ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

পাঠের বাইরে থেকে পরীক্ষা দেবো কীভাবে?

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২১, ২০:১৫

পাঠের বাইরে থেকে পরীক্ষা দেবো কীভাবে?
সংগৃহীত ছবি

গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও বেসরকারি সংস্থা একশনএইড এর জরিপ বলছে দেশে ৫১ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী অনলাইন পাঠের বাইরে রয়েছে। যদি স্বশরীরে ক্লাস না নিয়ে পরীক্ষা শুরু হয়, তবে তা ৪৯ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য গ্রহণযোগ্য হবে, বাকী ৫১ শতাংশ পরীক্ষার্থী পাঠের বাইরে থেকে পরীক্ষা কীভাবে দেবে?

রোববার রাজধানীর আগারগাঁও-এ বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন, ইউজিসি ভবনের সামনে এক মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দরা এসব কথা বলেন। এসময় বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানায় পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, হল না খুলে পরীক্ষার আয়োজনের কারণে আমাদের মেস ভাড়া করতে হবে। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পক্ষে অসম্ভব। এমনিতেই দেশে লকডাউন চলছে। অভিভাবকদের হাতেও টাকা নেই। শিক্ষার্থীদের টিউশনীও বন্ধ। এর মধ্যে মেস ভাড়ার অতিরিক্ত টাকা তারা পাবে কোথায়? বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরীক্ষার আয়োজন করতে পারে, কিন্তু দরিদ্র শিক্ষার্থীরা সেখানে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। দরিদ্র শিক্ষার্থীদের প্রতি এ ধরনের নিকৃষ্ট বৈষম্য কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না।

করোনার অজুহাতে হল বন্ধ রাখা হয়েছে দাবি করে শিক্ষার্থীরা বলেন, পরীক্ষা শুরু হলে মেসগুলোতে ছাত্ররা জমায়েত হবে। ‘হলে করোনা হয়, কিন্তু মেসে করোনা হয় না’, এটা কোন ধরনের বিজ্ঞান?

আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মশিউর রহমান বলেন, শহর পর্যায়ে কোন কোন এলাকার ইন্টারনেট সুবিধা ভালো থাকলেও, দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে তা ভালোভাবে পৌঁছায়নি জানিয়ে তারা আরো বলেন, অনেক এলাকায় গাছের মগডালেও উঠেও নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। এছাড়া ভিডিও ক্লাসের জন্য প্রয়োজনীয় ইন্টারনেট ডাটা ব্যয়বহুলও বটে। একটি ব্যয়বহুল ও শহুরে ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে ক্লাস-পরীক্ষা নেয়া আর দরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের ঘাড় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া একই কথা।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা বলেন, দুই ডোজ টিকা দেয়ার পরও অনেকের করোনা হচ্ছে। তাই টিকা দিলেই করোনা চলে যাবে, এমনটা নয়। তাই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সাথে কোন ধরনের শর্ত আরোপ করা যাবে না। বিনা শর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। টিকা বা সংক্রমণের হারকে যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সাথে সম্পৃক্ত করা হয়, তবে আজীবনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাবে না।

করোনা তরুণ প্রজন্মের জন্য তেমন ক্ষতিকর নয় জানিয়ে শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে দীর্ঘদিন বাসায় বন্দি রাখা শিক্ষার্থীদের দৈহিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা শোচনীয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে। অনেকে মানসিক বিকারগ্রস্থ হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। পত্র-পত্রিকায় উঠে এসেছে, গত ১৫ মাসে ১৫১ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। এই ১৫১ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর দায় কি শিক্ষা মন্ত্রনালয় নিবে? শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। ‘কেউ শিক্ষা পাবে, কেউ শিক্ষা পাবে না, তা হবে না, তা হবে না’।

বাংলাদেশ জার্নাল​/একে

  • সর্বশেষ
  • পঠিত