ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ আপডেট : কিছুক্ষণ আগে
শিরোনাম

প্রাথমিকে বড় সুখবর আসছে

প্রাথমিকে বড় সুখবর আসছে

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১০তম গ্রেডে এবং সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম গ্রেডে করার দাবি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের অপেক্ষায় রয়েছেন শিক্ষকরা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন আশ্বাস দিয়েছেন।

এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এমনকি মন্ত্রণালয়ও শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে আন্তরিকতা দেখাচ্ছেন। শিক্ষক নেতা, অধিদপ্তর এমনকি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরাও আশা করছেন- প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতেই সুরাহা মিলতে পারে। সর্বশেষ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) সাবের হোসেন ও পরিচালক (পলিসি) ড. খান মো. নুরুল আমিনের সঙ্গে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভাতেও বিষয়টি উঠে এসেছে; যেখানে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে সহকারী শিক্ষকদের মূল দাবি ১১তম গ্রেড নিয়েও নানা আলোচনা হয়। জানা যায়, মূলত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেনের নির্দেশনা ও অতিরিক্ত সচিব রতন চন্দ্র পন্ডিতের পরামর্শক্রমে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়; যাতে শিক্ষক প্রতিনিধি, অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে বাস্তবসম্মত করণীয় খোঁজা হয়।

শিক্ষক নেতারা জানান, প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডের বিষয়ে খুব শীর্ঘ্রই প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাত এবং সেখানেই তার সমাধান হবে বলে তারা আশা করছেন। সে পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহবান করেন তারা।

এর আগে মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. জাকির হোসেন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা বসেন শিক্ষক নেতারা। তিনি জানান, ‘আপনাদের সাক্ষাতের বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেছি। প্রধানমন্ত্রী বিদেশ থেকে ফিরে এলেই সাক্ষাতের সময় পাওয়া যাবে। সেখানে আপনাদের ১০ম ও ১১ গ্রেডের বিষয়টি আলোচনা করা হবে।’ প্রতিমন্ত্রী আশ্বস্ত করেন, শিক্ষক নেতারাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতে কথা বলতে পারবেন। এর আগে অবশ্য তিনি বলেছিলেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলন সফল হয়েছে। তাদের আন্দোলনের ফলে থানা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং থানা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের গ্রেড বাড়ছে।

এদিকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন নতুন গ্রেডে যেন কমে না যায় সেজন্য সজাগ রয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। একইসঙ্গে শিক্ষকদের দাবিসমূহ পূরণে আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করছেন সংশ্লিষ্টরা। নতুন গ্রেডের বেতন যেভাবে নির্ধারণ করলে কমবে না বলে শিক্ষকরা মনে করেন— এর একটি প্রস্তাবনা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। যা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে আলোচনার পর প্রাথমিক শিক্ষকদের উন্নীত স্কেল যেন উচ্চধাপে নির্ধারণ করা হয়, সেই বিষয়ে ডিপিই থেকে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা প্রেরণ; কোন শর্ত ছাড়া সকল শিক্ষককেই যেন উন্নীত স্কেলের সুবিধা প্রদান করা হয়, সেই বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা প্রেরণ; প্রাথমিক শিক্ষকদের বদলি জানুয়ারি-মার্চ নয়, সারা বছর যেন চলমান থাকে তা কার্যকর করা; রমজানের ছুটি নয়, চাকরিতে যোগদান অনুযায়ী প্রতি ৩ বছর পূর্তিতে শ্রান্তি বিনোদন ভাতা প্রদানসহ শিক্ষকদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষ অধিদপ্তরের বৈঠকে আলোচনা হয়।

বুধবারের আলোচনাকে অত্যন্ত ফলপ্রসু মনে করছেন শিক্ষক প্রতিনিধিরা। প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের প্রধান মুখপাত্র মো. বদরুল আলম বলেন, ‘শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা খুবই আন্তরিক। তারা জানিয়েছেন, শিক্ষকদের যেকোন সুবিধা-অসুবিধা, দাবি-দাওয়া নিয়ে অধিদপ্তরে আসবেন। আমরা যথাসাধ্য তা সমাধানের ব্যবস্থা করব। একইসঙ্গে নতুন গ্রেডে বেতন নির্ধারণে যেন কমে না যায় সেজন্য শিক্ষকদের কোন দাবি থাকলে তা প্রস্তাবনা আকারে প্রেরণ করতে বলেছেন।’

বেতন নির্ধারণে নিয়ে শিক্ষকদের প্রস্তাবনা কবে প্রেরণ করা হচ্ছে জানতে চাইলে মো. বদরুল আলম বলেন, ‘আমরা শিক্ষক নেতারা অধিদপ্তরের পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এখন বেতন ফিক্সেশনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে তা নির্ধারণ করা হবে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে তা প্রেরণ করা হবে।’

প্রসঙ্গত, সহকারী শিক্ষকদের ভাষ্যমতে প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের বেতনের পার্থক্য তিন ধাপ। তাদের দাবি ছিল প্রধান শিক্ষকের পরের গ্রেড। প্রধান শিক্ষকরা ১১ তম গ্রেড হলে তাদের দাবি ১২ তম। আর প্রধান শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডে পৌঁছলে আমাদের ১১তম গ্রেড দিতে হবে। কিন্তু খসড়া বিধিমালায় সেই দাবির প্রতিফলন নেই। স্বভাবতই নতুন পন্থা খুঁজতে হচ্ছে। তাদের ভাষ্য, প্রধান শিক্ষকের পরেই তাদের বেতন রাখার দাবি দীর্ঘদিনের। শুধু তাই নয়, বিষয়টি আত্মসম্মানেরও।

  • সর্বশেষ
  • পঠিত