৪৫  
আপডেট :
 ০৬ এপ্রিল ২০২০, ১৯:০৬

করোনা মোকাবিলায় গ্রাহকের পাশে ‘ইভ্যালি’
ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ

করোনাভাইরাসের এই সংক্রামণের সময় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে সরকার। আর এ পরিস্থিতিতে জনগণকে যতোটা সম্ভব ঘরে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। যা বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছে দেশের অন্যতম শীর্ষ ই-কমার্স ভিত্তিক মার্কেটপ্লেস ‘ইভ্যালি’। প্রতিষ্ঠানটি জনগণের সুবিধার কথা বিবেচনা করে গ্রাহকের অর্ডারের পর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ১ ঘণ্টা থেকে সর্বোচ্চ ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে বাড়িতে পৌঁছে দিচ্ছে।

সম্প্রতি ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ নামে নতুন একটি ক্যাম্পেইন শুরু করেছে ‘ইভ্যালি’। ২৪ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এই ক্যাম্পেইন চলছে রাজধানী ঢাকার ৮টি সহ পুরো দেশে প্রায় ৮৯টি স্থানে। সামনে এর পরিধি আরো বাড়ানোর কথা ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা।

এই ক্যাম্পেইনে মাছ, মাংসের মতো পচনশীল দ্রব্যাদি পাওয়া না গেলেও পাওয়া যাচ্ছে আটা, তেল, ঘি, মধু, মশলা,চাল, ডাল, নুডলস, দুধসহ অসংখ্য পণ্য।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাসেল বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘আমরা ঢাকাসহ ৮৯টি জায়গায় আমাদের ক্যাম্পেইন চালাচ্ছি। যারা ডেলিভারি দেয় তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার করোনা মোকাবিলার যথাযথ পরামর্শ মেনে পণ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। এছাড়া বিকাশ অ্যাপ থেকে পেমেন্ট ২০ শতাংশ ক্যাশব্যাক পাবেন গ্রাহকরা।’

তিনি বলেন, ‘ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপ’ চালুর মূল উদ্দেশ্য ছিল সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে গ্রাহকদের জন্য একটি সেবা দেয়া। করোনার মতো পরিস্থিতিতে সবাইকে যখন নিজ নিজ অবস্থান বা ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে, তখন তারা যেন ঘরে বসেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য পেতে পারেন তেমন একটি সেবা চালুর চিন্তা থেকে ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপের যাত্রা। আমাদের মূল লক্ষ্য এখন গ্রাহকদের একটি দারুণ সেবা দেয়া। ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যের থেকে এটি মুখ্য। কারণ এই সময়টা শুধুই ব্যবসা করার জন্য না। আমরা একটি কঠিন সময় পার করছি। এই সময়ে যার যার অবস্থান থেকে নিজেদের সাধ্যতম এগিয়ে আসা উচিত। আমরা আমাদের গ্রাহক শ্রেণি এবং বিক্রেতাদের মধ্যে যোগাযোগ করিয়ে দিচ্ছি, বিক্রেতাদের লজিস্টিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছি। এভাবে আমরা অবদান রাখতে চাই।’

করোনা পরিস্থিতির পর এ ধরনের কার্যক্রম চালু থাকবে কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইলে রাসেল বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য গ্রাহককে বাজার মূল্যে দ্রুততম সময়ে ঘরে পণ্য পৌঁছে দেয়া। করোনা পরিস্থিতির পরেও আমাদের এই কার্যক্রম চালু রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।’

করোনায় বিভিন্নস্থানে চলাচলে বিধি-নিষেধের মধ্যে কীভাবে সঠিক সময়ে পণ্য পৌঁছানো হয় সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পণ্য পৌঁছে দেয়ার মূল দায়িত্ব সেলারদের। এজন্য তাদেরকে যে কারিগরি, প্রযুক্তিগত এবং লজিস্টিক সাপোর্ট দেয়া দরকার তা আমরা দিচ্ছি। সেলাররা বিভিন্ন উপায়ে পণ্য গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন। এক্ষেত্রে অনেক সময় সেলার এবং গ্রাহকেরা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করে ডেলিভারি অপশন নির্ধারণ করে নিচ্ছেন। আমরা সেলারদের বারংবার কাউন্সিলিং করছি যেন ডেলিভারি করার সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষার সর্বোচ্চ খেয়াল রাখা হয়।’

মানুষ কেনো ইভ্যালি থেকেই পণ্য নিবে এমন প্রশ্নের জবাবে রাসেল বলেন, ‘এখানে দুইটা বিষয়- অফলাইন এবং অনলাইন। অফলাইনের মধ্যে অন্যরা যারা বিক্রি করছেন তাদের থেকে কিনতে হলে গ্রাহকদের ঘর থেকে বের হয়ে দোকানে বা বাজারে যেতে হবে। যেটা এই সময়ে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত। আর অনলাইনে আরো কিছু মার্কেটপ্লেস একই রকম উদ্যোগ নিয়ে এসেছে বলে আমরা দেখছি। এখানে আমাদের থেকে কেনো কিনবে আর তাদের থেকে কেনো কিনবে না বা তাদের থেকে কিনবে আমাদের থেকে কেনো কিনবে না; বিষয়টা এমন না। বাজার খুব বড়। প্রতিটি প্ল্যাটফর্মই নিজ নিজ গ্রাহক শ্রেণিকে আকৃষ্ট করতে পারে। গ্রাহকেরাও একেকটি প্ল্যাটফর্মের ওপর আস্থা রাখবেন। তবে, আমাদের এই কাজটি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে করা হচ্ছে। ফলে সেলাররা যেন সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য অর্থাৎ এমআরপি তেই পণ্য বিক্রি করেন তার জন্য তাদেরকে আমরা বোনাস দিচ্ছি। গ্রাহকদের জন্যও বিকাশে ২০% ক্যাশব্যক দিচ্ছি। এটা গ্রাহকদের আমাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে কিনতে উৎসাহিত করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’

গ্রাহকদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন উল্লেখ করে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ‘ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপের সেবা নিয়ে এখন পর্যন্ত গ্রাহকদের কাছ থেকে আমরা প্রচুর ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছি। প্রতিদিনই আমাদের ফেসবুক পেইজে, গ্রুপে এবং আমার ব্যক্তিগত আইডির ইনবক্সেও অনেকেই তাদের সন্তুষ্টির অভিজ্ঞতা জানিয়ে মতামত দিচ্ছেন।’

কারা এ ক্যাম্পেইনে যুক্ত হতে পারেন সে বিষয়ে রাসেল বলেন, ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মে ১৮ লাখের ওপরে গ্রাহক এবং প্রায় ২০ হাজার বিক্রেতা বা সেলার আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেলার মুদি আইটেম বা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করেন। আবার এ ধরনের পণ্য উৎপাদন এবং খুচরা বাজারে সরবরাহ করে এমন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোও আছে। করোনার এই সংকটকালীন মুহূর্তে আমাদের বিশাল এই রিসোর্সকে জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে কাজে লাগাতে চাই। বিভিন্ন মহল্লায় বা এলাকায় যারা এ ধরণের পণ্যের দোকান পরিচালনা করেন তারা ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপে যুক্ত হতে পারেন। যেসব গ্রাহক আমাদের প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত হননি তারাও ইভ্যালিতে যুক্ত হয়ে পণ্য অনলাইনে অর্ডার করে ঘরে বসে বুঝে পাওয়ার এই সেবা নিতে পারেন।’

রাসেল আরো বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মেনে সবাই ঘরে থাকুক। এই সময়ে আমাদের সরকার একা অনেক কিছুই করতে পারবে না। আমাদের ক্ষুদ্র অবস্থান থেকে আমরা সেই জায়গায় অবদান রাখতে চাই। সকল স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনেই গ্রাহকদের বাসায় দ্রুততার সাথে আমরা পণ্য পৌঁছে দেব। সম্প্রতি এক ভিডিও প্রেস কনফারেন্সে সম্মানিত আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ দেশিয় আইসিটি খাতের বিশিষ্টজনেরা এই সময়ে প্রযুক্তির বহুল ব্যবহারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন। আর্থিক লেনদেন নগদের তুলনায় ডিজিটাল মাধ্যমে সম্পন্ন করার তাগিদ দিয়েছেন। ইভ্যালির ব্যবসায়িক দর্শন এই স্পিরিট এর সাথে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ।’

ইভ্যালি এক্সপ্রেস শপের কার্যক্রম সম্পর্কে রাসেল বলেন, ‘গ্রাহক তার অবস্থান থেকে অনলাইনে অর্ডার করবে। গ্রাহকদের নিকটস্থ দোকানগুলো আমাদের ইভ্যালিতে থাকবে। যার দোকানের অনুকূলে অর্ডার এসেছে সেই সেলার সর্বনিম্ন এক ঘণ্টা থেকে পণ্য ও ক্ষেত্র বিশেষে সর্বোচ্চ ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে পণ্য গ্রাহকের কাছে সরবরাহ করবেন। এক্ষেত্রে বাজার মূল্যের বিবেচনায় পণ্যের দাম ইভ্যালি নির্ধারণ করে দেবে যা কোনোভাবেই বাজার মূল্য থেকে বেশি হবে না।’

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত