ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : ৯ মিনিট আগে
শিরোনাম

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন উদ্যোগের ঘোষণা শিক্ষামন্ত্রীর

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন উদ্যোগের ঘোষণা শিক্ষামন্ত্রীর

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে র‌্যাগিং ও যৌন নির্যাতনসহ সব নিপীড়ন বন্ধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা রোধে বিশেষ সেল গঠন করা যেতে পারে।

নির্যাতনে নিহত বুয়েটর ছাত্র আবরার ফাহাদের মৃত্যুর ঘটনায় র‌্যাগিং নিয়ে সমালোচনার মধ্যে এই সেল গঠনে মত দিলেন শিক্ষামন্ত্রী।

তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নজরদারি বাড়ানো হবে যাতে কোনো শিক্ষার্থী অন্যের মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিকভাবে নিগৃহীত না হয়।

শিক্ষামন্ত্রী রোববার (১৩ অক্টোবর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ও তথ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি’ নিয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় একথা বলেন।

ডা. দীপু মনি বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়নে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ সংশ্লিষ্ট সবার সেবাপ্রাপ্তি সহজ করবে ও নতুন সফটওয়্যার ব্যবহার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগ আরও দ্রুত এবং স্বচ্ছ করবে।

মানসম্পন্ন শিক্ষা অর্জনে সরকার কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এ লক্ষ্যে সরকার শিক্ষক প্রশিক্ষণে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগিয়ে কর্মস্থলে বসেই অনেক প্রশিক্ষণ নেওয়া যাবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মুনশী শাহাবুদ্দীন আহমেদ বলেন, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সমাজের মূল ধারায় সম্পৃক্ত করতে হবে যাতে তারা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।

ডা. দীপু মনি বলেন, আমাদের অনেক দায়িত্ব। ছোটদের এই পরীক্ষা যেন সুন্দরভাবে শেষ করা যায় সেদিকে সবাইকে সচেতন হতে হবে। কোচিংয়ের বিষয়ে আমাদের কঠোর হতে হবে। পরীক্ষার সময় কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণা করা হলেও কেউ কেউ বাইরে তালা লাগিয়ে ভেতরে কোচিং করান। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়ে মনিটরিং বাড়ানো আহ্বান জানান তিনি।

আসছে ২ নভেম্বর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সমাপনী পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার সময়টিতে সব ধরনের কোচিং সেন্টারও বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

কোচিং সেন্টার এবারও বন্ধ থাকবে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২৫ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত আমাদের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে। সেজন্য হয়তো যারা জেএসসি-জেডিসির শিক্ষার্থী নয় তার বাইরে যারা আছে তাদের সাময়িক কিছু অসুবিধা হবে, কিন্তু প্রশ্নফাঁস মুক্ত পরীক্ষার স্বার্থে এটির বিকল্প এখনও আমরা বের করতে পারিনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমরা কোচিং বাণিজ্যের লাগাম যতদূর সম্ভব পুরোপুরি টেনে না ধরতে পারা পর্যন্ত আমাদের এই ব্যবস্থা নিতেই হচ্ছে।

পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় এবছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মতো যেভাবে প্রশ্নফাঁস ও নকলমুক্ত পরিবেশে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করেছি, আশা করছি জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাও একইভাবে সুষ্ঠু, সুন্দর পরিবেশে এবং নকলমুক্তভাবে সম্পন্ন করতে পারবো।

‘অভিভাবকদের আহ্বান জানাবো, তারা যেন এই অনৈতিক প্রক্রিয়াতে কোনোভাবেই যুক্ত না হন প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে, কারণ তাদের সন্তারদের ভবিষ্যৎ কিন্তু এর ওপরে নির্ভর করে।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা নিশ্চয়তা দিতে পারি যে প্রশ্নফাঁস বন্ধের ব্যাপারে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো। কিন্তু এর যদি চাহিদা থাকে তখন কিন্তু প্রতারক গোষ্ঠী থেকে শুরু করে ক্রিমিনালরা এটির সুযোগ নেবে। কাজেই এর যেন কোনো চাহিদাই না থাকে। কোনো অভিভাবক, কোনো শিক্ষার্থী যেন প্রশ্নফাঁস না চান, তারা যথাযথভাবে পরীক্ষার প্রস্ততি নেবে, পরীক্ষা দেবে এবং মেধা অনুযায়ী ফলাফল পাবে, সেটিই হওয়া উচিত।

এদিকে বৈঠক সূত্রে জানা যায়, আগের মতো পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে প্রবেশ এবং ২৫ মিনিট আগে প্রশ্ন সেট ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়। ৩০ মিনিট আগে না ঢুকতে পারলে তার নাম-রোল লিখে ওই দিন বোর্ডে পাঠাতে হবে। পরীক্ষার তিনদিন আগে প্রশ্ন সর্টিং করতে হবে বলেও জানানো হয়।

এছাড়াও প্রশ্ন বহন কাজে কালো কাচের গাড়ি ব্যবহার থেকে বিরত থাকা, বেআইনি কোনো কাজ করলে সরকারি শিক্ষকদের ক্ষেত্রে হলে সাময়িক বরখাস্ত ও বেসরকারি হলে এমপিও বাতিলের সুপারিশ করা হবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব মাহমুদ উল হক, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিউদ্দিন আহমদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত