ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২১ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রাথমিকসহ সকল শিক্ষকদের জন্য কঠোর আইন!

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ১৫:২৩

প্রাথমিকসহ সকল শিক্ষকদের জন্য কঠোর আইন!

৫৮টি ধারা সংবলিত শিক্ষা আইন-২০২০ এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। শিগগিরই এটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় পাঠানো হবে বলেও জানা গেছে। তবে এবারের নতুন শিক্ষা আইনে প্রাথমিকসহ সকল শিক্ষকদের জন্য কিছু কঠোর নির্দেশনা এবং হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।

শিক্ষা আইনের চূড়ান্ত খসড়ার ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, শিক্ষা আইনের খসড়া তৈরির কাজে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। আশা করছি সপ্তাহ খানেকের মধ্যে তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো যাবে।

আরও পড়ুন: নতুন আইনে যে কাজ করলে শিক্ষক নিবন্ধন বাতিল!​

আমাদের শিক্ষানীতিতে তিনটির কথা বলা হলেও দেশে আপাতত চার স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থাই থাকছে। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকের কোচিং-টিউশন এবং নোট-গাইড নিষিদ্ধ। তবে চলবে বাণিজ্যিক কোচিং সেন্টার। সরকারের পূর্বানুমোদন ছাড়া স্থাপন করা যাবে না কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিদেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বেতন ও অন্যান্য ফি নির্ধারণ করবে সরকার বা সরকার কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো প্রতিষ্ঠান।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের প্রস্তাবিত আইনে বিদ্যমান চার স্তরের শিক্ষা ব্যবস্থার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে- পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক, দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণি উচ্চ মাধ্যমিক স্তর। এরপরে শুরু উচ্চশিক্ষা স্তর। এছাড়া প্রাক-প্রাথমিক স্তরের কথাও আছে আইনে।

আরও পড়ুন: নতুন আইনে ৩ ক্যাটাগরিতে মাধ্যমিক শিক্ষা​

নতুন আইনের ১৬ নম্বর ধারায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক সম্পর্কে বলা হয়েছে, নোট-গাইড বই ক্রয় বা পাঠে বাধ্য করলে বা উৎসাহ দিলে তা অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, প্রতিষ্ঠান প্রধান ও পরিচালনা কমিটির সংশ্লিষ্ট সদস্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক এখতিয়ারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আইনে নোট-গাইডের সংজ্ঞা নির্ধারণ করে বলা হয়েছে, পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তুর আলোকে বিভিন্ন পরীক্ষার সম্ভাব্য প্রশ্নাবলির উত্তর লেখা থাকে যে পুস্তকে, যা বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হয়।

আরও পড়ুন: নতুন আইনে প্রাথমিকে যে বিষয় বাধ্যতামূলক​

অপরদিকে কোচিং সংক্রান্ত বিধানে উল্লেখ আছে, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট-টিউশনের মাধ্যমে পাঠদান করতে পারবেন না। কোনো শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে অর্থের বিনিময়ে ইলেকট্রনিক বা অনলাইন পদ্ধতিতেও প্রাইভেট টিউশন বা কোচিংয়ের মাধ্যমে পাঠদান করতে পারবেন না। করলে তা অসদাচরণ বলে গণ্য ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হবে।

তবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করে সংশ্লিষ্ট অভিভাবকদের লিখিত সম্মতি সাপেক্ষে স্কুল সময়ের পরে বা আগে সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধি বা নীতিমালা অথবা জারিকৃত পরিপত্র বা নির্বাহী আদেশ অনুসরণপূর্বক অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে পারবেন।

আরও পড়ুন: নতুন আইনে প্রাথমিকসহ ৪ স্তরে শিক্ষা ব্যবস্থা!​

এতে বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক কোচিং সেন্টারকে বৈধতা দিয়ে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদানের উদ্দেশ্যে কোচিং সেন্টার পরিচালনা করা বা কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করা এ আইনের অধীন নিষিদ্ধ হবে না। এক্ষেত্রে দুটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে।

এক. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলাকালীন সময় সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত কোচিং সেন্টার পরিচালনা করা যাবে না। করা হলে উক্ত কোচিং সেন্টারের ট্রেড লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

আরও পড়ুন: নতুন শিক্ষা আইনে যা যা আছে

দুই. কোচিং সেন্টারে কোনো শিক্ষক তার নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাতে পারবেন না। করলে তা অসদাচরণ হিসেবে শাস্তিযোগ্য হবে।

এতে কোচিংয়ের সংজ্ঞায়ন করতে গিয়ে বলা হয়, সরকারি বা স্বীকৃত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে কোনো ব্যক্তি বা শিক্ষক কর্তৃক এক বা একাধিক শিক্ষার্থীকে কোনো প্রতিষ্ঠানে বা নির্দিষ্ট স্থানে অর্থের বিনিময়ে পাঠদান কার্যক্রম।

আরো পড়ুন: নিয়োগ স্থগিত হলেও রিটকৃত জেলাগুলোর শিক্ষকদের সুবিধা আছে!

আর প্রাইভেট টিউশন সম্পর্কে বলা হয়, কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্তৃক অর্থের বিনিময়ে মূল শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে যে কোনো স্থানে শিক্ষা প্রদান।

শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তির ওপর বিধিনিষেধ এবং শিক্ষক সুরক্ষার বিধানও যুক্ত করা হয়েছে। পরীক্ষায় নকলে সহায়তা করা এবং পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও এতে সংশিষ্টতা দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ধরনের অপরাধের জন্য দুই বছরের কারাদণ্ড অথবা দুই লাখ টাকা দণ্ড অথবা উভয়দণ্ড দেয়া যাবে। কোনো শিক্ষক নৈতিকতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়ালে তার শিক্ষক নিবন্ধন বাতিল করা যাবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত