ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২ মিনিট আগে
শিরোনাম

প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে চলছে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং

  আসিফ কাজল

প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২০, ১৯:৫১  
আপডেট :
 ২৩ অক্টোবর ২০২০, ২১:০৮

প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে চলছে কোচিং
প্রতীকী ছবি

‘প্রস্তুতি হবে সর্বশ্রেষ্ঠ, ফলাফল হবে প্রত্যাশিত’- এমন শিরোনামে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদেরকে ভর্তি করছে গাইডলাইন কোচিং সেন্টার। তিনমাসের কোর্সে একজন শিক্ষার্থীকে অনলাইনে ক্লাস করতে ভর্তি ফি নিচ্ছে ৫ হাজার টাকা। আর অফলাইনে (সরাসরি) ১০ হাজার টাকা।

সরাসরি কোথায় ক্লাস নেয়া হয় এমন প্রশ্নের জবাবে প্রতিষ্ঠানের এক পরিচালক মো. ইমরান হোসেন বলেন, ‘অনলাইনে শিক্ষার্থীদের কি আর শেখানো যায়। ঢাকায় আমাদের সাতটি শাখা বন্ধ রয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনের একটি গ্রামে গোপনে কোচিং চলছে। সকাল ১০টা থেকে ক্লাস শুরু হয়। চাইলে ঢাকা থেকেও সরাসরি ওখানে ক্লাস করতে পারবেন।’

করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ সাত মাস বন্ধ রয়েছে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপরও ঢাকার অদূরে এবং দেশের অধিকাংশ মফস্বল এলাকাগুলোতে সরাসরি কোচিং ক্লাস শুরু হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যশোর, খুলনা ও উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলা শহরে অবাধে চলছে এসব কোচিং কার্যক্রম। কোচিং সেন্টার পরিচালকরা বাংলাদেশ জার্নালকে জানান, ঢাকা শহরে এভাবে কোচিং পরিচালনা করতে হলে অনেক টাকা জরিমানা গুনতে হবে। কিন্তু মফস্বল এলাকায় প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করে কোচিং কার্যক্রম পরিচালনা করা যাচ্ছে।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কোচিং পরিচালক বলেন, মফস্বলে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো সম্ভব কঠিন। এজন্য শ্রেণিকক্ষেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞার থাকার কারণে প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করতে হচ্ছে।

এ বিষয়ে খুলনা দক্ষিণের উপ-কমিশনার এস এম শাকিরুজ্জামান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, পুলিশের এত দৈন্যদশা হয়ে পড়েনি যে কোচিং মালিকদের থেকে টাকা নিয়ে চলতে হবে। তবে হ্যাঁ, অনেক অভিভাবক চান তার সন্তানকে ভাল পড়াতে এরকমভাবে কিছু জায়গায় হইতো প্রাইভেট পড়ানো হয়ে থাকতে পারে। তবে এ মুহূর্তে আমরা সবাই সরকারি নির্দেশনার বিষয়ে শ্রদ্ধাশীল।

আমার দায়িত্বপ্রাপ্ত এলাকায় এমন কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানান তিনি।

অন্যদিকে অভিভাবকরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি শুরুর আগেই বেড়ে যায় কোচিং সেন্টারগুলোর দৌরাত্ম্য। করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদেরকে আকর্ষণ করতে এবার অনলাইনে নানা সম্ভার সাজিয়ে বসেছে এসব কোচিং সেন্টার। কিন্তু উচ্চ শিক্ষার জন্য আমরাও অনেকটা নিরুপায়। কারণ এটিই আমাদের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা যায়, শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি কোচিং করতে একজন শিক্ষার্থীকে সর্বনিম্ন ১৭ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ২৮ হাজার টাকা লাগছে। এছাড়া মেডিকেল ভর্তি কোচিং ও প্রকৌশল কোচিং করতে লাগছে আরো বেশি অর্থ। এরপরও শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অনেক প্রতিষ্ঠানে টাকা দিয়ে ভর্তি হবার পরও ক্লাশ করার জুম লিংক দিচ্ছে না।

রুম্পা নামে এক শিক্ষার্থী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমি ইউসিসিতে ভর্তি হয়েছি। আমাদের ভর্তির আগে কিন্তু ২০ তারিখ থেকে ক্লাস শুরুর কথা ছিলো। অথচ আমাদের রুটিনটা এখন পর্যন্ত দেয়া হয়নি। এক গাইডলাইন ক্লাস দিয়েই ঠাণ্ডা করা হয়েছে। যারা ভর্তি হয়ে আছে তারা কী করবে ততদিন?

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি কোচিং সেন্টারে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ না করায় আমাকে অনলাইন ক্লাশের লিংক আর পাসওয়ার্ড দেয়া হয়নি।

জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে এ ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ এ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকে সেটা শিক্ষা অফিসারকে দিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত