জবির রফিক ভবনে নেই শহীদ রফিক নাম
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২৩:১৬ আপডেট : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ২৩:২০
৫২’র ভাষা আন্দোলনে প্রথম শহীদ রফিক উদ্দিন আহমেদ রফিক। এই বীরের স্মৃতি রক্ষায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাষা শহীদ রফিক ভবন নির্মাণ করা হলেও এখানকারই শিক্ষার্থী রফিকের নামটি বেশ কিছুদিন আগে সমাবর্তনের সময় মুছে ফেলা হয়। রফিকের নাম মুছে ফেলার পর ভাষায় মাসে ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও রফিক ভবনের দেয়ালে তার নাম আর দেখা যায়নি।
এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। অনেকেই বিষয়টির সমালোচনা করেছেন।
জবি শিক্ষার্থী ফাহিম হতাশা প্রকাশ করে বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘বিষয়টি কেমন জানি লাগে। আগে যখন নাম থাকতো তখন নামটা মাঝে মাঝেই দেখতাম। গর্ব হতো। ভাষা আন্দোলনের প্রথম শহীদ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। কিন্তু এখন ২০ দিন হলো তার নাম মুছে ফেলা হয়েছে। এ বিষয়টি সত্যি হতাশাজনক। আমরা শহীদদের ত্যাগ যেন না ভুলে যাই।’
যোগাযোগ করা হলে জবি প্রক্টর মোস্তফা কামাল বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘সমাবর্তনের কাজের জন্য রঙ মিস্ত্রিরা এটি ভুলে মুছে ফেলেছে, তাদের আজকের (বৃহস্পতিবার) মধ্যেই করে দেয়ার কথা ছিলো- কেনো করেনি বুঝলাম না। বিস্তারিত খোঁজ খবর নিচ্ছি।’
পরিচয়
‘সৈকত আসগরের ভাষা আন্দোলন ও শহীদ রফিক’ এবং ‘বাংলা একাডেমীর চরিতাভিধান’ থেকে জানা যায়, পারিল গ্রামে ১৯২৬ সালের ৩০ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন রফিক উদ্দিন আহমদ। বাল্যকাল থেকেই রফিক ছিলেন চঞ্চল প্রাণোচ্ছল। প্রাণোচ্ছলতার শিল্পীত প্রকাশও ঘটেছিল কৈশোর বয়সেই। সুঁই-সুতায় নকশা আঁকায় তার হাত পাকা ছিল বেশ।
রফিকের দুরন্তপনার মুখ্য বিষয়ে ছিল গাছে চড়া। আর গাছে চড়তে গিয়েই একবার তার পা ভাঙে। চিকিৎসার জন্য সে সময় তাকে কলকাতা পর্যন্তও পাঠানো হয়েছিল। চঞ্চল রফিকের ভবিষ্যত ভেবে তার বাবা তাকে কলকাতার মিত্র ইন্সটিটিউটে ভর্তি করিয়ে দেন। কিন্তু সেখানে তার মন টেকেনি। কয়েক বছর পর ফিরে আসেন দেশে। ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয় স্থানীয় বায়রা হাই স্কুলে। এ স্কুল থেকেই ম্যাট্রিক পাশ করেন তিনি।
কলেজ জীবন। রফিক ভর্তি হন দেবেন্দ্র কলেজের বাণিজ্য বিভাগে এবং দ্বিতীয় বর্ষ পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। তারপর লেখাপড়া বন্ধ। তবে লেখাপড়া ছেড়ে থাকা তার পক্ষে সম্ভব হয়নি। আবারও ভর্তি হন ঢাকার জগন্নাথ কলেজে (বর্তমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)। জগন্নাথ কলেজের ছাত্র থাকাকালেই ভাষার জন্য শাহাদাৎ বরণ করেন তিনি।
বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে