ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৪ মিনিট আগে
শিরোনাম

৭ বছরেও অনার্স শেষ হয়নি, ১০২ শিক্ষার্থীর খোলা চিঠি

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৭ জুলাই ২০২০, ১৫:৪১

৭ বছরেও অনার্স শেষ হয়নি, ১০২ শিক্ষার্থীর খোলা চিঠি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সরকারি তিতুমীর কলেজের ১০২ জন শিক্ষার্থী প্রায় ৭ বছরেও অনার্স শেষ করতে না পেরে হতাশায় ভুগছেন। করোনার কারণে তারা আবারো সেশনজটের আশঙ্কা করছেন। এ অবস্থায় তারা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সম্প্রতি একটি খোলা চিঠি লিখেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আশরাফ হোসেন। তিনি বলেন, চিঠির বিষয়টি আমরা অবগত আছি। এটা নিয়ে বিভাগের শিক্ষকরা কাজ করছেন। শিক্ষার্থীরা বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ রাখলে দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।

এদিকে রসায়ন বিভাগের তরিকুল ইসলাম রবিন নামের এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, এমন একটা সমাজে বাস করি যেখানে কেউ বুঝতে চায় না আমাদের সমস্যা কেউ এগিয়ে আসে না। কলেজকে জানালে বলে ঢাবিতে যাও, ঢাবিকে জানালে বলে কলেজে যাও। স্যারদের বললে বলে আমরা কিছু জানি না।

শিক্ষার্থীদের লেখা চিঠিটি বাংলাদেশ জার্নালের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-

প্রিয় স্যার/ম্যাডাম

আমরা তিতুমীর কলেজের রসায়ন বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের ছাত্র। আমাদের সেশনে ১১২ জন স্টুডেন্টের মধ্যে ১০ জন কোন রকম ভাগ্য জোরে পাশ করে বের হতে পেরেছে। বাকি আমরা ১০২ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে আটকে আছি। কেউ ৩য় বর্ষে কেউ ৪র্থ বর্ষে।

আমাদের জীবন থেকে ২০১৬ সালে ঢাবি অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে অনেকটা সময় হারিয়ে গেছে। এত দিন পরও আমরা অনার্স শেষ না করার কারণে কোন চাকুরীতে আবেদন করতে পারছি না বা কোন কিছুই করতে পারছি না। আমরা যারা সরকারি কলেজগুলোতে পড়ি সবাই নিম্নবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত। সবার পরিবার তাকিয়ে আমাদের উপর। ছেলে একটা কিছু করবে। তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করবে।

আমরা যারা ঢাকায় থাকি তাদের মেসের খরচ, খাবারের খরচ জোগার করতে হয়। কেউ টিউশনি করে কেউ বিভিন্ন পথ বের করে নেয়। হয়তো পড়াশোনাটা ওভাবে হয় না। কিন্তু আমাদের ৮০ ভাগ এসএসসি বা এইচএসসিতে এ প্লাস পাওয়া।

স্যার আমরা খুব অসহায় হয়ে আছি। প্রতিদিন আমরা ডিপ্রেশনে পড়ে যাচ্ছি। আপনারা আমাদের শিক্ষক, আমাদের সবচেয়ে বড় অভিভাবক। আমরা আপনাদের সন্তানের মত। আপনাদের একটু প্রচেষ্টা আমাদের বাচাঁতে পারে। আমাদের জীবন থেকে অনেকটা সময় হারিয়ে যাচ্ছে। আপনাদের কোন উপায় বা কোন পদক্ষেপ আমরা ও আমাদের পরিবার বাঁচাতে পারে। বিশেষ পরীক্ষা বা অন্য কোন উপায়ে যদি সম্ভব হয়।

আমরা ১০২ জন স্টুডেন্ট যেন কোন সরকারি চাকুরীতে বা অন্য কিছুতে আবেদন করার সুযোগটা হয় সেটা একটু ভেবে দেখার অনুরোধ করছি। আপনাদের ছোট পদক্ষেপ আমাদের আমরা আমাদের পরিবার বাঁচতে পারে। না হলে আমাদের আত্নহত্যা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। পরিবার, চারপাশের মানুষ, পৃথিবীর কেউ বুঝতে চায় না আমাদের সমস্যা। আপনারা আমাদের অভিভাবক। আপনারাই পারেন আমাদের বাঁচাতে।

অনুরোধক্রমে রসায়ন বিভাগ (২০১৩-১৪)

প্রসঙ্গত, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজধানীর সরকারি এ সাতটি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকে এসব কলেজগুলোর বেশ কয়েকটি ব্যাচে এ ধরণের সংকট চলমান রয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বারবার অবগত করা হলেও কোন সমাধান মেলেনি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে/ওয়াইএ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত