ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৩২ মিনিট আগে
শিরোনাম

এমপিওভুক্তি তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘চিরুনি তল্লাশি’

এমপিওভুক্তি তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘চিরুনি তল্লাশি’

এমপিওভুক্তির জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রস্তাবিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকায় ‘চিরুনি তল্লাশি’ চালাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। নতুন এমপিওভুক্তিতে যাতে কোনো অনিয়ম না হয় সে জন্য এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ খবরে নড়েচড়ে বসেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সংশোধিত চূড়ান্ত তালিকা পাওয়ার পর নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা ঘোষণা করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে এমপিওভুক্তি কার্যকর হবে।

২০১০ সালের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রেখেই নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে এবার সরকার সর্বোচ্চ সতর্কতার কৌশল নিয়েছে। এবার যাতে আগের পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে জন্য আগেই সতর্ক হয়ে তালিকা তৈরির পর একযোগে খোঁজখবর নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। সব মিলিয়ে তৈরি করা তালিকাটি ‘নিষ্কলঙ্ক’ থাকলেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চূড়ান্ত সীলমোহর পাওয়া যাবে। তবে এটি কবে নাগাদ চূড়ান্ত সীলমোহর পাবে তা সুনির্দিষ্ট করে কেউ বলতে পারছেন না।

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, যে কোনো সময় নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির তালিকা ঘোষণা করা হবে। গত ১৫ দিন ধরে এমপিওভুক্তির তালিকা প্রকাশের ক্ষেত্রে একই কথা বলছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তালিকাটি যখনই প্রকাশ হোক না কেন শিক্ষকরা সুবিধা পাবেন ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে। কাজেই এমপিওভুক্তি নিয়ে শিক্ষক কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই।

এমপিওভুক্তির প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য গত আগস্টে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়।

সমতার স্বার্থে এসব উপজেলায় এমপিওভুক্তির নীতিমালার ২২ নম্বর ধারা প্রয়োগ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। এ ধারায় বলা হয়েছে, শিক্ষায় অনগ্রসর, ভৌগোলিকভাবে অসুবিধাজনক, পাহাড়ি, হাওর-বাঁওড়, চরাঞ্চল, নারী শিক্ষা, সামাজিকভাবে অনগ্রসর গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী, বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় শর্ত শিথিল করা যেতে পারে।

নীতিমালার এ ধারা প্রয়োগ করে ৮৯টি উপজেলার মধ্যে এমপিওভুক্তির শর্ত পূরণে সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানকে যোগ্য হিসেবে বাছাই করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের ক্ষেত্রে মানদণ্ড হিসেবে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ন্যূনতম ১০০ জন এবং কমপক্ষে দুই বছরের স্বীকৃতি থাকার বিষয় বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। বাদ পড়া প্রতিটি উপজেলা/থানা থেকে একটি প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা হয়েছে।

এই মানদণ্ডে ৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়েছে। এ ছাড়া দেশের দুর্গম ও পার্বত্য এলাকা, পাহাড়ি, হাওর-বাঁওড়, চরাঞ্চল এবং উপক‚লীয় এলাকায় নীতিমালার ১৪ ধারা অনুসারে এমপিওভুক্তির জন্য প্রয়োজনীয় যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি, এমন ৫৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৫০০ জন বা তার বেশি এবং কমপক্ষে দুই বছরের স্বীকৃতি থাকার শর্ত পূরণ করতে হয়েছে।

সূত্র জানায়, বাদপড়া ৮৯টি উপজেলায় ২২ ধারা প্রয়োগ করে ৬১টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির পরও ১২টি উপজেলা ও ১৭টি থানা বাদ থেকে যায়। ১২টি উপজেলার সাতটি থেকে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আওতাধীন প্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়েছে। যোগ্য না হওয়ায় অন্য পাঁচটি উপজেলার কোনো প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে দেশের ২৩টি উপজেলা/থানা এলাকা থেকে এমপিওভুক্তির জন্য এ বছর কোনো আবেদনই পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ ২০১০ সালের ১৬ জুলাই সারাদেশের ১৬০৯টি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি) এমপিওভুক্ত করা হয়। বর্তমানে সারাদেশের প্রায় সাড়ে আট হাজার নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত