ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১১ মিনিট আগে
শিরোনাম

গাজীপুর শিক্ষা অফিসে ঘুষের তথ্য পেল দুদক

  নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৮ এপ্রিল ২০১৯, ১২:৩২

গাজীপুর শিক্ষা অফিসে ঘুষের তথ্য পেল দুদক

গাজীপুর শিক্ষা অফিসে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও করাতে গেলে উপজেলা পর্যায়ে যে ঘুষ ও দুর্নীতির শিকার হতে হয়, তা উদঘাটন করা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক (দুদক) শেখ গোলাম মাওলা।

এমপিও করানোসহ বিভিন্ন কাজে ঘুষ নেওয়ার খবর সংবাদপত্রে আসার পর গত মঙ্গলবার দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক (দুদক) শেখ গোলাম মাওলা এবং উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার নিলুফার ইয়াসমিন জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে অভিযান চালান।

এরপর বুধবার জেলা শিক্ষা অফিসে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়ে সভা করে ঘুষের কারবার বন্ধে বিভিন্ন নির্দেশনা দেওয়া হয় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার পক্ষ থেকে।

গোলাম মাওলা বলেন, গাজীপুরে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও করাতে গেলে উপজেলা পর্যায়ে যে ঘুষ ও দুর্নীতির শিকার হতে হয়, তা আমরা উদঘাটন করতে পেরেছি। এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা অফিসারকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যেন সকল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে নিয়ে সভা করা হয় এবং অফিস আদেশ দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যদি এ ধরনের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে দোষীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা পর্যায়ের অফিসটি আমাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে।

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা জানান, দুদকের নির্দেশনা অনুযায়ী বুধবার গাজীপুরের পাঁচ উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের নিয়ে তার কার্যালয়ে বৈঠক হয়।

সেখানে নির্দেশ দেওয়া হয়, কোনো শিক্ষক/কর্মচারী শিক্ষা অফিসে কোনো কাজে গেলে তাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের কাছ থেকে একটি চিঠি সঙ্গে আনতে হবে, সেখানে তার প্রয়োজনের বিষয়টি উল্লেখ থাকবে। ওই চিঠি ছাড়া কাউকে শিক্ষা অফিসে ঢুকতে দেওয়া যাবে না।

শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও এবং নিয়ম মাফিক উচ্চতর স্কেলে যাওয়ার জন্য যে কোনো টাকা লাগে না, তা জানিয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া এবং কেউ যাতে শিক্ষা অফিসে এসে দালালের খপ্পরে না পড়েন সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়ে সচেতন করার কথাও বলা হয় সভায়।

তবে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দাবি করেন, গাজীপুর জেলা শিক্ষা অফিস এবং তাকে ঘিরে যে ‘ঘুষ বাণিজ্যের’ কথা পত্রিকায় এসেছে তা সঠিক নয়।

রেবেকা সুলতানা বলেন, আমি আমার অফিসেরই দুইজন কর্মচারীর ষড়যন্ত্রের শিকার। ইতোমধ্যে তাদের শোকজ করা হয়েছে এবং দুদক কর্মকর্তারাও তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।

তিনি জানান, বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিও এবং টাইমস্কেলসহ যাবতীয় কাজ অনলাইনে হয়।

আবেদনকারী প্রথমে অনলাইনে উপজেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন করেন। সব ঠিকঠাক থাকলে উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে জেলা শিক্ষা অফিসে নথি পাঠানো হয়। জেলা শিক্ষা অফিস তা যাচাই-বাছাই করে অনলাইনেই তা শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকের কাছে পাঠান।

এ ব্যবস্থায় আবেদনকারীর জেলা শিক্ষা-অফিস বা ঢাকায় শিক্ষা উপ-পরিচালকের কার্যালয়ে যাওয়ার দরকার নেই। ফলে জেলা শিক্ষা অফিসে ঘুষ নেওয়ারও কোনো সুযোগ নেই বলে দাবি করেন রেবেকা সুলতানা।

প্রসঙ্গত, গাজীপুর শিক্ষা অফিসের ঘুষ বাণিজ্যের খবর বিভিন্ন সংবাদ পত্রে প্রকাশের পর মঙ্গলবার সেখানে অভিযান চালায় দুদক। সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় থেকে যাওয়া একটি দল গাজীপুরের মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে এ অভিযান চালায়। তারা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানাসহ কার্যালয়টির কয়েক কর্মকর্তা ও কর্মচারীর ঘুষ কারবারে জড়িত থাকার অভিযোগ খতিয়ে দেখে।

দুদকের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি, টাইম স্কেল ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে গাজীপুরের মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে অভিযান চালানো হয়। দুদকের দল জানতে পারে, শিক্ষকদের নানা কার্যক্রমে গাজীপুরের বিভিন্ন উপজেলা শিক্ষা অফিসে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে।

বিষয়টি দুদকের দল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করলে তিনি সব উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে একটি সমন্বয় সভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন এবং যেকোনো কার্যক্রম ঘুষ-লেনদেন ব্যতিরেকে হবে এরূপ একটি অফিস আদেশ জারির উদ্যোগ নেন।

বাংলাদেশ জার্নাল/জেডআই

  • সর্বশেষ
  • পঠিত