ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২৬ মিনিট আগে
শিরোনাম

জনবল সঙ্কটে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর

  আসিফ কাজল

প্রকাশ : ১১ মার্চ ২০২১, ১৮:৩৯  
আপডেট :
 ১১ মার্চ ২০২১, ১৮:৪৮

জনবল সঙ্কটে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর
প্রতীকী ছবি

একজন অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী দ্বায়িত্ব পালন করছেন প্রধান প্রকৌশলীর। অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলীর পদটি শূন্য। সিস্টেম এনালিষ্ট থাকার কথা থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে শূন্য সে পদ। নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) ৭২ জনের বিপরীতে আছেন মাত্র ৩২ জন। নেই কোন আইন কর্মকর্তা, উপপরিচালক অর্থ পদটিও ফাঁকা। দীর্ঘদিন জনবল সঙ্কটে স্থবির হয়ে পড়েছে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর। ৭৫ ভাগ জনবল সঙ্কট থাকার ফলে যেমন উন্নয়ন কর্মকান্ড ব্যাহত হচ্ছে তেমনি প্রকল্প বাস্তবায়নেও দীর্ঘসূত্রিতা বেড়েছে।

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে অর্গানোগ্রামে তিন হাজার ১৭৪ জন থাকলেও বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিকে কাজ করছে মাত্র ৮১৪ জন। প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা থেকে ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারী সব শ্রেণিতেই রয়েছে জনবলের তীব্র সংকট। যেকারণে প্রতিষ্ঠান কার্যত বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

অধিদপ্তরের প্রথম শ্রেণির ৪৩৩টি পদের মধ্যে শূন্য পদ রয়েছে ২৫৯টি। অর্থাৎ শতকরা ৬০ ভাগ পদ ফাঁকা। এছাড়াও পূরণকৃত পদ আছে ১৭৪টি। সরাসরি নিয়োগযোগ্য শূন্যপদ রয়েছে ১৭২টি এবং পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগযোগ্য শূন্যপদ আছে ৮৭টি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদ ছাড়াও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ), সিস্টেম এনালিস্ট, উপপ্রধান স্থপতি, নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ), নির্বাহী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক), উপপরিচালক (অর্থ), উর্ধ্বতন স্থপতি, সহকারী প্রধান স্থপতি, প্রোগ্রামার, আইন কর্মকর্তা, সহকারী প্রকৌশলী যান্ত্রিক (যান্ত্রিক), সহকারী প্রকৌশলী মেইনটেন্যান্স অর্থাৎ ২৩টি পদের মধ্যে ১৩টি পদে কোন জনবল নেই। বাকি ১০টি পদে যে জনবল থাকার কথা কার অর্ধেকও এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নেই।

দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তাদের মধ্যে ফাঁকা রয়েছে প্রায় ৭৫ ভাগ পদ। এরমধ্যে নেই কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তা, এস্টিমেটার ও উপসহকারী প্রকৌশলী (যান্ত্রিক)। উপসহকারী প্রকৌশলী সিভিলে ৬৭৮টি পদেও বিপরীতে জনবল নেই ৩৯৯টি পদে। মোট ৮৩৪ টি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৩০৪ জন। আর শূন্য পদ রয়েছে ৫৩০টি।

তৃতীয় শ্রেণিতে জনবলের সংকট ৮৩ ভাগের ও বেশি। প্রকৌশল অধিদপ্তরে ১১১৫ টি পদ থাকলেও শূন্য পদ রয়েছে ৯৩৩টি। নেই কোনো ইলেকট্রিশিয়ন, স্টোর কিপার, কম্পিউটার অপারেটর ও সুপার ভাইজার। এছাড়াও ডাটা এন্ট্রি অপারেটওে ৫২৬টি পদের বিপরীতে খালি রয়েছে ৫২১টি পদ।

চতুর্থ শ্রেণিতে আউট সোর্সিং এর মাধ্যমে দুজন পরিচ্ছন্নতা কর্মীর পদ থাকলেও সেই দুটি পদ শূন্য নেই। অফিস সহায়ক ৬৯০টির মধ্যে ৬০৩টি পদ ফাকা রয়েছে। সর্বমোট ৭৯২ টি পদের মধ্যে ৬৩৫টি পদ শূন্য রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রকৌশলী বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে চারজনের কাজ একজনকে করতে হচ্ছে। এভাবে কোন অধিদপ্তর চলতে পারে না। এমন অবস্থা চলমান থাকলে আমাদেন দরজা বন্ধ করে থাকতে হবে।

এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপপরিচালক আসাদুজ্জামান বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বওে ১৮৪৭টি পদ সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি আমরা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। এর আগে ৭১টি পদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছিলো ২০১৫ সালে। এর বিরুদ্ধে মামলা ছিলো সম্প্রতি মামলাটি নিষ্পত্তি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আশার কথা হচ্ছে এই ৭১জন সহ ১২৬৫টি পদের জন্য লিখিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেছে অধিদপ্তর। আগামী ৯, ১৬, ২৩ ও ৩০ এপ্রিল বিভিন্ন পদের বিপরীতে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও পিএসসির কাছে দুটো রিকুজিশন পাঠানো হয়েছে। একটা চিঠিতে ৯৯ জন সিভিল প্রকৌশলী ও দ্বিতীয় চিঠিতে ১৪ জন। এরমধ্যে পিএসসি আমাদেরকে মাত্র ৮৩ জন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার আমাদেরকে দিয়েছে। নিয়োগ সম্পন্ন হলে জনবল সংকট কেটে যাবে বলে আশ্বস্ত করেন।

দীর্ঘদিন কেন এত নিয়োগ বন্ধ ছিলো এমন প্রশ্নে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আরিফুর রহমানের অফিসে যাওয়ার পরও তিনি দেখা করেননি।

বাংলাদেশ জার্নাল/এসএমআর

  • সর্বশেষ
  • পঠিত