ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

যে কারণে শফী হুজুরের মাদ্রাসা বন্ধ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১৯:৫২  
আপডেট :
 ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ২১:২২

যে কারণে শফী হুজুরের মাদ্রাসা বন্ধ
ফাইল ছবি

দখলদারিত্বের দ্বন্দ্বের জেরে বন্ধ হয়ে গেছে হেফাজতে ইসলামের আমীর শফী হুজুরের মাদ্রাসা (চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসা)। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মুফতি আহমদ শফীর ছেলে মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষা সচিব মাওলানা আনাস মাদানী ও শিক্ষক জুনায়েদ বাবুনগরীর সমর্থক শিক্ষার্থীদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে কোন্দল চলে আসছিল। যা সম্প্রতি চরম আকার ধারণ করে। ঘটে ভাঙচুরের ঘটনাও। বুধবার শফী হুজুরের কক্ষসহ বেশ কয়েকটি কক্ষ ভাঙচুর করে শিক্ষার্থীরা। তারা শফী হুজুরকে পদ ছেড়ে দেয়ারও দাবি জানায়।

এ পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষামন্ত্রণালয় শর্ত পূরণে ব্যর্থ দেখিয়ে মাদ্রাসাটি পরবর্তি নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে। বৃহস্পতিবার শিক্ষামন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব সৈয়দ আসগর আলী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জারি করে। শর্তসাপেক্ষে কওমি মাদ্রাসাসমূহকে কিতাব বিভাগের কার্যক্রম শুরু ও পরীক্ষা গ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তা বাস্তবায়ন করতে পারেনি আল-জামিয়াতুল তাহলিমা দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা।

বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) আহমদ শফীর বিরুদ্ধে জুনায়েদ বাবুনগরীর সমর্থক ছাত্রদের বিক্ষোভ থেকে মাদ্রাসাটিতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বিক্ষোভকারীরা আহমদ শফীর সমর্থক শিক্ষকদের দুইজনের ওপর হামলা চালায় এবং অফিস কক্ষ ভাঙচুর করে। এসময় তারা শফী হুজুর ও তার ছেলে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসা ছেড়ে চলে যাওয়ার দাবি করে।

হাটহাজারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মাকসুদ আলম জানিয়েছেন, দুই পক্ষে দ্বন্দ্বের জেরে এই বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে আবাসিক এই মাদ্রাসায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। জুনায়েদ বাবুনগরীর সমর্থক বিক্ষোভকারী ছাত্ররা মাদ্রাসায় রাত ১১টা পর্যন্ত অবস্থান করে।

চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হাসান জানান, তার নেতৃত্বে পুলিশ মাদ্রাসার বাইরে অবস্থান নিয়েছিল বুধবার। সেদিন রাত ১১টার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।

আরো পড়ুন: হাটহাজারী মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে এই বিক্ষোভের মুখে মাদ্রাসাটির পরিচালনা কমিটির বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে জুনায়েদ বাবুনগরীর সমর্থক শিক্ষকরাই মূলত উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক থেকে আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে মাদ্রাসার শিক্ষকের পদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং তা সেখানে ঘোষণা করা হলে রাত ১১টার পর বিক্ষোভকারীরা তাদের কর্মসূচি শেষ করেন।

আরো পড়ুন: সরকারি তিতুমীর কলেজ শিক্ষক পরিষদের নতুন কমিটি

এই কমিটি আগামী ২০ সেপ্টেম্বর আবার বৈঠকে বসবে বলে জানানো হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ছয় দফা দাবি সম্বলিত একটি লিফলেটও সেখানে বিলি করেছিল।

আরো পড়ুন: ‘খিচুড়ি রান্না’ নিয়ে হৈচৈ করার কিছু নেই

সেই লিফলেটে আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কারের দাবি করা হয়। এটিই তাদের এক নম্বর দাবি ছিল। এছাড়াও আহমদ শফীকে মাদ্রাসার প্রধান বা পরিচালকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয়ার দাবিও করা হয়।

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব সৈয়দ আসগর আলী স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, গত ২৪ আগস্ট কওমি মাদ্রাসাসমূহের কিতাব বিভাগের কার্যক্রম শুরু ও পরীক্ষা গ্রহণের জন্য কতিপয় শর্তসাপেক্ষে অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু আরোপিত শর্তসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হওয়ায় চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসাটি পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত নির্দেশক্রমে বন্ধ করা হলো।

আরো পড়ুন: ‘মহান শিক্ষা দিবস’ আজ

বাংলাদেশ জার্নাল/এইচকে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত