ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ২১ মিনিট আগে
শিরোনাম

বাবার সাথে সেলুনে চুলও কাটেন অনার্স পড়ুয়া ছেলে

  আতাউর রহমান ফারুক, মনোহরদী (নরসিংদী) সংবাদদাতা

প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:০৯

বাবার সাথে সেলুনে চুলও কাটেন অনার্স পড়ুয়া ছেলে
সেলুনে হৃদয় শীল। ছবি: প্রতিনিধি

অনার্স পড়ুয়া ছাত্র হৃদয়। নিয়মিত পড়াশোনা যেমন করছে তেমনি পিতার সাথে সেলুনে চুল কাটার কাজও করছে। তাতে নিজের পড়াশোনার খরচ যেমন উঠছে তেমনি আবার পিতার সংসারে আর্থিক সহায়তাও হচ্ছে তার।

মনোহরদী বাজারের দক্ষিণ পাশে সেলুন দোকািন নেপাল চন্দ্র শীলের একমাত্র ছেলে হৃদয় শীল (১৮)। মনোহরদী পৌর এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হৃদয়। এ বছর মনোহরদী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে অনার্স ১ম বর্ষে পড়ছে সে।তার সমবয়সীরা অনেকেই পড়াশোনার ফাঁকে আড্ডা মারে, বাইক নিয়ে সড়ক দাপিয়ে বেড়ায় অথবা মোবাইলের আসক্তিতে থাকে। হৃদয় তখন পিতার পাশে দাঁড়িয়ে শান্তমনে চুল কাটে, নয়তো বা লোকের মুখ শেভে ব্যস্ত থাকে। আর কাজ না থাকলে দোকানে কাস্টমারের অপেক্ষায় বসে থাকে সে।

হৃদয় জানায়, অষ্টম শ্রেণিতে ওঠার পরই তার পড়াশোনার পাট চুকে যেতে বসে। পারিবারিক অনটনের মুখে স্বর্ণের দোকানে শিক্ষানবীশি করার তাগিদ ছিলো তার ওপর। যা থেকে দু' পয়সা রোজগার হতো সংসারে। কিন্তু বাবা নেপালের আগ্রহে পড়াশোনা এগিয়েছে তার। বর্তমানে মনোহরদী সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগে অনার্স ১ম বর্ষের নিয়মিত ছাত্র সে। পড়াশোনার ফাঁকে সেলুনের কাজে ৫শ' টাকার মতো আয় হয় তার দৈনিক। পড়াশোনা বজায় রেখেও সংসারে দু' পয়সা সাহায্য করতে পেরে বেশ তৃপ্ত সে।

হৃদয়ের পিতা নেপাল জানান, হৃদয় দৈনিক আয়ের পুরোটুকুই দিন শেষে তার মায়ের হাতে তুলে দেয়। তার মা সেখান থেকে সংসারের খরচ মেটান এবং হৃদয়ের জামা-কাপড়সহ পড়াশোনার খরচ দেন। ১৫/২০ টাকা হাত খরচ লাগলে মার কাছ থেকেই চেয়ে নেয় হৃদয়।

নেপাল বলেন, পিতৃ-পিতামহের পেশা তাদের এটি। ছেলে অযথা বাইরে ঘোরাফেরা না করে পড়াশোনা ঠিক রেখে তার পাশে দাঁড়িয়ে সেলুনে কাজ করে- এ নিয়ে পিতা হিসেবে মস্ত গর্ব তার। সে তৃপ্তি পরিপূর্ণতা পাবে হৃদয় লেখাপড়া করে ভবিষ্যতে যদি ভালো কিছু করতে পারে তবেই। হৃদয় নিজেও সে রকম আকাঙ্খাই হৃদয়ে লালন করছে বলে জানায় সে। তার মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হতে সবার আশীর্বাদ কামনা তার।

বাংলাদেশ জার্নাল/এমপি

  • সর্বশেষ
  • পঠিত