ঢাকা, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৫১ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি’র দাবি

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সরকারি নিয়মে ঈদ বোনাস!

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সরকারি নিয়মে ঈদ বোনাস!

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ঈদবোনাস ২৫ শতাংশর পরিবর্তে সরকারী নিয়মে প্রদানসহ মুজিববর্ষেই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসাথে জাতীয়করণ ঘোষণা চায় বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরাম।

রোববার বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে প্রেরিত আবেদনপত্রে এ দাবী জানান বাশিস নেতৃবৃন্দরা।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের প্রেরিত আবেদনপত্রটি ‘বাংলাদেশ জার্নাল’র পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো...

বরাবর

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহোদয়

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

তেজগাঁও, ঢাকা।

বিষয় : এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ঈদবোনাস ২৫% এর পরিবর্তে সরকারী নিয়মে প্রদানসহ মুজিববর্ষেই সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একসাথে জাতীয়করণ ঘোষণা প্রসঙ্গে।

জনাব, আপনাকে ‘বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াঁজো ফোরামের’ পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনার সদয় অবগতি ও সুবিবেচনার জন্য জানাচ্ছি যে, আমরা এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা বিভিন্নভাবে বেতন বৈষম্যের শিকার। বিগত ২২-০১-২০০৪ তারিখের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের আলোকে দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত ২৫% ঈদ বোনাস পেয়ে আসছেন বেসরকারী শিক্ষকগণ। এই সামান্য ঈদ বোনাস দিয়ে আমরা ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারি না এমনকি ঈদের সময় স্ত্রী, ছেলে-মেয়েদের একটি ভালো জামা কাপড়ও দিতে পারি না। বর্তমানে করোনার এই ভয়াবহ দুঃসময়ে শিক্ষক সমাজ গৃহবন্দী। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষকরা আরো বেশি অর্থকষ্টে পড়ে গেছেন। কারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে যে সম্মানী/ভাতা ছিল তাও বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ অভিভাবকরা নির্ধারিত টিউশন ফি প্রদান করতে পারছেন না। তারাও অর্থসংকটে পরেছেন। সেজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবী। এছাড়া এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-বৈষম্য আকাশ ছোঁয়া। বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের ১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা দীর্ঘ ০৭ বছরেও পরিবর্তন হয়নি। ১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া দিয়ে ঢাকা শহরে শিক্ষকদের থাকার কোন ব্যবস্থা নেই। বর্তমান সময়ে শিক্ষকরা অর্থকষ্টে চরম মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। আপনাকে ধন্যবাদ আপনি নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদেরকে আপনার বিশেষ প্রণোদনা প্রদান করেছেন। কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সরকারীভাবে মাত্র ১২,৫০০ টাকা বেতন পেয়ে থাকেন যা দিয়ে তাদের জীবন আর চলছে না। বর্তমানে অর্থকষ্টের কারনে শিক্ষকরা তাদের পেশা পরিবর্তন করছেন। অনেকেই দারিদ্রতা ও হতাশার কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। এছাড়া শিক্ষকদের বদলী প্রথা চালু নেই, নেই শিক্ষা সহায়ক ভাতা, কলেজ শিক্ষকদের পদোন্নতির কোন ব্যবস্থা নেই, রয়েছে অনুপাত প্রথার জটিলতা। কলেজ শিক্ষকরা দীর্ঘ ১০ বছর চাকরি করে ৮ম গ্রেডে গেলে মাত্র ১০০০ টাকা বর্ধিত বেতন পেয়ে থাকেন। যা নিয়ে শিক্ষক সমাজে ক্ষোভ ও অসন্তোষ রয়েছে। বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ডে অতিরিক্ত ৪% কর্তন করা হলেও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীগণ বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার। তারা অবসরকালীন সময়ে ঠিকমত চেক পাচ্ছে না। তাই বেসরকারী শিক্ষক-কর্মচারীদের কল্যাণ ট্রাস্ট ও অবসর সুবিধা বোর্ড বিলুপ্ত করে সরকারী পেনশন ব্যবস্থা চালু করার অনুরোধ জানাচ্ছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনাকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাই যে, ইতিমধ্যেই আপনি ২৭৩০ টি নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করেছেন। আরো বহু নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে- যেখানে শিক্ষক-কর্মচারীগণ দীর্ঘদিন থেকে বিনা বেতনে চাকুরী করে আসছেন। আপনার অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, এমপিওভুক্তি কোন ভাল প্রক্রিয়া নয়। এতে শিক্ষকদের ভোগান্তি আরো বেড়ে যায়, বেতন বৈষম্যের শিকার হন শিক্ষক-কর্মচারীগণ এবং শিক্ষার প্রতিটি ক্ষেত্রে ঘুষ দিয়ে এমপিওভুক্তি হতে হয়। তাই এমপিওভুক্তির টাকা দিয়ে এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আয় সরকারী কোষাগারে ফেরত নিয়ে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে একসাথে জাতীয়করণ ঘোষণা করা সম্ভব। আর সেটা ‘মুজিববর্ষেই’ ঘোষণা করলে ‘মুজিববর্ষ’ আরো আলোকিত হবে এবং একটি নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হবে বলে আমরা শিক্ষক সমাজ মনে করছি। শিক্ষক সমাজ প্রত্যাশা করছে “মুজিববর্ষেই” মানবতার মা তথা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা’ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ ঘোষণা দিবেন।

করোনার ভয়াবহ এ পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের প্রত্যাশা করা যেমন ঠিক নয় তেমনি শিক্ষক সমাজের জীবন ও জীবিকার কথা চিন্তা করে সামান্য বেতনভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের মানবিক দিক বিবেচনা করে আসন্ন ঈদুল আযহার পূর্বেই ২৫% এর পরিবর্তে সরকারী নিয়মে শতভাগ ঈদ বোনাস প্রদানসহ ‘মুজিববর্ষেই’ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (এমপিও এবং নন-এমপিও) একসাথে জাতীয়করণ ঘোষণা করে ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর’ স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে আমরা শিক্ষক সমাজ আপনার নিকট চিরকৃতজ্ঞ থাকবো।

এনএইচ/

  • সর্বশেষ
  • পঠিত