আটকে থাকা রুটিন পরীক্ষা দিতে চান বেরোবি শিক্ষার্থীরা
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০১ আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:১০
করোনা মহামারির মধ্যে আগামী ২৪ মে পর্যন্ত সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের পরীক্ষা গ্রহণ বন্ধ করতে সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। এরপরই সোমবার রাতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ হওয়া বিভাগগুলোর পরীক্ষা গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ও মাস্টার্স পর্যায়ের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশের পর আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে অংশগ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি এমন উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও সকল ধরণের পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানানো হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, চলতি বছরের জানুয়ারিতে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরীক্ষা গ্রহণের আয়োজন করে। তবে সোমবার শিক্ষামন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হলেও আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো শেষ করতে না পারলে দীর্ঘ ভয়াবহ সেশনজটে পড়বেন তারা। এতে করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফ তুলন বলেন, “শিক্ষামন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। কিন্তু রুটিন হয়ে যাওয়া বিভাগগুলোতে আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো গ্রহণ করা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উভয়েই সমস্যায় পড়বে। করোনার মধ্যে বন্ধ থাকাসহ এমনিতেই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগে তিন থেকে চার বছরের সেশনজট। এই পরীক্ষাগুলো নেয়া হলে অনেক বিভাগের অনার্স-মাস্টার্স ফাইনাল শেষ হবে এবং শিক্ষকরা ফল প্রকাশ করতে পারবে। পরীক্ষাগুলো এখন না গ্রহণ করলে শিক্ষার্থীরা আবারও দীর্ঘ সেশনজটে পড়বে। নাহলে ক্যাম্পাস খোলার পর আটকে থাকা এই পরীক্ষা নিতে শিক্ষকরা হিমশিম খাবে।”
লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী পোমেল বড়ুয়া বলেন, “শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে। যেহেতু আমরা সেশনজটের কবলে পড়ে দীর্ঘ সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। প্রশাসনের উচিত শুধুমাত্র পূর্বের প্রকাশিত রুটিন অনুযায়ী অসমাপ্ত পরীক্ষাগুলো গ্রহণ করা। প্রায় বেশিরভাগ বিভাগেই দুই-একটি পরীক্ষা বাকি রয়েছে। এমতাবস্থায় এই পরীক্ষাগুলো সমাপ্ত করতে পারলে কোর্স শিক্ষকরা যেমন বন্ধের মাঝে ফলাফল প্রকাশের প্রস্তুতি নিতে পারেন তেমনি আমাদেরও সেশনজট অনেকাংশে লাঘব হবে। তাছাড়া দুই-একটি অসমাপ্ত পরীক্ষার জন্য আমরা দীর্ঘদিন মেসে অবস্থান করে অপেক্ষা করলে মানসিকভাবে ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।”
তবে আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো গ্রহনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ, প্রো-ভিসি, সরিফা সালোয়া ডিনা, রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তফা কামাল এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নাজমুল হককে দফায় দফায় ফোন করা হলেও কেউ রিসিভ করেননি।
আরও পড়ুন- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা স্থগিত
বাংলাদেশ জার্নাল/আর