ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ১৩ মিনিট আগে
শিরোনাম

‘শিক্ষকদের চাকরি যত দ্রুত সম্ভব জাতীয়করণ করতে হবে’

  জার্নাল ডেস্ক

প্রকাশ : ২৬ মে ২০১৯, ১১:৪৩

‘শিক্ষকদের চাকরি যত দ্রুত সম্ভব জাতীয়করণ করতে হবে’
ফাইল ছবি

‘শিক্ষাখাতে বর্তমান প্রেক্ষাপটে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বেশকিছু সমস্যার সমাধান এখনই করতে হবে। প্রথমত, যে কোনো মূল্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে হবে। আর এজন্য শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি যত দ্রুত সম্ভব জাতীয়করণ করতে হবে। সারাদেশের শিক্ষকদের এটাই এখন একমাত্র প্রাণের চাওয়া। এ দাবিতে তারা রাজপথেও সরব রয়েছেন।’

একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে এসব কথা বলেন শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া।

এই শিক্ষক নেতা বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দলীয়ভিত্তিতে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বন্ধ করতে হবে। অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগের নামে যে বাণিজ্য চলছে, তা দূর করতে পারলে মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিত করা যাবে। এতে শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব হবে। এ মুহূর্তে দেশে শিক্ষকরা রাজনৈতিক হয়রানি ও নির্যাতনের শিকার। বিশেষ করে যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তাদের লেজুড়বৃত্তি ছাড়া শিক্ষকরা পেশাগত দায়িত্ব স্বাভাবিকভাবে পালন করতে পারেন না। সরকারি দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হয়ে আসছে। গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন এবং তাদের অধিকাংশই সরকারি দলের নেতাকর্মী ও সমর্থক। এ কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা সরকারি বিধি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে পারছেন না। পরিচালনা কমিটির কথামতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা না করলে তারা শিক্ষকদের চাকরি থেকে অন্যায়ভাবে বহিস্কার করে থাকেন। এ দুঃসহ অবস্থার অবসান প্রয়োজন।

এই শিক্ষক নেতা আরো বলেন, শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা থাকতেই হবে। দলীয়ভিত্তিতে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ বন্ধ করতে হবে। এ জন্য এডহক ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের নামে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি মেধাবী শিক্ষকদের মূল্যায়ন করে তাদের জন্য পুরস্কারের ব্যবস্থা করতে হবে।

শিক্ষকদের দাবি আদায়ে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সারাদেশে শিক্ষকদের প্রাণের দাবি বেসরকারি শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ। সে দাবিতে আমরা অনেক সভা-সমাবেশ-সেমিনার করেছি। সরকারকে কয়েকবার স্মারকলিপি দিয়েছি। সরকারের উচিত দল-মত নির্বিশেষে সব শিক্ষক সংগঠনকে ডেকে আলোচনা করে শিক্ষকদের সমস্যা নির্ণয় করা ও সমাধানের ব্যবস্থা করা।

দেশে শিক্ষক আন্দোলনের বর্তমান প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে শিক্ষক আন্দোলন স্থবির হয়ে আছে। দমন-নিপীড়ন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে শিক্ষকদের হয়রানি, জেল-জুলুম-রিমান্ড দিয়ে নেতাদের মুখ বন্ধ করে রাখতে চাইছেন। এতে হিতে বিপরীত হচ্ছে। কারণ, অধিকাংশ শিক্ষকই এতে ক্ষুব্ধ। এসব কর্মকাণ্ডে অভিভাবকদের মধ্যেও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এতে শিক্ষার উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে বলে আমরা মনে করি।

এই শিক্ষক নেতা বলেন, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা প্রদানে বিলম্ব এবং অতি সম্প্রতি ১০% টাকা কর্তনের সিদ্ধান্তে সারাদেশে শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ। প্রত্যাশিত চাকরি জাতীয়করণের জন্য যে কোনো সময় শিক্ষক আন্দোলন চরম আকার ধারণ করতে পারে। শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে উঠবে।

তিনি বলেন, সামাজিকভাবে শিক্ষক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষা খাতের জন্য বেশ কিছু সমস্যার সমাধান করা আবশ্যক। এগুলো হলো- শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরি জাতীয়করণ করা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখা, দলীয় সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে মেধাবী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া, শিক্ষক নিয়োগে সব অনিয়ম বন্ধ করা, সংসদ সদস্য ও তার মনোনীত ব্যক্তিদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও সদস্য পদে নিয়োগ না দেওয়া, শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা বোর্ডগুলো, আঞ্চলিক শিক্ষা অফিস, জেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের দুর্নীতি মুক্ত করা।

বাংলাদেশ জার্নাল/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • পঠিত