ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

২৯ জেলার নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কবে?

  হৃদয় আলম

প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২০, ১৭:২৩  
আপডেট :
 ২০ মার্চ ২০২০, ১৭:২৭

২৯ জেলার নিয়োগপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কবে?
প্রতীকী ছবি

বেশ কিছু নাটকীয়তার পর ৬১ জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে কিন্তু এর মধ্যে ৩২ জেলায় সহকারী শিক্ষক যোগদান, পদায়ন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ করা হলেও বাকি ২৯ জেলার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ স্থগিত রাখা হয়েছে। করোনার কারণে শেষ মুহূর্তে বন্ধ হয়ে যায় এ কার্যক্রম।

সংশ্লিষ্টদের মতে, করোনার কারণে আটকে যাওয়া এ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম দ্রুত করার চেষ্টা হচ্ছে। আগামী ৩১ মার্চের পর স্কুল-কলেজ চালু হলে দ্রুতই শুরু হবে কার্যক্রম।

এদিকে মামলা-জটিলতা নিরসন হওয়ার পরেও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকরা নিয়োগ পাচ্ছেন না। যা নিয়ে তারা কিছুটা সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন। তারা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চান।

নিয়োগ পাওয়া এক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করা শর্তে বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ‘আমি আগে একটা বেসরাকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতাম। এরপর এখানে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পর চূড়ান্ত নির্বাচিত হওয়ার পর ওই চাকরি ছেড়ে চলে এসেছি। আমার দুটি ছেলে আছে। তারা স্কুলে পড়ে। ওখানে চাকরি করে কিছু আয় হতো। এখন খুব খারাপ সময় পার করছি। এখানে নিয়োগও হচ্ছে না। অন্য চাকরিও নেয়া সম্ভব না। যত দ্রুত সম্ভব আমাদের প্রশিক্ষণসহ যাবতীয় কার্যক্রম শেষ করার দাবি জানাই।’

সূত্র জানায়, দেশের চলমান পরিস্থিতি যদি কিছুদিনের মধ্যে স্বাভাবিক না হয় তাহলে আগামী ৩১ মার্চের পর স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বন্ধের সময় বাড়ানো হতে পারে। পেছানো হতে পারে এইচএসসি পরীক্ষাও। আর যদি বন্ধের সময় বাড়ানো হয় তাহলে ২৯ জেলার প্রশিক্ষণের অপেক্ষারত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য নির্ধারিত সময় আবারো পিছিয়ে যেতে পারে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) সূত্র জানিয়েছে, করোনাভাইরাস আতঙ্কের কারণে সর্বশেষ নিয়োগ পাওয়া ২৯ জেলার শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ স্থগিত রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দ্রুত সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইন শাখা থেকে জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশনে স্থগিতাদেশ বাতিল করায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ৩২ জেলায় সহকারী শিক্ষক যোগদান, পদায়ন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শেষ করা হয়। আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় বাকি ২৯ জেলায় শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত থাকে। এরপর ১ মার্চে পাঁচ জেলায়, ৫ মার্চ ১০ জেলায়, ৮ মার্চ ঢাকাসহ পাঁচ জেলায়, ৯ মার্চ পাঁচ জেলায় এবং ১২ মার্চ চারটি জেলার স্থগিতাদেশ বাতিল করা হয়। এরপর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নির্দেশনা জারি করে এসব জেলায় নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব মো: আকরাম আল হোসেন এ বিষয়ে বলেন, ‘আদালতের স্থগিতাদেশ বাতিল করতে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়। এতে করে পর্যায়ক্রমে দেশের সব জেলার নিয়োগের স্থাগিতাদেশ আদালত থেকে বাতিল করা হলে সব জেলায় শিক্ষক নিয়োগ ও পদায়ন দেয়া হয়েছে। সর্বশেষ গাইবান্ধা, মানিকগঞ্জ, পিরোজপুর, পঞ্চগড় ও নরসিংদী জেলায় নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত ছিল। গত ১২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আপিল ডিভিশনে স্থগিতাদেশ বাতিল হওয়ায় সর্বশেষ এই পাঁচ জেলায় শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে ২৬ ডিসেম্বরের পরে যেসব শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের যোগদান-পদায়ন শেষ করা হলেও দেশে করোনাভাইরাসের বিস্তারের আশঙ্কা থাকায় তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। পরিস্থিতি যত দ্রুত স্বাভাবিক হবে এ কার্যক্রম ততো দ্রুত শুরু করা হবে।’

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) গত বছরের ৩০ জুলাই সহকারী শিক্ষক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা পর সারাদেশ থেকে ২৪ লাখ ৫ জন প্রার্থী আবেদন করেন। প্রথম ধাপে ২৪ মে, দ্বিতীয় ধাপে ৩১ মে, তৃতীয় ধাপে ২১ জুন এবং চতুর্থ ধাপে ২৮ জুন লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হলে দেখা যায়, ৫৫ হাজার ২৯৫ জন প্রার্থী পাস করেছেন।

লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এসব প্রার্থীদের গত বছরের ৬ অক্টোবর থেকে মৌখিক পরীক্ষা শুরু হয়। মাসব্যাপী সারাদেশের সব জেলায় মৌখিক পরীক্ষা আয়োজন করা হয়।

মৌখিক পরীক্ষাও শেষ হলে ৬১ জেলায় চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য ১৮ হাজার ১৪৭ জন শিক্ষক চূড়ান্ত করা হয়।

বাংলাদেশ জার্নাল/কেআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত