ঢাবি ছাত্রীর ধর্ষকের পরিচয় মিলেছে
রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্বিবিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় আটক সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার রাতে গাজীপুর থেকে ধর্ষককে আটক করা হয়। বুধবার সকালে ধর্ষককে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান। তবে ধর্ষকের নাম-পরিচয়সহ এ ব্যাপারে পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তিনি।
মিজানুর রহমান জানান, ওই শিক্ষার্থীদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এক ব্যক্তিকে আটকের পর তার ছবি ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে দেখানো হয়েছে। তিনি তাকে ধর্ষক বলে শনাক্ত করেছেন।
আরো পড়ুন: ঢাবি ছাত্রীর ধর্ষক গ্রেপ্তার
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ধর্ষক একজন সিএনজি চালক। তার বয়স আনুমানিক ৩০-৩৫ বছর। সন্দেহভাজন হিসেবে মঙ্গলবার দুপুরে তাকে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে আটক করা হয়। এরপর দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে তার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ঢামেকে ছাত্রীর কাছে ছবি পাঠানো হয় ওই যুবকের। ওই ছাত্রী নিশ্চিত করার পর তাকে আটক দেখায় র্যাব।
তার বিষয়ে জানতে চাইলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ‘আটকের বিষয়ে আরো খোঁজ নেয়া হচ্ছে। সে আগেও এ ধরনের ঘটনায় জড়িত ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা চলছে।’
সূত্র আরো জানায়, ছাত্রীর দেয়া বর্ণনার সঙ্গে আটক ব্যক্তির দৈহিক মিল পাওয়া গেছে। ঘটনার সময় আটক ব্যক্তির অবস্থান ও তার দেয়া তথ্যে বেশ কিছু গরমিল পাওয়া যায়। তথ্য উপাত্তে ধর্ষণের সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হয়েই তাকে আটক করা হয়েছে।
এর আগে ওই ছাত্রীর দেওয়া চেহারার বর্ণনা অনুযায়ী, ধর্ষকের একটি স্কেচ আঁকা হয়। সেই স্কেচ ধরে অনুসন্ধানে নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়া ঘটনাস্থলের আশপাশের কয়েকটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজও বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার রাত থেকে র্যাব কর্তৃক ধর্ষককে গ্রেপ্তারের গুঞ্জন থাকলেও রাতে র্যাব-১ এর অধিনায়ক জানিয়েছিলেন, এ ঘটনায় একজনকে চিহ্নিত করে তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে।
আরো পড়ুন: ঢাবি ছাত্রীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ
প্রসঙ্গত, ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে কুর্মিটোলা বাস স্টপে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস থেকে নামার পর ওই ছাত্রীকে মুখ চেপে রাস্তার পাশে নিয়ে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তি। সেখানে তাকে অজ্ঞান করে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করা হয়। পরে ১০টার দিকে তার জ্ঞান ফিরলে তিনি নিজেকে নির্জন স্থানে অবিষ্কার করেন।
এরপর ওই ছাত্রী ঘটনাস্থল থেকে গন্তব্যে পৌঁছালে রাত ১২টার পর তাকে ঢামেক জরুরি বিভাগে নিয়ে যায় সহপাঠীরা। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন আছেন তিনি।
এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই প্রতিবাদ ও ধর্ষকের বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠে ঢাবি ক্যাম্পাস। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় সবকটি ইউনিট ধর্ষককে খুঁজে পেতে একযোগে কাজ শুরু করে। এরই মধ্যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করার কথা জানিয়েছেন।
ধর্ষণের এই ঘটনায় ছাত্রীর বাবা রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, আনুষ্ঠানিকভাবে মামলাটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি)।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ