ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৮ মিনিট আগে
শিরোনাম

শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

  পটুয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৮:৪৯

শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

রাঙ্গাবালী উপজেলার সদরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা সাজেদা বেগম ঝর্ণার নামে ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার রটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি মহল দীর্ঘদিন ধরে ওই বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করতে মামলা-মোকদ্দমাসহ বিভিন্ন চক্রান্ত করে ব্যর্থ হয়। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার রটানো শুরু করে ওই কুচক্রী মহল।

বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা জানান, ২০০৫ সালে রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে সাজেদা বেগম ঝর্ণা যোগদান করেন। চাকুরিতে যোগদানের পর থেকে সাজেদা বেগম তার দক্ষতার কারণে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। অথচ কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার চালাচ্ছে। ওই কুচক্রী মহল বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীদের কাছে তথ্য দিচ্ছেন যে, শিক্ষিকা সাজেদা বেগম চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নয় মাস অনুপস্থিত থেকে নিয়মিত বেতন-ভাতা উত্তোলন করছেন, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাজেদা বেগম বিদ্যালয়ে নিয়মিত একজন শিক্ষিকা। এর প্রমাণ হাজিরা খাতায়। শিক্ষক হাজিরা খাতায় দেখা যায়, সাজেদা বেগমের নিয়মিত উপস্থিতির স্বাক্ষর। সর্বশেষ তিনি টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটিতে রয়েছেন। শিক্ষিকা সাজেদা বেগমের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদ জানিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, একজন শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এ ধরণের মিথ্যা অপপ্রচার করাটা খুবই দুঃখজনক । আমরা এ ঘটনার ধিক্কার জানাচ্ছি।

এই বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র চলছে। তারই অংশ হিসেবে শিক্ষিকা সাজেদা বেগমের নামে মিথ্যা অপপ্রচার রটিয়ে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করে চলছেন। বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করতে ওই মহলটি এ পর্যন্ত ৫টি মামলা করেছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা- ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এমনকি এই ষড়যন্ত্রকারীদের নোংরা চক্রান্তের কারণে এই প্রতিষ্ঠানটি জাতীয়করণ পর্যন্ত হয়নি। তবুও প্রতিষ্ঠানটি মানসম্পন্ন শিক্ষাদানের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কিন্তু ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্ত থেমে নেই। তারা বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তারা সকল ষড়যন্ত্রে ব্যর্থ হয়ে সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রপত্রিকার সাংবাদিক ভাইয়েদের মিথ্যা ও মনগড়া বানোয়াট তথ্য দিয়ে ওই বিদ্যালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা সাজেদা বেগম ঝর্ণার বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করিয়েছে।

জানতে চাইলে সিনিয়র সহকারী শিক্ষিকা সাজেদা বেগম ঝর্ণা বলেন, সম্পূর্ণ অহেতুকভাবে আমাকে হয়রানি করা হয়েছে। আমি বিদ্যালয়ে নিয়মিত একজন শিক্ষিকা। হাজিরা খাতায় এর প্রমাণ আছে। টাইফয়েড জ্বরের কারণে আমি প্রধান শিক্ষকের কাছে দরখাস্ত করে ১০ দিন ছুটি নিয়েছিলাম। সেই সুযোগে ষড়যন্ত্রকারীরা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করেছে। এতে আমার মানহানি হয়েছে। এ ধরণের ষড়যন্ত্র করাটা নোংরামি ছাড়া আর কিছুই নয়। আমি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মুজিবুর রহমান বলেন, কোন শিক্ষক অনুপস্থিত থেকে বেতন-ভাতা উত্তোলনের সুযোগ নেই। এছাড়া শিক্ষিকা সাজেদা বেগম সকল শিক্ষার্থীদের কাছে প্রিয় একজন শিক্ষক। বর্তমানে সাজেদা বেগম টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার ছুটি মঞ্জুর করা হয়। ছুটির প্রেক্ষিতে তিনি চিকিৎসাধীন আছেন। ছুটির মেয়াদ শেষ হলে তিনি কর্মস্থলে যোগদান করবেন।

ওই বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও রাঙ্গাবালী ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুজ্জামান মামুন খান বলেন, আমি রাঙ্গাবালী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পরপর দুইবার নির্বাচিত সভাপতি হওয়ায় একটি মহল ঈর্ষান্নিত হয়ে বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে বিদ্যালয়কে ধ্বংস করতে সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১০ জানুয়ারি, ৮ এপ্রিল ও ১৯ আগস্ট আদালতে তিনটি মামলা করা হয়। এর আগেও ২০১৬ সালে দুইটি মামলা হয়। এসব মামলা মোকদ্দমা করে ব্যর্থ হয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক সাজেদা বেগমের নামে মিথ্যা অপপ্রচার রটিয়ে বিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ধরণের ঘৃণ্য কাজের আমি তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত