ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি শিক্ষকদের

দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি শিক্ষকদের

৩০ এপ্রিলের মধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর ও কল্যাণ ফান্ডে বর্ধিত ৪ শতাংশ চাঁদার আদেশ বাতিল না হলে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে আমরণ অনশনের হুমকি দিয়েছেন আওয়ামীপন্থি শিক্ষক সংগঠনের নেতারা। এছাড়া রাজধানীর পলাশীতে ব্যানবেইস ভবনে অবস্থিত অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের অফিস ঘেরাও করারও হুমকি দিয়েছেন তারা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক মো: কাওছার আলী শেখ আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

তাদের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের লক্ষ্যে আসন্ন ইদের আগেই সরকারি শিক্ষকদের ন্যায় বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা ও বাড়ীভাড়া প্রদান।

তবে, দাবি আদায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের মতো কঠোর কর্মসূচির আগে ৩০ এপ্রিল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে স্বারকলিপি দেবেন শিক্ষকরা। একইদিনে সারাদেশের জেলা শহরে মানবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল এবং জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে স্বারকলিপি দেবেন তারা।

এর আগে ২৫ এপ্রিল দেশের সব উপজেলা সদরে মানবন্ধন কর্মসূচি এবং প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীদেরকে স্মারকলিপি দেবেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ মো: বজলুর রহমান মিয়া বলেন, শিক্ষক নেতাদের সাথে কোনরকম আলোচনা ছাড়াই চাঁদার হার বৃদ্ধি করা হয়। এতে শিক্ষকরা মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, এর আগেও কয়েকবার চাঁদা বৃদ্ধির চেষ্টা করা হয়েছে এবং প্রজ্ঞাপন জারি করেও তা স্থগিত করা হয়।

অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের শত শত কোটি টাকা সীড মানি কোন ব্যাংকে কী সুদে থাকে তা জানার অধিকার সব শিক্ষকের থাকলেও তা জানা যায় না কোনওদিনই। অবসর ও কল্যাণে গত ১৬ বছরে কোনও অনুসন্ধান, তদন্ত বা অডিট হয়নি। শিক্ষকদের জমা করা চাঁদার শত শত কোটি টাকা ও সরকারের দেয়া সীড মানি রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যংক থেকে অবৈধভাবে তুলে বিতর্কিত বেসরকারি ব্যাংকে রাখা হয় কেন? বেসরকারি ব্যাংক থেকে পাওয়া অতিরিক্ত সুদের টাকা কাদের পকেটে যায়? অবসর ও কল্যাণের সব ব্যাংক হিসেব হিসেব মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অডিট করানোর দাবি জানান শিক্ষকরা।

উল্লেখ্য, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পেনশন পান না। অবসরে গেলে এককালীন কয়েকলাখ টাকা পান অবসর সুবিধা বোর্ড থেকে। এছাড়াও কিছু টাকা পান কল্যাণ ফান্ড থেকে। এই দুটি সুবিধা পেতে এমপিওভুক্ত পদে চাকরীকালীন পুরো সময়ের প্রতিমাসে মোট ৬ শতাংশ হারে টাকা বেতন-ভাতার সরকারি অংশ থেকে অবসর ও কল্যাণ ফান্ডের জন্য চাঁদা বাবদ কেটে রাখা হয়। একজন শিক্ষক চাকরীজীবনে যত টাকা চাঁদা হিসেবে দেন অবসরে গেলে তার প্রায় ১৪ গুণ বেশি টাকা পান।

জানা যায়, গত ১৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক আদেশে অবসর ও কল্যাণ ফান্ডের চাঁদার হার যথাক্রমে ৬ ও ৪ শতাংশ করা হয়েছে। অর্থাৎ আগে ছিলো মোট ৬ শতাংশ যা বেড়ে ১০ শতাংশ হলো। চলতি এপ্রিল মাস থেকে এই বর্ধিত চাঁদা দিতে হবে। কিন্তু শিক্ষকরা তা দিতে চান না। তাদের যুক্তি বেশি চাঁদার জন্য বাড়তি কোনো সুবিধা পাবেন না তারা। অপরদিকে সরকারের যুক্তি চাঁদার হার বেশি দেয়া হলে অবসরে যাওয়ামাত্রই টাকা পাওয়া যাবে। ফান্ড সংকট থাকা অবসরে যাওয়া পর পাঁচ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় অবসর সুবিধার টাকার জন্য। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিটিএ উপদেষ্টা মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, উপদেষ্টা মন্ডলীর অন্যতম সদস্য রঞ্জিত কুমার সাহা, সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যক্ষ মো. আবুল কাশেম, সহসভাপতি আলী আজগার হাওলাদার, বেগম নুরুন্নাহার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবু জামিল মোহাম্মদ সেলিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন, অর্থ সম্পাদক মোস্তফা জামান খান, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক নিহার কান্তি বাছাড়, দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, গ্রন্থগার সম্পাদক অশোক কান্তি গুহ, সহদপ্তর সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম, সহ সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফাহমিদা রহমান, সহ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক শাহানা বেগম।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত